ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রাম আবাহনীর ঘাম ঝরানো জয়

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রাম আবাহনীর ঘাম ঝরানো জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দু’দিন বিরতি দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের সপ্তদশ রাউন্ডের খেলা। লীগের শীর্ষ দলের সঙ্গে আট নম্বর দলের লড়াই। কার জেতার কথা? নিশ্চয়ই বলবেন শীর্ষ দলটির। সেটাই হয়েছে। কোন অঘটন ঘটেনি। হয়নি কোন অপ্রত্যাশিত ফলাফল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে অতিকষ্টে ঘাম ঝরানো জয় কুড়িয়ে নিয়েছে ‘বন্দরনগরীর দল’ চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় ‘দ্য রাইজিং স্ট্রেন্থ’ খ্যাত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে। খেলার প্রথমার্ধে অবশ্য স্কোরলাইন ছিল ০-০। প্রথম লেগে গোলশূন্য ড্র করে চট্টগ্রাম আবাহনীকে আটকে দিয়েছিল আরামবাগ। দ্বিতীয় লেগে আগের মোকাবেলার ফল পাল্টে দিল চট্টগ্রাম আবাহনী। নিজেদের সপ্তদশ ম্যাচে এটা ত্রয়োদশ জয় কখনও প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা না জেতা চট্টগ্রাম আবাহনীর। ৪২ পয়েন্ট তাদের। শীর্ষস্থানটি এখনও ধরে রেখেছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে আছে শেষ জামাল ধানম-ি। ১৬ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৩৭ পয়েন্ট। পক্ষান্তরে ১৭ ম্যাচে এটা আরামবাগের দশম হার। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান পয়েন্ট টেবিলের আট নম্বরে (এই পরিসংখ্যান ঢাকা আবাহনী-রহমতগঞ্জ ম্যাচের আগ পর্যন্ত)। শেখ রাসেলের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করার পর দ্বিতীয় লেগে এটা টানা দ্বিতীয় জয় চট্টগ্রাম আবাহনীর। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় লেগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর এটা আরামবাগের টানা দ্বিতীয় হার। বৃহস্পতিবার খেলার শুরুতে দুই দলের ফর্মেশন ছিল এরকম : চট্টগ্রাম আবাহনী ৪-৩-৩, আরামবাগ ৪-৪-২। অগ্রহায়ণের শেষ পর্যায়। শীত আসি আসি করছে। ক’দিন আগে নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি হয়ে মাঠের বেহাল দশা হয়েছিল। গত দুইদিন বৃষ্টি না হওয়াতে মাঠ অনেকটাই ফিরে পায় আগের স্বাভাবিক চেহারা। ফলে চট্টগ্রাম আবাহনী-আরামবাগ ম্যাচটি হয়ে ওঠে মোটামুটি উপভোগ্য। উভয়দলই চেষ্টা করে দ্রুতগতির ফুটবল খেলতে। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গোল আদায়ের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। কিন্তু কোন দলেরই সুপ্রসন্ন হয়নি ভাগ্য। গোলের জন্য রীতিমতো হাপিত্যেশ করে মরতে হয়েছে দু’দলকেই। তবে কোন দলকেই উল্লেখযোগ্য কোন আক্রমণ করতে দেখা যায়নি। বেশিরভাগ আক্রমণই অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেছে প্রতিপক্ষের সীমানায় এসে বা প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার-গোলরক্ষকের দৃঢ়তায়। ৭৪ মিনিট। আরামবাগের সীমানায় ডানপ্রান্তে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় আবাহনী। অধিনায়ক-মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেন উঁচু-বাঁকানো ক্রস ফেলেন পেনাল্টি বক্স এরিয়ায়। জটলার মধ্যে অনেকটা পেছন থেকে দৌড়ে এসে জোরালো ড্রপ হেড করেন আবাহনীর ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা। তার হেড ফেরানোর কোন উপায় জানা ছিল না আরামবাগের গোলরক্ষক আজম খানের। বল আশ্রয় নেয় জালে। লিড নেয় চট্টগ্রাম আবাহনী (১-০)। ৭৮ মিনিটে গোল শোধের সুযোগ নষ্ট করে আরামবাগ। সতীর্থের কাছ থেকে থ্রু পাস পেয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন আরামবাগের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড বুকোলো ওলালেকান। আবাহনীর এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শট নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বলটি পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। গোলবঞ্চিত হয় আরামবাগ। এরপরও গোলশোধের জন্য আরও বেশ কবার মরণ কামড় দিয়েছিল আরামবাগ। কিন্তু তাদের প্রতিটি আক্রমণই সফলতার সঙ্গে নসাৎ করে দেয় চট্টলার দলটি। তবে তাই বলে পা গুটিয়ে বসে ছিল না গত লীগের রানার্সআপ চট্টগ্রাম আবাহনীও। তারা বেশ ক’বার পাল্টা আক্রমণ করে। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারাও। ফলে রেফারি ভারত চন্দ্র গৌড়ের খেলা শেষের বাঁশি বাজালে ওই স্কোরলাইনেই খেলা শেষ হয়। পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়ার আনন্দ নিয়ে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা এবং ভাল খেলেও কোন পয়েন্ট না পাওয়ার দুঃখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে মারুফুল হকের শিষ্যরা।
×