ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রযুক্তি ও মানবতার সোফিয়া -তৌফিক অপু

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

প্রযুক্তি ও মানবতার সোফিয়া  -তৌফিক অপু

আলো আঁধারের খেলার মাঝে হঠাৎ এক তরুণীর আগমন। সবার দৃষ্টি যেন আটকে গেল তার দিকে। কথাটা আগে থেকেই জানা ছিল যে সোফিয়া আসছে বাংলাদেশে। কেউ কেউ ভেবেই বসলো হলিউড অভিনেত্রী সোফিয়া লরেন কি না? এক সময়ের সাড়া জাগানো এই অভিনেত্রী কি এ বয়সেও তন্বী রূপে আবির্ভূত হবে? সকল জল্পনা কল্পনা অবসান ঘটিয়ে সোফিয়া যখন মঞ্চে প্রবেশ করল বিস্ময়ের ঘোর যেন আরও বেড়ে গেল। এ কোন সোফিয়া! এত সুন্দর এক রমনি, কিন্তু কোথায় যেন গোলমেলে ব্যাপারটা রয়ে গেছে। কথা যখন বলা শুরু করল তখন মনে হয় মানুষই বোধহয় আবার পরক্ষণেই ধারণা হয় আরে না এ তো রোবট। অবাক বিস্ময় সবার চোখে মুখে, প্রযুক্তির কোন পর্যায়ে আমরা এসেছি একজন রোবট মানুষের যে কোন প্রশ্নের উত্তর উপস্থিত বুদ্ধির জোরে দিচ্ছে। তাও আবার তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে বসে এমন দৃশ্য দেখা কল্পনার মতোই। তবে অনেকেই এখন বিশ্বাস করতে শিখেছে কোন কিছুই আর অকল্পনীয় থাকবে না। প্রযুক্তির কল্যাণে সবই এখন ধরা দিবে হাতের মুঠোয়। আমাদের দেশেও প্রযুক্তির জোয়ার লেগেছে। তারই ধারবাহিকতায় সোফিয়ার এই সফর। সোফিয়াকে মানুষের মতো করে সাক্ষাতকার নেয়া হয়, উপস্থাপকের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে। কিছু উত্তর অর্থহীন যেখানে অন্যগুলো চিত্তাকর্ষক, যেমন চার্লি রোজের সঙ্গে ‘সিক্সটি মিনিটস’ এর দীর্ঘ আলোচনা। সিএনবিসির একটি সাক্ষাতকারে যখন প্রশ্নকারী রোবটের ব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তখন সোফিয়া কৌতুক করে যে, ‘সে (প্রশ্নকারী) খুব বেশি এলান মাস্ক পরছে এবং হলিউড চলচ্চিত্র দেখছে।’ মাস্ক টুইট করেন যে সোফিয়া ‘দ্য গডফাদার’ চলচ্চিত্র দেখতে এবং ‘সবচেয়ে খারাপ কি হতে পারে তা সম্পর্কে বলতে।’ ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর সোফিয়াকে জাতিসংঘের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার মাধ্যমে উপ-মহাসচিব আমিনা জে মোহাম্মদের সঙ্গে। ২৫ অক্টোবর ২০১৭ তে রিয়াদে ভবিষ্যত বিনিয়োগ সামিটে তাকে সৌদি আরবের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়, এবং প্রথম রোবট যে কোন দেশের নাগরিকত্ব লাভ করে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সৌদি আরবের মানবাধিকারের রেকর্ডের সমালোচনা করা হয়। এরই মধ্যে গত ৬ ডিসেম্বর ঢাকা ঘুরে গেল সোফিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মজাদার কথোপকথন নাড়া দিয়েছে রোবট প্রেমীদের। এ ব্যাপারে হ্যানসন বলেন, বাংলাদেশে এসে তিনি খুবই সম্মানিত বোধ করছেন। তার ইচ্ছা এই প্রযুক্তি পৃথিবীর সবার জন্য উম্মুক্ত করা। সোফিয়ার সফটওয়্যার ওপেন সোর্সে রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশও চাইলে সেসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে এ ধরনের রোবট তৈরি করতে পারে। ‘আমরা এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে চাই, যা মানুষকে সাহায্য করবে। আবার আমাদের সময়ের প্রযুক্তি এই বিশ্বকে অনেক বেশি জটিলও করে তুলেছে। আমার মনে হয়েছে, এসব প্রযুক্তির মানবিকীকরণ প্রয়োজন। যন্ত্রও যাতে আমাদের বুঝতে পারে এবং অনেক বেশি অর্থবহ হয়, সেভাবেই তাদের তৈরি করতে হবে।’ হ্যানসন আরও বলেন, সোফিয়ার মতো রোবট বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজিন্সের ডিজাইন করা হয়েছে মানবীয় অনুভূতির সঙ্গে মিল রেখে। এই প্রবণতা কাজ করছে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার উদ্ভাবকদের কাজেও। তিনি বিশ্বাস করেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ‘লিভিং ইন্টেলিজেন্ট মেশিন’ মানুষের পাশে থাকবে; সোফিয়া কেবল এর উদাহরণ। মানুষের আদলে রোবট তৈরির চেষ্টা তিনি শুরু করেছিলেন ৩০ বছর আগে। গত পাঁচ বছরে রোবটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের গবেষণায় বেশকিছু সাফল্য এসেছে যা, এই কাজকে এগিয়ে নিয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রায় ১০ মিনিট সঞ্চালকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয় রোবট সোফিয়া। সোফিয়ার সুন্দর পোশাকের প্রশংসা করে সোফিয়ার কাছে জানতে চাইলে, এই পোশাক সম্পর্কে সে কী জানে? উত্তরে সোফিয়া বলে, সে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানির পোশাক পরেছে, যার মোঘল ইতিহাস রয়েছে। ইউনেস্কো এই মিহি সুতার বয়নশিল্পকে স্বীকৃতিও দিয়েছে। মাথার দিকে ইঙ্গিত করে সোফিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয় টাক কেন? সোফিয়া তখন বলে, তার মাথা ওইরকম তার নকশার কারণে। আর তার বয়স মাত্র দুই বছর। বড় হলে মাথায় চুল গজাতেও পারে। এ প্রশ্নের উত্তরে রীতিমতো নড়েচড়ে বসে সবাই। আরও জানতে চাওয়া হয়েছিল সোফিয়া কোন রাশির জাতক। উত্তরে সোফিয়া জানায় তার জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেনটাইনস দিবসে। সে হিসেবে সোফিয়া কুম্ভ রাশির জাতিকা। সোফিয়ার কাছে তার নির্মাতা হ্যানসের একটি বৈশিষ্ট্যের কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে সোফিয়া জানায়, হ্যানসন দারুণ একজন ভাস্কর। রোবট হিসেবে তাকে মানুষের আদল দিতে তিনি যে পরিশ্রম করেছেন, ততটা অন্য কোন রোবটের জন্য তিনি করেননি। ভবিষ্যতে অনেক বেশি রোবট কর্মক্ষেত্রে এলে মানুষ কোন হুমকির মুখে পড়বে কি না- এ প্রশ্নে সোফিয়ার ভাবনা জানতে চাওয়া হলে সোফিয়া বলে, মানুষের জন্য যে কাজ কষ্টকর, তা রোবট করতে পারবে। মানুষ আরও উন্নত জীবন পাবে। মঞ্চে উপস্থিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে দেখিয়ে সোফিয়াকে প্রশ্ন করা হয়, তাকে সে চেনে কি না। সোফিয়া বলে তিনি জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। পলক জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ সোফিয়ার মতো সোশ্যাল রোবট তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে সে কি ভাবছে। উত্তরে সোফিয়া বলে, সে হয়ত প্রথম, তবে সে নিশ্চিত সে এরকম শেষ রোবট নয়। বাংলাদেশের প্রযক্তিগত উন্নয়ন বিষয়ে সে আশাবাদী। এমন কথা বলার ধরণ সত্যিই মানুষ কে মুগ্ধ করেছে। বারবারই খেই হারিয়ে ফেলার মতো যে মানুষই বোধহয় কথা বলছে। তা না হলে কি চটপট উত্তর দিচ্ছে। যেখানে অনেক মানুষ উপস্থিত কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে বারবার সময় নেয়। সেখানে সোফিয়া চমৎকার ভঙ্গিতে উত্তর দিয়ে যাচ্ছে। টিভিতে দেখা কোন এলিয়েন সিরিয়ালের পর্ব মঞ্চে মঞ্চায়িত হচ্ছে। সোফিয়ার প্রযুক্তি এবং মানবতা নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মতো। প্রযু্িক্তর কিংবা রোবটের ভবিষ্যত, ভূলুণ্ঠিত মানবতা, প্রযুক্তির উৎকর্ষতা কিংবা খারাপ দিকগুলো যেভাবে সোফিয়া ব্যাখ্যা করে তাতে সামনের দিনগুলোতে অনেক অনেক ভাল কাজ রোবট দিয়ে করিয়ে নেয়া যে সম্ভব তার কথা সে সবই ইঙ্গিত করে। জীবন যাপনে রোবট ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ অনেকটা পথ হেঁটে ফেলেছে। যা রীতিমতো ঈর্ষণীয়। একটা সময় রোবট কথাগুলো কল্পকাহিনী ছাড়া অন্য কিছু মনে হতো না। বড়জোড় ধারণা করা হতো এ বুঝি শুধুমাত্র উন্নত বিশ্বের জন্যই প্রযোজ্য। বিভিন্ন সিরিয়াল কিংবা কার্টুন ছবিতে দেখা যেত রোবট ঘরের কাজ থেকে শুরু করে রেস্তরাঁর সেলসম্যান হিসেবে কাজ করছে। কিংবা অফিসের জটিল জটিল কাজ নিমিষেই সমাধা করে ফেলছে। দেখতে দেখতে ভেসে যেতাম কল্প কাহিনীতে। সে সব কল্পকাহিনী এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও বাস্তব রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার একটি রেস্তরাঁয় সেলসম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে রোবট। রেস্তরাটিতে ঢুকলে চোখে পড়বে চমৎকার গড়নের রোবট সবাইকে খাবার পরিবেশন করছে। কে কোন খাবার খাবে তার অর্ডার নিচ্ছে সুনিপুণভাবে। এত দ্রুত আমাদের জীবনে রোবট একটি জায়গা করে নিবে ভাবতে অবাকই লাগে। প্রযুক্তি উৎকর্ষিত মানব কল্যাণের জন্যই। আমরাই অনেক সময় এর অপব্যবহার করে সমাজ তথা বিশ্বের জন্য হুমকি বয়ে আনি। আবার অনেকেই প্রযুক্তির আগ্রাসনকে ভয় পাই। যা মোটেও উচিত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়াটাই আসল কথা। রোবটা যদি জীবনের গতিকে ত্বরান্বিত করে তবে অবশ্যই তা সমাজের জন্য আশীর্বাদ। সোফিয়া কাব্য জীবন দর্শন বোধ থেকেই কবি সাহিত্যিকগণ তাদের রসদ খুঁজে পান। আমাদের এ দেশটি শস্য শ্যামল হিসেবেই পরিচিত। যে কারণে আমাদের সাহিত্য কবিতাতেও বারবার উঠে এসেছে বাংলার শ্যামল শোভিত রূপ। তবে এ ব্যাপারগুলো যেন এখন কিছুটা হলেও অতীতের গর্ভে যেতে বসেছে। একবিংশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এদেশ এখন অনেকটাই প্রযুক্তিনির্ভর। দিন যত যাচ্ছে ততই আমরা প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছি। একটা সময় শুধু কবুতর দিয়ে চিঠি প্রেরণ করা হতো। বহু গান, কবিতা কিংবা প্রবন্ধ রচিত আছে সে বিষয় নিয়ে। মোবাইল হীন সমাজে নীল খাম চিঠির জনপ্রিয়তার কথা এখন চোখ মেললে ধরা দেয় গান কবিতায়। সত্যিকার অর্থেই কালের চাহিদা ফুটে ওঠে শিল্প সাহিত্যে। যেমন এখনকার কবিতা সাহিত্যে যেমন মোবাইল, ক্লিক ক্লিক, কিংবা ফেসবুকের কথা ভেসে ওঠে। কারণ এটাই এখন যুগের হাওয়া। আর এ হাওয়ায় পাল তুলে দেয়াই যে বুদ্ধিমানের কাজ। ঠিক সেভাবেই রোবটের যুগে প্রবেশ করে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে আমাদের চিন্তা ধারায়। তেমনি ভাবধারা যে শিল্প সাহিত্যে বইবে না সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ নিয়ে কবি স্বদেশ রায় যেন যথার্থই ফুটিয়ে তুলেছেন তার কাব্যিক সৃষ্টিতে। কবিতাটি পড়লেই বোঝা যায় শিল্প সাহিত্যও আবহমান সমাজের সঙ্গে কিভাবে সমানতালে ছুটে বেড়ায়। যাদের ধারণা কবিরা বুঝি আপডেট না তাদের ধারণা পাল্টে দেবে এ কবিতাটি। খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার যে শিল্প সাহিত্য সমাজেরই প্রতিবিম্ব। সময়ের কথা সময়ে ফুটে উঠবে গান কবিতায় এটাই তো বাস্তবতা। আবহমান ¯্রােতেই তরী বেয়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম জীবন। আর সোফিয়ারা যেন সে জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেকেই ভেবে ক্লান্ত মানুষের জায়গা কি রোবট দখল করে নিচ্ছে কি না? ভবিষ্যতে কি তাহলে কোন কাজে মানুষের অংশ গ্রহণ থাকবে না? সবাই বেকার হয়ে পড়বে না কি এমন টাইপের নানা প্রশ্নের জাল এখন থেকেই বুনছেন। একটু অতীত ইতিহাসের দিকে তাকালেই দেখা যায়, যতবারই প্রযুক্তির কোন ছোঁয়া লাগতে যায় ততবারই মানুষের ভ্রƒ কুঁচকে যেত। আদতে কোন প্রযুক্তিই মানুষের অপকার কিংবা বিপদ ডেকে আনেনি। উল্টো আশীর্বাদ হয়েই ধরা দিয়েছে। তবে জানতে হবে প্রযুক্তির ব্যবহার। কারণ প্রযু্িক্ত তো মানুষেরই তৈরি। দেশীয় রোবটের ইতিকথা ডিজিটাল বাংলাদেশের পাল তুলে এদেশের নবযাত্রা শুরু হয়েছে বেশ আগেই। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ছোঁয়াও লেগেছে পালে। সোফিয়া তো এদেশ ঘুরে গেল এই তো সেদিন। কিন্তু তারও আগে থেকে আমাদের দেশেই রোবট পরিচর্যার কাজ শুরু হয়েছে। গ্রামাটিক্যাল বেশ কিছু রোবট এখন আমাদের ঝুলিতে আছে। কমতিটা ছিল মানুষের আকৃতি নিয়ে। সেটাও এখন দ্বারপ্রান্তে। খুব শীঘ্রই মানুষ আকৃতির রোবট শোভা পাবে দেশে। এ বছরের জানুয়ারিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ বিজ্ঞানী প্রথমবারের মতো সোশ্যাল ইন্টারেকশন রোবট তৈরি করে। সামাজিক ভাবে যোগাযোগ এবং কুশল বিনিময়ের ক্ষেত্রে রোবটটি কাজ করবে। মজার বিষয় হচ্ছে রোবটটি বাংলায় কথা বলতে পারে। ডাকলে সাড়া দেয়, চিন্তার ভাঁজে ভ্রƒ কুচকাতে পারে। হাত বাড়িয়ে কুশল বিনিময়ে সে এক্সপার্ট। এছাড়াও নিজস্ব স্টাইলের নাচ দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করতে পারে রোবটটি। এই বিজ্ঞানীদের দাবি পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে সোফিয়ার চেয়েও সুন্দর রোবট তারা তৈরি করে দেখাতে সক্ষম। এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় দেখা মেলে ‘বন্ধ’ু রোবটের সঙ্গে। ও লেভেল পড়ুয়া একদল তরুণ ইনফরমেশন টেকনোলজি ভিলেজ নামে একটি সংগঠন দাঁড় করায়। সেখান থেকেই সৃষ্টি হয় বন্ধুর। তাদের দাবি সোফিয়ার চেয়েও দ্রুত কথা বলতে ও উত্তর দিতে সক্ষম বন্ধু। সে প্রশ্নকর্তার ছবি তুলতে পারে। একদিক থেকে সে সোফিয়া থেকেও আগানো। সেটা হলো সে বাংলা এবং ইংলিশে সমানতালে কথা বলতে পারে। বন্ধু কে জিজ্ঞেস করা হয় সোফিয়া কে চিনে কি না? বন্ধুর তাৎক্ষণিক উত্তর সেও নাকি তার মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বোবট। সোফিয়াকে নিয়ে আরও মজার মজার প্রশ্ন করা হলে সুকৌশলে সব গুলো প্রশ্নের চমৎকার উত্তর দেয় বন্ধু। প্রযুক্তির এ দোলাচলে নিজের সামিল করতে পিছপা হওয়ার কিছু নেই। মনে কোন ভয় বা সংশয়ও রাখা উচিত নয়। বরং আধুনিক প্রযুক্তিকে স্বাগত না জানালে পিছিয়ে পড়তে হবে আমাদের। যে রকম ভুল আমরা অতীতে করেছি তা নিশ্চই ভবিষ্যতে করতে চাইব না। এগিয়ে আমাদের যেতেই হবে। সোফিয়া হয়তো সে অগ্রগতির একটা উদাহরণ হতে পারে, তবে নিজেদের সামর্থের পরীক্ষা যে নিজেদেরই দিতে হবে। বিশ্বে এখন জানান দেয়ার সময় এসেছে ছোট্ট এ দেশে কিভাবে বইয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির জোয়ার।
×