ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় বধ্যভূমির সন্ধানে মৃত্যুকূপ খনন শুরু

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

বগুড়ায় বধ্যভূমির সন্ধানে মৃত্যুকূপ খনন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ শহরের স্টেশন রোড, প্রশস্ত সড়ক, এ পথেই প্রতিদিন হাজারো মানুষ ও যানবাহনের গতিময় ছুটে চলা। শুধু গন্তব্যের দিকে যাওয়া, জীবনের প্রয়োজনেই। আর এই চেনা পথের পাশেই দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে থমকে ছিল পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বর্বরতার কালো অধ্যায়। অসহায় মানুষদের আর্তি উপেক্ষা করে এখানে পাকীদের নির্মমতা, নির্যাতন, বেয়োনেট ও বুলেটের আঘাতে ঝড়ে ছিল অসংখ্য নিরীহ প্রাণ। কত বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছিল তার সঠিক কোন তথ্য না থাকলেও বগুড়া রেলওয়ে এসডিও বাংলোটি পাকীদের কসাইখানা ও মৃত্যুকূপ হিসেবে পরিচিতি হয়ে আসছে। হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে কার বা ভাল লাগে। তবে ইতিহাসের সত্যানুসন্ধানে এসডিও বাংলো চত্বরের সেই ভয়াল বধ্যভূমির সন্ধানে বৃহস্পতিবার থেকে সেখানকার মৃত্যুকূপটি খনন শুরু হয়েছে। রেলওয়ের এসডিও (পাকীদের সময় এটি সাবডিভিশন অফিসারের বাসভবন ছিল) ভবন চত্বরে দর্শনীয় লালবাড়িটির পাশের ‘কালো কূপ’ খনন শুরু হওয়ায় এ নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার অবসানও ঘটতে শুরু করেছে। প্রকৃত পক্ষে পাকীরা কত মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে কূপের ভেতর ফেলে মাটি চাপা দিয়েছিল, তা জানার অপেক্ষা এখন সময়ের বিষয়ে মাত্র। বগুড়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সকালে পাকহানাদার বাহিনীর তৎকালীন কসাইখানা খ্যাত এসডিও বাংলো চত্বরের কূপ খনন শুরু হয়। বাংলোর টর্চার সেলের প্রতিটি ঘর ও দেয়ালে ছিল রক্তের দাগ। রেলওয়ের এসডিও বাংলোর কসাইখানা ও মৃত্যুকূপের বিষয়টি ‘মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র’ বইয়ের অষ্টম খ-ে উল্লেখ রয়েছে। ১৯৭২ সালে দৈনিক সংবাদের এক প্রতিবেদনেও এর উল্লেখ রয়েছে। সম্প্রতি বগুড়ার কয়েক তরুণ গবেষক এ নিয়ে নতুন করে তথ্যানুসন্ধান করে নথিপত্র জেলা প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করেন। এর প্রেক্ষিতে বগুড়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ নূরে আলম সিদ্দিকী ওই স্থান পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের সকালে ওই কূপটি আনুষ্ঠানিকভাবে খনন শুরু করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক ছাড়াও বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট নাট্যাকার প্রামণ্যচিত্রকার কাওসার চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও বয়সের উৎসুক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
×