রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সোমবার সিরিয়া, মিসর তুরস্কে ঝটিকা সফর করেন। মধ্যপ্রাচ্যে নতুন মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করাই তার এই সফরের উদ্দেশ্য। পুতিন চাচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যেও তার দেশের প্রভাব বলয়ের সম্প্রসারণ ঘটুক। গার্ডিয়ান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে থাকার মধ্যে পুতিন মধ্যপ্রাচ্য সফর করলেন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আরব ও ইউরোপীয় মিত্ররা। এর ফলে কূটনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। আরব দেশগুলোর মধ্যে মার্কিন বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা হয়েছে। পুতিনের এ সফর তার দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এখন পঞ্চম এবং সম্ভবত শেষবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে যাচ্ছেন। বিশ্ব নেতা হিসেবে তার একটি ইমেজ রয়েছে সেটি জনগণের সামনে তুলে ধরাও এ সফরের একটি উদ্দেশ্য হতে পারে। সিরিয়ায় জঙ্গী গ্রুপ আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণার পর পুতিন প্রথমে সিরিয়া যান। দেশটির শাসক বাশার আল আসাদ তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। গত বছর মার্চেই পুতিন এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, মিশন শেষ হলে তিনি সৈন্য প্রত্যাহার করবেন। পুতিন মিসরে সেদেশের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আসসিসির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয় নেতাই দু’দেশের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহী বিমান চলাচল শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছেন। ২০১৫ সালে সিনাই উপত্যকায় একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার দু’দেশের মধ্যে সরাসরি পর্যটন ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এই ফ্লাইট আবার শুরু হলে তা দু’দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়ের সুযোগ এনে দেবে। এছাড়া রাশিয়া মিসরে প্রথমবারের মতো একটি পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করবে। এ বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে ৩ হাজার কোটি ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার মিসরীয় সামরিক ঘাঁটির সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়েও দুনেতা আলোচনা করেছেন।
ত্রিদেশীয় সফরের শেষ পর্যায়ে পুতিন তুরস্ক যান। সিরিয়া যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার উন্নতমানের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তুরস্কের কাছে বিক্রির বিষয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের সঙ্গে পুতিনের কথা হয়। এ নিয়ে চলতি বছর পুতিন ও এরদোগান অষ্টমবারের মতো পরস্পর সাক্ষাত করলেন। সিরিয়া যুদ্ধসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ভূমিকা পালন থেকে পিছু হটায় সে জায়গা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে রাশিয়া।