ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাইটেক পার্ক

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হাইটেক পার্ক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের উন্নয়নে ক্ষমতাসীন সরকার কাজ করছে বেসরকারী খাতকে সঙ্গে নিয়ে। জনগণ এই প্রযুক্তির সুফলও ভোগ করছে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত প্রায়। আগামীতে আইসিটি খাতই দেশের রফতানিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এই খাতে উৎপাদিত পণ্য আগামীতে বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। চাহিদাও ক্রমান্বয়ে বাড়বে। আর এই অর্জন লাভের জন্য প্রয়োজন তারুণ্যকে প্রশিক্ষিত করে তোলা। এমনিতে বাংলাদেশের তরুণরা এখন ইন্টারনেট জগতে নেতৃস্থানীয় অবস্থানে রয়েছে। তারা এখন নেটের জগতে যেভাবে বিচরণ করছে তাতে অনায়াসে বলা যায় শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা তরুণরাই এখন বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশ করে ফেলেছে। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে কর্তৃপক্ষ কর্মকা- অব্যাহত রেখেছে। ডিজিটাল বিশ্বেই বাংলাদেশ দেখছে ড্রোন-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবটকে। ভবিষ্যতে মোবাইল, সুপার কম্পিউটিং, চালকবিহীন গাড়ি, নিউরোপ্রযুক্তির ব্রেন, জেনেটিক এডিট দেখা যাবে। বাংলাদেশ আশাবাদী যে, অচিরেই ‘ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব’ হবে বাংলাদেশ। শুধু শ্রমিক নয়, বিশ্ববাজারে প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা রফতানিকারক দেশ হতে চায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। এ জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে এখন। দ্রুত বদলে যাওয়া প্রযুক্তি মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনছে। অর্থনীতির বিকাশ ও শিল্পায়নও ঘটছে দ্রুত। আগামীর সময়টা হবে প্রকৌশল ও নেটওয়ার্ক এ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের জন্য। এ জন্য নতুন প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ চলছে। প্রাথমিক পর্যায় থেকে আইটি শিক্ষা শুরু করা প্রয়োজন। যা জনশক্তি গড়ে তুলবে। এ জন্য রিসোর্স একটি চ্যালেঞ্জ। তাই প্রয়োজন স্বল্পমূল্যে ট্যাবলেট ও কম্পিউটার দেশে তৈরি করা। এটা বাস্তব যে, ২০০৮ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হওয়ার পর বর্তমানে দেশের চল্লিশ শতাংশ সরকারী সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ পৃথিবীর সব উন্নত প্রযুক্তিগুলোকে গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারে এমন লক্ষ্য সাধন প্রয়োজন। এমনটা আশা করা হচ্ছে যে, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতের আয় পাঁচ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। জিডিপিতে সফটওয়্যার ও আইসিটি সেবাখাতের অবদান পাঁচ শতাংশে উন্নীত হবে। বর্তমানে দেশ থেকে বছরে সত্তর কোটি ডলারের সফটওয়্যার রফতানি হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো নির্মাণ ও কানেক্টিভিটি তৈরি যতই এগিয়ে যেতে থাকবে, এই অর্জন ক্রমশ দ্রুত থেকে দ্রুততর হবে। সরকার সারাদেশে এই লক্ষ্যে ২৮টি আইসিটি পার্ক নির্মাণ করছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবকাঠামো গড়া হচ্ছে। সিলেটে পার্ক পুরোপুরি তৈরি হওয়ার পথে। কেরানীগঞ্জে, চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে পার্কের উদ্বোধনকালে বলেছেন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। শুধু যশোর নয়, ওই অঞ্চলের তেরো জেলার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবানার দ্বার উন্মোচিত হলো। এতে মেধা ও জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতির চাকা সচল হবে। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। আইসিটি উন্নয়নসূচকে ১৭৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৫তম। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৪টি দেশের মধ্যে ৩০ নম্বরে রয়েছে। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্য প্রয়োজন উচ্চগতির সহজলভ্য ইন্টারনেট। অর্থমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, আগামী বাজেটে এই খাতে সুবিধা বাড়ানো হবে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশকে প্রকৃতই ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করতে হলে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
×