ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে। না হলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখুন। সরকার মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে মিয়ানমার থেকে আগত নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এটা সাময়িক সমাধান। তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানবাধিকার সবার জন্য সবখানে সমানভাবে’ এটা এবারে খুবই ভাল স্লোগান। সংবিধানে সকলের অধিকার সমান। কিন্তু গরিব মানুষ এটি থেকে বঞ্চিত হয়। সরকারের এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এটি দূর করতে সরকার বিনা খরচে দরিদ্রদের সুবিধা দেয়ার ব্যাবস্থা করেছে। প্রতিবছর এজন্য বাজেট বাড়ছে। শেখ হাসিনার সরকার সবসময় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কিন্তু এর পিছনে কার শক্তি কাজ করে তা আমরা সকলেই জানি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের হত্যা ধর্ষণ ছাড়াও এমন কোন পরিস্থিতি নেই যা বাকি রাখেনি। তাই তারা বাধ্য হয়ে এদেশে পালিয়ে এসেছে এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড মিশনের উপ-প্রধান বেইটি কে এলাসার। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৯৪৮ সাল থেকে ১০ ডিসেম্বর দিবসটি উদযাপন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়েছে নানা আয়োজনে। এ বছর বিশ^ মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সোমবার ছিল ওই অনুষ্ঠানের সমাপনী দিন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, এটা আমি মানতে রাজি না।’ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সব জায়গায় সব বাহিনীতে কিছু আছেন, যারা হয়ত অতিরিক্ত করেন। সেই ক্ষেত্রে যখনই কোন নালিশ পাওয়া যায়, তখনই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হয়।’ সাংবাদিকরা পুলিশের বিরুদ্ধে গুম-খুনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরলে তিনি বলেন, এগুলো কিন্তু তদন্ত হচ্ছে। আপনারা চাইলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আপনাদের আপডেট জানাব। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কথাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুনছে না বলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আনিসুল হক বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন যখনই কোন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, তখনই যেই মন্ত্রণালয়ই হোক, এই সরকার কিন্তু সেটা আমলে নেয়। সেই সমস্যা সমাধান করার জন্য সচেষ্ট হয়।’ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কথা বলেন আনিসুল হক। ‘আমরা প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে যে আশ্রয় দিয়েছি, এটাও কিন্তু দারুণভাবে মানবাধিকারকে সাহায্য করে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এটাও কিন্তু একটা মাইলফলক।’
×