ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুকের জন্য মুক্তিযোদ্ধার মেয়ের হাতে গরম রডের ছ্যাঁকা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

যৌতুকের জন্য মুক্তিযোদ্ধার মেয়ের হাতে গরম রডের ছ্যাঁকা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ১৩ ডিসেম্বর ॥ যৌতুক না পেয়ে শাশুড়ি আর ননদ মিলে গৃহবধূর দু’হাত গরম রডের ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (১০ ডিসেম্বর) উক্ত ঘটনা ঘটলেও ভয়ে গৃহবধূ কাউকে জানায়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ঘটনাটি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। এ ঘটনার থানায়ও অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ইছাখালী ইউনিয়নের চুনি মিঝির টেক গ্রামের বিলু মালের বাড়ি প্রকাশ শাহআলম মিস্ত্রী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, প্রায় ১০ মাস আগে ইছাখালী ইউনিয়নের চুনি মিঝির টেক গ্রামের শাহআলমের বাড়ির আবুল খায়েরের ছেলে আকবর হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের মাদবারহাট এলাকার হাফিজ গ্রামের চুনি সারেংবাড়ির মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রহমানের মেয়ে রোকসানা আক্তারের বিয়ে হয়। নির্যাতিতা রোকসানার স্বামী জাহাজে চাকরি করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবার বিভিন্ন অজুহাতে রোকসানার পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছে। রোকসানা এর প্রতিবাদ করলে তাকে গালাগাল ও মারধর করত। বিয়ের দু’মাস পর তাকে দেয়া দুই ভরি স্বর্ণ স্বামী জোরপূর্বক নিয়ে যায়, এরপরও তারা ক্ষান্ত হয়নি। সর্বশেষ ঘটনার পাঁচ দিন আগে থেকে রোকসানাকে খাবার দেয়া হয়নি। ঘটনার দিন গত রোববার ফের শাশুড়ি ও ননদ নার্গিস আক্তার যৌতুকের জন্য গালমন্দ করে। এ সময় রোকসানা প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে শাশুড়ি একটি রড গরম করে রোকসানার দুই হাতে নয়টি ছ্যাঁকা দেয়। এ সময় তার ননদ রোকসানার দুই হাত কষে ধরে রাখে। পরে রোকসানার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে রোকসানার পরিবারের লোকজন এসে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন, আবুল কালাম এবং মহিলা সদস্য ওহিদেরনেছার উপস্থিতিতে রোকসানাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে তার পরিবার চিকিৎসার জন্য মস্তান নগর হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পক্ষে তার ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় রোকসানার স্বামী মোঃ আকবর ইসলাম, শ্বশুর আবুল খায়ের, শাশুড়ি ফিরোজা বেগম এবং ননদ নার্গিস আক্তারকে আসামি করে সোমবার একটি মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে নির্যাতিতা রোকসানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ওপর যে বর্বর নির্যাতন হয়েছে আমি তার সুষ্ঠু বিচার চাই।
×