ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু হারাতে বসেছে চোখের আলো

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু হারাতে বসেছে চোখের আলো

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ আট বছরের শিশু মীমের শরীরে কালো-কালো ছাপে ফোসকা পড়েছে। সেগুলো আবার ফুটে ঘায়ের মতো তৈরি হয়। আবার শুকিয়ে গিয়ে হচ্ছে কালচে রঙ্গের। সারা শরীরে ব্যথায় ছটফট করে মীম। ফোসকাগুলো আগুনের মত জ্বালা করে। কিছুদিন থেকে চোখ দুটি আক্রান্ত হয়ে লালচে হয়ে গেছে। এতে করে বর্তমানে আলোর দিকে তাকাতে পারে না। ফলে হারাতে বসেছে চোখের আলো। অনেক চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে হবে। দিনমজুর বাবা তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না। মেয়ের এমন অবস্থায় সারাক্ষণ কেঁদে অস্থির মা মরিয়ম বেগম। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেড়ছড়া ইউনিয়নের কালিরহাট গ্রামের দিনমজুর জাহেদুল ইসলামের মেয়ে মীমের বর্তমান বয়স আট বছর। জন্মের পর দু’বছর বয়সের সময় হঠাৎ বিরল রোগ দেখা দেয় মীমের। পুরো শরীরেই ওঠে ফোসকা। সেগুলো পরবর্তীতে গলে যায়। আস্তে আস্তে সারা শরীর তার ঢেকে যায় এ রোগে। ডাঙ্গিরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মীম। কিন্তু গত ছয় মাস যাবত চোখে ঠিকমত দেখতে না পাওয়ায় সে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। মীমের মা মরিয়ম বেগম বলেন, ছয় সাত মাস আগে তাকে রংপুরে এক মহিলা চিকিৎসককে দেখানো হয়। তার দেয়া ওষুধ খাওয়ার পর অসুখটি বেড়ে যায়। সেটি এখন চোখ দিয়েও বের হচ্ছে। কানেও কম শুনতে পায়। ভাল করে কথাও বলতে পারছে না। শুধু কান্নাকাটি করে। আমি মা হয়ে সহ্য করতে পারছি না মেয়ের কান্না। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। অনেকেই বলেছে ঢাকায় ভাল ডাক্তার দেখাতে। তাই ইউএনও স্যারের কাছে মেয়েকে নিয়ে এসেছি সাহায্যের জন্য। মীমের বাবা জাহেদুল ইসলাম বলেন, থাকি ওয়াপদা বাঁধের উপর। দিন করে দিন খাই। এর মধ্যে পর্যায়ক্রমে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা মেয়ের চিকিৎসা করতে গেছে। কিন্তু দিন দিন অসুখ বেড়েই চলছে। আর ক্ষমতা নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএইচএম মাগ্ফুরুল হাসান আব্বাসী বলেন, এ রোগটিকে সরিয়াসিস বলা হয়। এর চিকিৎসার জন্য লাখ লাখ টাকা প্রয়োজন। আমার কাছে মীমের মা একটি আবেদন নিয়ে এসেছে। আমরা সামান্য কিছু হয়তো দিতে পারব। কিন্তু এটা দীর্ঘদিন চিকিৎসা করতে হবে।
×