ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্টারন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজমের দাবি

রাকার পতনের পর ৪০ হাজার বিদেশী জঙ্গীর খোঁজ নেই

প্রকাশিত: ০৩:২৩, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭

রাকার পতনের পর ৪০ হাজার বিদেশী জঙ্গীর খোঁজ নেই

রাকা দখলের পর ২০১৪ সালে এ শহরটিকে নিজেদের খেলাফতের রাজধানী ঘোষণা করেছিল ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গীরা। সে সময় তাদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অন্তত ৪০ হাজার যুবক-যুবতী সিরিয়া ও ইরাকে এসে যোগ দেয় আইএসের জঙ্গী বাহিনীতে। তবে খুব বেশি দিন টেকেনি তাদের খেলাফতের ঝান্ডা। ইরাক ও সিরিয়ার সব শহর থেকে একে একে বিতাড়িত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বহুল আলোচিত জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সর্বশেষ রাকা থেকে উচ্ছেদ হয়ে সিরিয়ায় সবচেয়ে শক্ত অবস্থান হারিয়েছে আইএস জঙ্গীরা। এখান থেকেই তারা বিদেশের মাটিতে হামলার পরিকল্পনাসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করত। শত শত বিদেশী যোদ্ধা যে কোন মূল্যে রাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু রাকার পতনের পর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন প্রশ্ন হল এসব বিদেশী যোদ্ধারা গেল কোথায়? এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের বিশ্বাস এসডিএফ রাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগে শীর্ষ জঙ্গী নেতৃবৃন্দ রাকা ছেড়ে পালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় মারা পড়েছে শত শত জঙ্গী এবং লড়াই যত চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগিয়েছে স্থানীয় জঙ্গীরা এসডিএফ ফোর্সে থাকা স্বজনদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। স্থানীয়রা আত্মসমর্পণ করলেও শহরটিতে অন্তত কয়েকশ বিদেশী যোদ্ধা রয়েছে বলে ধারণা করেছিল জোটবাহিনী। কিন্তু পরে সেখানে বিদেশী যোদ্ধার উপস্থিতি বা নিহত হওয়ার তেমন কোন খবর মেলেনি। র‌্যান্ড কর্পোরেশনের আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতি বিভাগের পরিচালক সেথ জোনস প্রশ্ন করেছেন, তাদের কতজন নিহত, কতজন আত্মসমর্পণ করেছে, কতজন সেখানে যুদ্ধের জন্য থেকে গেছে এবং কত যোদ্ধা অন্য কোথাও পালিয়েছে এসব প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্টার টেরোরিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপ এসব বিদেশী জঙ্গী সদস্যদের খুঁজে পেতে ও চিহ্নিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও তাদের সব চেষ্টাই শেষ পর্যন্ত বিফল হয়েছে। ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৩ সালের পর থেকে অন্তত ১৭শ যোদ্ধা সে দেশ থেকে আইএস বাহিনীতে যোগ দিতে ইরাক ও সিরিয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ নিহত হয়েছে, আড়াইশ যোদ্ধা ফ্রান্সে ফেরত গেলেও বাকিদের কোন হদিশ নেই। ৮ ডিসেম্বর ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়কমন্ত্রী জাঁ ইভস লে ড্রায়ান জানান, তার দেশের অন্তত ৫শ যোদ্ধা ইরাক ও সিরিয়ায় আছে যাদের ফিরে আসা খুব কষ্টকর হবে। কিন্তু যুদ্ধে পারদর্শী, বোমা তৈরিসহ অস্ত্র মেরামতে সিদ্ধহস্ত এমন ৫শ যোদ্ধা আছে কোথায় তাদের কোন খোঁজ নেই। তবে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ১৩০ থেকে ১৫০ জনের বিদেশী একটি দল লড়াই শেষ হওয়ার আগে আত্মসমর্পণ করেছে।
×