ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুট্টা চাষে মেতেছে তিস্তা চরের কৃষক

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

ভুট্টা চাষে মেতেছে তিস্তা চরের কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ নদ-নদীর চরসহ আবাদি জমিতে ভুট্টাচাষে মেতে উঠেছে নীলফামারী তিস্তা-চরের কৃষকরা। আমন ধানসহ শাকসবজি আবাদে এগিয়ে থাকা এ অঞ্চলের কৃষক একের পর এক ফসল আবাদে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। তারা কোন জমি পতিত ফেলে রাখতে নারাজ। তাই শীত মৌসুমের ভুট্টা আবাদে তারা জোরকদমে এগিয়ে চলছে। গত দুই মৌসুমে তিস্তা নদীর বন্যায় ল-ভ- হয়ে যায় চরের ফুড বাস্কেট। বালুচরের জমিতে ফসল আবাদ করে স্বাবলম্বী চরের মানুষের মাথায় হাত পড়ে। পুনরায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা ফসল আবাদে মনেযোগী হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, সম্প্রতিকালের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচীর মাধ্যমে বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এবার রংপুর কৃষি অঞ্চলে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে নীলফামারীতে ১৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর, রংপুরে ১৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ৭ হাজার ৭০৫ হেক্টর ও লালমনিরহাটে ২৮ হাজার ৫২০ হেক্টর। বৃহস্পতিবার ( ২৩ নবেম্বর) পর্যন্ত জমিতে রোপিত হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে। তবে কৃষি বিভাগের এই হিসাবের সঙ্গে নদনদীর বালুচরে ভুট্টা আবাদের হিসাব ধরা হয়নি। তবে চরের জমিতে ভুট্টা আবাদ হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার হেক্টরে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীত মৌসুমে ভুট্টা মৌসুমের আগেই তিস্তা নদীর চরে ভুট্টা আবাদ শুরু হয়ে যায়। ফলে সেখানকার ভুট্টার গাছগুলো বড় বড় হয়ে ফলনের সময় নিয়ে এসেছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তারচর কিছামত ছাতনাই, দোলাপাড়া, বাঘেরচর, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, বাইশপুকুর ফরেষ্টের চর, সোনাখুলীর চরসহ লোকালয়ের জমিতে চাষিরা ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে। চরের কৃষকরা বলছে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা ভুট্টা আবাদে জোর দিয়েছে। আমরা চরের মানুষগুলো জীবনসংগ্রামী, তাই নতুন করে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা ফসলের মাঠে কাজ করছি। বাস্তবতায় চরের ধু-ধু বালু চরে বিশেষ লাগসই কম খরচের প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাদ্যশস্য উৎপাদন করছে তারা। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। কৃষকের ঘরে ঘরে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত সেচপা¤প। আধুনিক চাষযন্ত্র। মাড়াইযন্ত্র। ধান কাটিং মেশিন। কৃষিতে চরগুলো যেন বিপ্লব সাধন করেছে। চরের কৃষক ফরিদুল ইসলাম (৩০) জানান, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। এই সরকারের সময় ৭ বছর ধরে তিস্তা নদীর চরে ভুট্টা আবাদ করে পরিবারের সচ্ছলতা এসেছে। গত বার ও এবার, বন্যার কারণে চরের আবাদের বেশ ক্ষতি হয়, যা কাটিয়ে উঠতে ভুট্টা আবাদে চরের কৃষকরা কর্মব্যস্ত পার করছে।
×