ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৫ ফুটবলে বাংলাদেশ দল ঘোষণা

ঘরের মাঠে ছন্দময় ফুটবল খেলবে মারিয়ারা

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

ঘরের মাঠে ছন্দময় ফুটবল খেলবে মারিয়ারা

রুমেল খান ॥ সুন্দর-উপভোগ্য ফুটবল খেলা এবং জয় কুড়িয়ে নেয়া... এ দুটোর সমন্বয় খুব একটা দেখা যায় না। অনেক কোচেরই রণকৌশল থাকে কুৎসিত ফুটবল খেলেও জেতা। কিন্তু এই শ্রেণীভুক্ত নন গোলাম রব্বানী ছোটন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরু হবে ‘সাফ অ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে’র আসর। এই আসরে দলকে উপভোগ্য ফুটবল খেলিয়ে চ্যাম্পিয়ন করাতে দৃঢ়প্রত্যয়ী ছোটন। টুর্নামেন্ট উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাফুফে ভবনে শুরু হয় বাংলাদেশ অ-১৫ মহিলা দলের আবাসিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিল ৩৭ ফুটবলার। সেখান থেকে ছেঁটে-কেটে ২৩-এ নামিয়ে আনা হয়। মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে চূড়ান্ত দল ঘোষণা করা হয়। দলের ২৩ ফুটবলারের মধ্যে ১৫ জনেরই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে বলে জানান ছোটন। বাংলাদেশের মহিলা ফুটবল মানেই গোলাম রব্বানী ছোটন। এবারও কী সফলতা পারবেন তিনি? ছোটন নিজে এ ব্যাপারে অনেক আত্মবিশ্বাসী। তার অভিমত, ‘এখানে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা। তাজিকিস্তানে আমরা এএফসি অনুর্ধ-১৪ রিজিওন্যাল চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছি সেখানে ভারতকে দুবার লীগে হারিয়েছি। নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছি। বেশিরভাগ ওই টিমেরই খেলোয়াড়। শ্রীলঙ্কাও ওই টুর্নামেন্টে ছিল। ইরান, তাজিকিস্তানও ছিল। আমরা আটটা দলের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছি। তাই আশা করা যায় সাফেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারব।’ এএফসি অ-১৪ আসরে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগে ছোটন কখনই বলে যাননি যে তার দলই চ্যাম্পিয়ন হবে। কোনরকম অতি আত্মবিশ্বাসী হইনি, দম্ভ করেননি। বারবার বলেছেন ভাল খেললে তাদের শিরোপা জেতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। কেননা তখন যে খেলোয়াড়দের তিনি পেয়েছিলেন তারা ছিল অনেক সম্ভাবনাময়। তাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। এএফসি অ-১৬ আসরের বেলাতেও একই অবস্থা। তবে এই প্রথম ছোটন ঘোষণাই দিয়েছেন আসন্ন সাফ অ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে তার দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার। মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানান, ‘সবমিলিয়ে আমি মনে করি মেয়েদের প্রস্তুতি ভাল হয়েছে। আশা করছি টুর্নামেন্টটা খুবই উপভোগ্য হবে। প্রতিবার মেয়েরা বাফুফে ভবনে থাকলেও এবার বাফুফে প্রেসিডেন্টের নির্দেশে অন্য বিদেশী দলগুলোর সঙ্গে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে থাকবে বাংলাদেশ দল।’ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে বাংলাদেশ দলকে কি পুরস্কার দেয়া হবে? কিরণ বলেন, ‘আগেভাগেই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে মেয়েদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে চাই না। ছোটন বলেন, ‘দলের মেয়েরা সবাই অনুশীলনের মধ্যেই আছে। থাইল্যান্ডে ২৩ জুন যে খেলোয়াড়রা খেলেছে, সেখান থেকে ১১ জনকে নিয়েছি। অনুশীলন নিয়মিত হচ্ছে। পুরো দলটা একসঙ্গে অনুশীলন করছে।’ দলীয় অধিনায়ক মারিয়া মান্ডার অভিমত, ‘আমরা অনেকদিন ধরে অনুশীলন করছি। ঘরের মাটিতে খেলা। চ্যাম্পিয়ন হতেই খেলব। সবার দোয়া চাই। প্রথম ম্যাচ আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচটা জিতলে পরের ম্যাচগুলো আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে।’ সাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে নামার আগে বিদেশী কোন শক্তিশালী দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে সেটি অবশ্যই ভাল হতো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সেটি সম্ভব হয়নি। তবে কোচ ছোটন জানান, ‘আমরা বাইরের কোন দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি। তবে কৃষ্ণারা যেহেতু বয়সের জন্য টুর্নামেন্টে খেলছে না, তারপরও তারা এই দলের সঙ্গেই ছিল। তাই প্রতি সপ্তাহে তাদের সঙ্গে দুই তিনটি করে ম্যাচ খেলছি।’ বাফুফে জানিয়েছে, এই আসরের খেলাগুলো বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সম্ভাবনা আছে। যদিও প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হতে পারে সাফের ম্যাচ। তবে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানালেন সাফের সময়টাতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম খালি না থাকাতে কমলাপুর স্টেডিয়ামেই করা হচ্ছে টুর্নামেন্ট। তবে একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো প্রয়োজন সেগুলো যতটা সম্ভব দেয়ার চেষ্টা করেছে বাফুফে। এ প্রসঙ্গে সোহাগ বলেন, ‘জাতীয় এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার সময়টা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। আর সাফের সময়সূচী সাফ থেকেই নির্ধারিত হয়। ২২ থেকে ২৪ তারিখ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এ্যাথলেটিক্স হওয়ায় কমলাপুরে এ টুর্নামেন্ট করা হচ্ছে।’
×