ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়ায় নিয়মবহির্ভূত ৩০ ইটভাঁটি ॥ দখল হচ্ছে বনাঞ্চল, খাসজমি

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

কলাপাড়ায় নিয়মবহির্ভূত  ৩০ ইটভাঁটি ॥ দখল হচ্ছে বনাঞ্চল, খাসজমি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৩ ডিসেম্বর ॥ সাগরপারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পর্যটন সমৃদ্ধ জনপদ কলাপাড়ায় ধানক্ষেতে কিংবা নদীরপাড়ে বনাঞ্চল ঘেঁষে ইটভাঁটি নির্মাণের হিড়িক চলছে। যেন কোন নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা নেই। যে যেভাবে পারছে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাঁটি। প্রভাবশালী মহল সরকারী দলের নেতাদের পার্টনারশীপে গত এক বছরে অন্তত নতুন ২০টি ইটভাঁটি করা হয়েছে। বর্তমানে ৩০টি ইটভাঁটি নির্মাণ হয়েছে। কৃষিজমি, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনাঞ্চল রয়েছে-এর আশপাশের জায়গায় ফ্রি-স্টাইলে ইটভাঁটি করা হয়েছে। এসব ইটভাটার মালিকরা খাসজমি দখল করেছে শত শত একর। কেটে নেয়া হচ্ছে কৃষিজমির টপসয়েল। পরিবেশ অধিদফতরের কোন নিয়ম-কানুন মানা হয়নি। জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ৩/৪টি ইটভাঁটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। করা হয়েছে জেল-জরিমানা। কিন্তু অবৈধভাবে ইটভাঁটি তৈরির কাজ বন্ধ থাকছে না। ফলে পর্যটন এলাকার পরিবেশ, কৃষিজমি এখন চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নীলগঞ্জ ইউনিয়নে অন্তত ১০টি স-মিল করা হয়েছে। অথচ নীলগঞ্জের অধিকাংশ জমি তিন ফসলি। অর্ধেক জমিতে ১২ মাস সবজির আবাদ হয়। রয়েছে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদীর চারদিকে রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আন্ধারমানিক নদীর দীর্ঘ এলাকা সাগর মোহনা পর্যন্ত ইলিশের অভয়াশ্রম। অথচ এই নদীরপার ঘেঁষে একের পর ইটভাঁটি করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের দেয়া তথ্যানুসারে নীলগঞ্জে ১০টি, টিয়াখালীতে ১০টি, মিঠাগঞ্জে ২টি, চম্পাপুরে ১টি, চাকামইয়ায় ১টি, ধানখালীতে একটি, লতাচাপলীতে দুইটি, মহিপুরে তিনটি ইটভাঁটি করা হয়েছে। আরও দুই/একটি ইটভাঁটি করার প্রস্তুতি চলছে। সরকারী হিসেবে ইটভাঁটি কতটি তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। এসব ইটভাঁটি কয়লার পাশাপাশি জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। আর ইটভাঁটির ইট পরিবহনে ব্যবহৃত ছয় চাকার অবৈধ দৈত্যাকৃতির যান ট্রলি ব্যবহৃত হওয়ায় সরকারী অর্থায়নে করা রাস্তাঘাট ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ক্যাডার দ্বারা লাঞ্ছিত করা হয় সাধারণ মানুষকে। ইটভাঁটির কারণে এখন বেড়িবাঁধের বাইরের বনাঞ্চল সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ হয়ে গেছে। পাউবোর জমি পর্যন্ত দখল করে ইটভাঁটি করা হচ্ছে। বসতভিটা পর্যন্ত বসত উপযোগিতা হারাচ্ছে।
×