ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেড়িয়ে আসুন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জেলা ‘রাঙামাটি’ -রিফাত কান্তি সেন

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

বেড়িয়ে আসুন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জেলা ‘রাঙামাটি’ -রিফাত কান্তি সেন

প্রকৃতিতে শীত আসছে আসছে করেও আসছে না। এমন উদাস আবাহাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়িয়ে আসুন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলা ভুমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। সকলের মন ভাল হয়ে যাবে, দূর হবে সারা বছরের ক্লান্তি; কুয়াশামেশা শুভ্র মেঘ তার সঙ্গে আকাশ-পাহাড়ের মিতালী মনকে নতুন করে জগিয়ে তুলবে। আসলে যেভাবেই রাঙামাটিকে তুলে ধরা হোক না কেন, বাস্তবে এর চেয়ে অধিক সুন্দর এই রূপের পুরী! প্রিয় বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একটি দেশ। ভ্রমণপ্রিয় পাঠক আজ আমরা আপনাদের রাঙামাটি জেলার অপার সৌন্দর্যের খবর জানাবো। বান্দরবান, খাগরাছড়ি এবং রাঙামাটি’ এই তিন জেলা নিয়ে পার্বত্য অঞ্চল, এখানকার অপার সৌন্দর্যে বিমোহিত করে ভ্রমণপ্রিয়সী পর্যটকদের। তিন পার্বত্য জেলার মাঝে একটি দৃষ্টিনন্দন জেলা রাঙামাটি। মুসলিম বিজয়ের পূর্বে রাঙামাটি আরাকান রাজাদের যুদ্ধক্ষেত্র ছিল। ১৬৬৬ সালে এই অঞ্চল মুঘলদের দখলে আসে। এখানে বাস করেন, বোম, চাক, খুমি, খেয়াং লুসাই মো, মুরাং, সান্তাল, মণিপুরি আদিবাসীরা। ওই অঞ্চলে ধান, পাট, আলু, ভুট্টার চাষ করা হয়। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রধান নদী হচ্ছে কর্ণফুলী। রাঙামাটি জেলায় রয়েছে অসংখ্য চিত্তকর্ষক স্থান। যারা এখনো এই অঞ্চলে আসেনি তাদের জন্য অপেক্ষা করছে রীতিমত মধুর এ্যডভেঞ্চার প্রাকৃতিক হ্রদ, কৃত্রিম হ্রদ, রাজা জং বসাক খানের দীঘি ও মসজিদ, দুদ্ধদের প্যাগাডো, রাজবন বিহার, শুভলং ঝর্ণা, চিৎমরম বৌদ্ধবিহার, ডলছড়ি জেতবন বিহার, যমচুক, উপজাতীয় জাদুঘরসহ বহু চিত্তাকর্ষক স্থান। ভ্রমণ পিয়াসীদের জন্যে এ জেলার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্থানের গল্প আজ আপনাদের জানাবো। সাজেক ভ্যালি : রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়নের নাম ‘সাজেক’। নামটি শুনলেই কেমন যেন অবাক লাগে। মনে হয় যেন কোন গোপন রহস্য রয়েছে এতে। আসলেই সত্যি, এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি। অবাক করার বিষয় হলো, পুরো রাঙামাটি দৃষ্টিগোচর হয় এখান থেকে। শুধু কি রাঙামাটি! পাশের দেশ ভারতও এখান থেকে দৃষ্টিগোচর হয়। বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন থেকে এর অবস্থান প্রায় ষাট কিমি। নয়নাভিরাম অপার সৌন্দর্য বিশাল সব পাহাড়ের উপর রাস্তা, এর চার পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দৃষ্টিকারে ভ্রমণপ্রিয়সীদের। সাজেকে সর্বত্র মেঘ, পাহাড় আর সবুজের দারুণ মিতালী চোখে পড়ে। সাজেকে যেতে হয় চাঁদের গাড়িতে চড়ে। এখানে চাঁদের গাড়ি বলতে বোঝানো হয়েছে একপ্রকার জিপ গাড়ি। এছাড়া মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশাতে করেও সেখানে পৌঁছানো যায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ী রাস্তা, আদিবাসীদের জীবন চিত্র সবই যেন দেখা মেলে একসঙ্গে। সাজেক যখন মেঘে ঢেকে যায় তখন মনে হয় যেন এটি ‘মেঘের উপত্যকা’। এখানে আসলে অনেকেই ভাববেন, আমি বুঝি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশে বাস করি! পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু : রাঙামাটি জেলায় রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। যার মাঝে অন্যতম পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু। রাঙামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কর্ণফুলী হ্রদের কোল ঘেঁষে ১৯৮৬ সালে গড়ে উঠেছিলো ‘পর্যটন হোলিডে কমপ্লেক্স’। এখানে রয়েছে মনোরোম ‘পর্যটন মোটেল’। পর্যটন মোটেল এলাকাটি ‘ডিয়ার পার্ক’ নামে পরিচিত। মোটেল এলাকা থেকে দেখা মেলে হ্রদের বিস্তীর্ণ জলরাশি আর দূরের নীল উঁচুনিচ পাহাড়ের সাড়ি এখানে তৈরি করেছে এক নৈসর্গিক আবহ। সেখানে গেলে যে কার মন ভাল হয়ে যাবে নিশ্চিত করে বলে দেয়া যায়। এখানেই রয়েছে ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ মনোহরা ঝুলন্ত সেতু- যা কিনা কমপ্লেক্স এর গুরুত্বও আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। এ সেতুটিকে ‘সিম্বল অফ রাঙামাটি হিসেবে ও ডাকা হয়। সেতুটি দেখতে অসংখ্য পর্যটকের মিলনমেলা ঘটে স্থানটিতে। কিভাবে যাবেন : প্রথমত ঢাকা থেকে হানিফ, শ্যমলী, সৌদিয়া ইত্যাদি পরিবহন আছে যাতে করে আপনি সরাসারি রাঙ্গামাটিতে । ভাড়া পরবে ৫৫০ থেকে ১২০০ শত টাকা। এসি নন এসি দুটো সার্ভিসই সচরাচর। একধিক ভাল ভাল হোটেল পাবেন। আছে, ‘পর্যটন কমপ্লেক্সে। মূল শহরে থেকেই আপনি প্লন করে যেতে পারেন জেলার সব মনোরম জায়গা গুলোতে।
×