বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলাভবন প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত হলো মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে স্মৃতি ফলক। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে শহীদদের নাম পরিচয় ও সঠিক সংখ্যা তুলে ধরার চেষ্টা গৃহীত হয়েছে। এতদিন এ ক্ষেত্রে যে ভুলত্রুটি চলে আসছিল সেসব সংশোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্বরের প্রবেশ পথে ঢুকলে প্রথমেই দৃষ্টিতে পড়বে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নবনির্মিত স্মারক স্মৃতি ফলক। শহীদ শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মদানের স্মৃতি আমাদের হৃদয়ে ধারণ করা এ স্মারক নিদর্শন নির্মাণের উদ্দেশ্য। ব্যক্তিক্রমী নামের তালিকা সংবলিত ফলকটি নির্মাণের প্রয়োজনীতা বহু আগে থেকে চিন্তায় থাকলেও তা বাস্তবায়িত হতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলো। ইতোপূর্বে ঠিক এ স্থানেই ছিল শহীদদের নাম লেখা একটি দ-ায়মান ফলক যা থেকে নামগুলো সঠিকভাবে পড়া সম্ভব ছিল না। শ্বেত মর্মর পাথরে নবনির্মিত স্মৃতি ফলকে শহীদদের মধ্যে রয়েছে ১৮ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষক ও একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের ডাক্তার (কর্মকর্তা) মোট ২০ জন। স্মৃতি ফলকে যাদের আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে তাদের নাম;
চিত্রিত ফলকের পশ্চাৎ দিকে ক্রমান্বয়ে হলের নাম উল্লেখ করে সে হলের শহীদ শিক্ষার্থীদের নাম এবং নামের পাশে বিভাগে সে পাঠরত ছিল তাও উল্লেখ আছে। শহীদ শিক্ষার্থীদের তালিকায় মোট ১০৫ জনের নাম পাওয়া যায়। তালিকায় শিক্ষক পরিবারের শহীদ সদস্যের নাম উল্লেখ আছে চারজনের এবং কর্মকর্তা পরিবারের শহীদ সদস্যের নাম রয়েছে একজনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ কর্মচারীদের সংখ্যা ৩৩ এবং তাদের পরিবারের শহীদ সদস্যের সংখ্যা ১০ জন। অধিকন্তু প্রাক্তন কর্মচারী পরিবারের শহীদ সদস্য ১৭। মধুর ক্যান্টিনের ব্যবস্থাপক শহীদ মধুসূদন দে (মধু‘দা)-র নাম ও পরিচয় স্মৃতিফলকে লেখা আছে।
শ্বেত মর্মর পাথরের ফলকে কাল রং এ বিশজন শহীদের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। মোট চারটি মার্বেল ফলকের সম্মুখ দিকে পাঁচটি করে শহীদের অবয়ব; একটির পর আরেকটি সোজাসুজি না বসিয়ে ফলকের বাম দিকে তিনটি এবং ডানদিকে দুটি বসানো হয়েছে। এভাবে ৫ঢ৪=২০টি শহীদের প্রতিকৃতি উপস্থাপন করা হয়েছে। মার্বেল পাথরের ফলকগুলো উচ্চতায় ৭ ফিট এবং আকৃতি ৩২ ইঞ্চি ঢ ৮৪ ইঞ্চি। স্বল্প পরিসরের বর্গাকৃতির সংরক্ষিত স্থানের চার ধারে চলাচলের পথ এবং মাঝখানে সবুজ ঘাস। ফলক স্তম্ভগুলো চারকোণে স্থাপন না করে কৌণিকভাবে সুবিন্যস্ত। এতে করে উল্লেখ্য চারটি স্তম্ভ বৈচিত্র্য নান্দনিকতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ফলক সন্নিবেশময় সামগ্রিকভাবে এক ঘেয়েমি স্পর্স করতে পারেনি। বিস্তৃত উন্মুক্ত স্থানে এ স্থাপনায় কোন বিশালতা না থাকা সত্ত্বেও পরিবেশের সঙ্গে সামজ্যস্যপুণ্য হয়ে উঠেছে।
কলাভবন চত্বরে মোট স্থানের পরিমাণ ৮০ হাজার স্কয়ার ফিট (৫ঢ৫ বিঘা আনুমানিক ২০ থেকে ২২) স্থান নিয়ে কলাভবন প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যবর্ধন ও শহীদদের স্মরণে স্মৃতিফলক নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংরক্ষিত স্থান মোট তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে; ভাগগুলো- জোন: ১, জোন: ২, জোন: ৩।
শহীদ স্মৃতিফলক সংবলিত স্থাপত্য অংশটি জোন : ১ এর অন্তর্ভুক্ত। চারটি শ্বেত মর্মর পাথরের স্তম্ভের সমন্বয়ে শহীদদের প্রতিকৃতি চিত্রিত করা হয়েছে এবং নামফলক সন্নিবেশিত হয়েছে। এ স্থাপনাই নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান অংশ হিসেবে বিবেচিত। এর পিছনে কলাভবনের সম্মুখে একটি অষ্টভুজাকৃতির ১৬ স্কয়ার ফিট পরিমাপের স্বল্প উঁচু স্থান তৈরি করা হয়েছে। এতে রয়েছে আকর্ষণীয় উন্মুক্ত মঞ্চ। মঞ্চের মাঝখানে জলাধারের ব্যবস্থা আছে এবং সেখানে শাপলা ফুল বোনার পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে পশ্চিম দিকে আরও রয়েছে জলাধার পানির ফোয়ারা ও জল প্রপাত, উন্মুক্ত বসার ধাপযুক্ত স্থান বাগান।
কলাভবন চত্বরের ২ নং জোনে পূর্বদিকে রয়েছে উন্মুক্ত মঞ্চ, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্লোগান উৎকীর্ণ করা ১৩০ ফিট দীর্ঘ ও ৭ ফিট উঁচু দেয়ালটি দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখিত মোট ১৮টি স্লোগান ধারণ করে। স্লোগানের মধ্যে রয়েছে ‘বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এখানে রয়েছে উন্মুক্ত চত্বর বা প্রদর্শনী চত্বর, উঁচুচলার পথ ও বসার স্থান এবং পথচারী পারাপার ও বাগানের সমন্বয়।
কলাভবন চত্বরে ৩ নং জোনে পশ্চিম দিকে রয়েছে ১. ঐতিহাসিক বটতলা ও এর বর্ণিত পরিচিতিমূলক ইতিহাস, ২. স্বল্প উঁচু বটতলা চত্বর এবং পথচারী পারাপার ও ৩. বাগানের সমন্বয় সাধন। বটতলার স্বল্প উঁচু অষ্টাভুজাকৃতি বসার স্থানের পরিমাপ চার হাজার পাঁচশত স্কয়ার ফিট। উন্মুক্ত স্থান, বাগান, বট বৃক্ষের ছায়া, চলাচলের পথ নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থীদের বিচরণের জন্য উপযোগী হয়ে উঠেছে। কলাভবন এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্দেশ্যে ফাঁকা স্থানে বিভিন্ন দেশজ ফুল ও ফলের গাছ রোপণ করার মাধ্যমে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে। কলাভবন চত্বরের জোন : ৩-এ দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী ডালপালা সজ্জিত বিশাল বটগাছ। ঠিক এই স্থানে আদি বটগাছটি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনারা বুলড্রোজার দিয়ে উপড়ে ফেলে ছিল। ঐতিহাসিক বটবৃক্ষটির ছায়াতলে গৃহীত হয়েছিল ১৯৭১ এর ২ মার্চে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ছাত্র আন্দোলনের সূতিগাররূপে বটতলা সবার কাছে অতি পরিচিত হয়ে উঠেছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-এ ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সিনেটর বরার্ট কেনেডি কলাভবনে বর্তমান এ বটগাছটির চারা রোপণ করেন। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ( উল্লেখ্য, লেখক বটগাছের চারা রোপণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন। ঐ সময় তিনি রবার্ট কেনেডির বক্তৃতা শুনতে এসেছিলেন। তিনি তখন বদরুন্নেসা গালর্স কলেজের শিক্ষক ছিলেন)।
অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য নিদর্শনটি কলাভবন প্রাঙ্গণে ত্রিকোণ বেদীর উপরে জোন ১ ও জোন ৩ এর মধ্যবর্তী স্থানে কলাভবনের সম্মুখে অবস্থিত। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৭৩ সালে এবং সমাপ্ত হওয়ার পর ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। এটি ভাস্কর্য শিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালেদের নির্মিত বাংলাদেশের অন্যতম সার্থক ভাস্কর্য নিদর্শন কলাভবন প্রাঙ্গণের অপরাজের বাংলা কোন অন্যায়ের কাছে পরাজয় না মানার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। এতে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিনিধিত্বকারী তিনটি ফিগার এবং তাদের অবয়বে যথার্থ যুদ্ধজয়ের অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের অপরাজেয় প্রাণশক্তির সার্থক রূপায়ণ লক্ষ্য করা যায়।
‘স্মৃতি চিরন্তন’ মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদদের আরেকটি স্মৃতি ফলক রয়েছে ফুলার রোড সড়ক দ্বীপে। সম্প্রতি সেখানে শহীদদের তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। স্মৃতি চিরন্তন ভাস্কর্য শহীদদের সংখ্যার উল্লেখ ছিল ১৫২ জন যা সংশোধন করা হয়েছে। এখন সংশোধিত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৪ জনে। তাছাড়া মধুর ক্যান্টিন, ডাকসু সংগ্রহ শালার সম্মুখে ও জগন্নাথ হলের গণকবর ফলকে শহীদদের তালিকায় শহীদদের সংখ্যা ও নামের ভিন্নতা রয়েছে, যা সংশোধন যোগ্য। এবারে শহীদদের সংখ্যা ও নির্ভুল নাম ঠিক করতে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য ও নানাভাবে যাচাই-বাচাই করে সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। শহীদ স্মৃতি ফলক নির্মাণকালে দীর্ঘ সময় ধরে শহীদদের নাম-পরিচয় সঠিক করার উদ্দেশ্যে চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদদের স্মরণে তাদের প্রতিকৃতি সংবলিত নবনির্মিত স্মৃতি ফলকটিই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত এরূপ বৈশিষ্ট্যের একমাত্র নিদর্শন। স্বাধীনতার ছেচল্লিশ বছর পর শত স্মৃতি নিদর্শনের সঙ্গে যুক্ত হলো কলাভবন চত্বরে শহীদদের স্মরণে আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে উল্লেখযোগ্য স্মৃতি ফলক।
কলাভবন প্রাঙ্গণে ঠিক প্রধান প্রবেশ পথের সম্মুখে একটি অপরিসর সংরক্ষিত স্থানে মোট চারটি উলম্ব শ্বেত মর্মর পাথরের স্তম্ভ দ-ায়মান রয়েছে। স্তম্ভগুলোর একদিকে শহীদদের প্রতিকৃতি এবং তাদের পরিচয় উপস্থাপন করা হয়েছে। যাতে সাদা পাথরের ওপর কালো রং দিয়ে প্রতিকৃতিগুলো চিত্রিত করা হয়েছে। একেকটি স্তম্ভ গাত্রে পাঁচটি প্রতিকৃতি রয়েছে। এখানে মোট চারটি ফলকে (৫ঢ৪) বিশজন শহীদের অবয়ব অঙ্গন করার সময়ে একটির উপরে আরেকটি স্থাপন না করে স্তম্ভ ফলকের বামপাশে তিনটি এবং ডানপাশে দুটি অবয়ব সুবিন্যস্তভাবে স্থাপন করার ফলে নান্দনিকতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে সন্নিবেশনায় কোন অতিশয্য নেই এবং সামগ্রিকভাবে কোন একঘেয়েমি স্পর্শ করতে পারেনি। প্রতিকৃতি সংবলিত স্তম্ভ ফলকের বিপরীত দিকে সকল শিক্ষার্থী, কর্মচারী, কর্মচারীদের পরিবারের শহীদ সদস্যদের নাম, শহীদ মধুসূদন দে (মধু‘দা) ও তার পরিবারের শহীদ সদস্য প্রমুখের নাম পরিচয় উৎকীর্ণ করা আছে।
ঐতিহাসিক কলাভবন এলাকার বিভিন্ন স্থাপনার সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন অত্যাবর্শ্যকীয় হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। উল্লেখ্য, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান কলা অনুষদের ডিন থাকাকালীন সময়ে সর্বপ্রথম কলা ভবন চত্বরের সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন ও শহীদদের স্মৃতি ফলক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এরপর ডিনের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আখতার কামাল এবং বর্তমান ডিন অধ্যাপক আবু দেলোয়ারের সময়ে মোট তিনজন ডিনের কর্মতৎপরতায় এলাকার সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন ও শহীদদের স্মৃতি ফলক স্থাপনের কাজ সুসম্পন্ন হয়েছে। এ কর্মযজ্ঞের আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ভাষা আন্দলোনে অংশগ্রহণকারী এম আনিসুদ্দৌলা (এসিআই) ও তার পরিবারের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত শহীদদের স্মারক স্মৃতি নির্দশন তাদের প্রতিকৃতি সন্নিবেশিত ফলকসহ কলাভবন প্রাঙ্গণের সৌন্দর্য বর্ধন ও পারিপাট্য আনয়নের প্রচেষ্টা সমাপ্তির পথে। এ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিল আরকেডিয়া (অৎপধফরধ) আর স্থাপত্য বিষয়ে দায়িত্বে ছিল স্থপতি মেঘনা ও স্থানিক (ঝঃযধহরশ) ‘স্থাপত্য নির্মাণ কর্ম’ নামে তার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান।
ঐতিহসিক কলাভবন প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যবর্ধন ও শহীদদের স্মরণে যে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়বে। সুন্দর পরিছন্ন ও উপযুক্ত পরিবেশ তাদের উন্নত ও পরিশিলিত মনন সৃষ্টিতে সাহায্য করবে ।
তথ্য : ঢাকা বিশ^বিদ্যলয় : স্মৃতি নিদর্শন, উদ্বোধনী বক্তৃতা ও স্থপতি মেঘনা (ঝঃযধহরশ)
লেখক : শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়