ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বর্তমান টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেয়া কঠিন কাজ নয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

বর্তমান টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেয়া কঠিন কাজ নয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রবিবার ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য চমকের একটা দিন। সবাই অপেক্ষা করছিলেন জাতীয় দলের নতুন কোচ নিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের সভায় কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটা জানার। কিন্তু বিসিবি থেকে জানানো হলো টেস্ট ক্রিকেটে দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন বিষয়ে। ৬ বছর পর আবার টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়েছেন সাকিব। যদিও এখন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ নিয়ে ব্যস্ত ক্রিকেটাররা। সাকিবের নেতৃত্বে ঢাকা ডায়নামাইটস উঠেছে ফাইনালে। সেটা নিয়ে আপাতত মাথা ঘামালেও জাতীয় দলের নেতৃত্বে ফেরা নিয়েও জানিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়া। সাকিব মনে করেন দলে সিনিয়র অনেক ক্রিকেটার থাকায় এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সহ-অধিনায়ক হওয়াতে তার জন্য নেতৃত্ব দেয়ার কাজটি সহজ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দল টেস্ট ক্রিকেটেও কিছু অবিস্মরণীয় সাফল্য পেয়েছে। সাকিব এই দলটিকে নিয়ে আরও ভাল করার চেষ্টা করবেন এমন প্রত্যয়ই ব্যক্ত করলেন। আর সেক্ষেত্রে বর্তমান বাংলাদেশ দলটির অনেক কিছুই করার সুযোগ ও সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। কারণ সাকিব মনে করেন দলে এখন বেশি পারফর্মার যারা নিয়মিত ভাল করছে এবং তারা ভাল করলে অধিনায়কের তেমন কোন কাজই থাকবে না। ২০০৯ সালে প্রথমবার তিন ফরমেটেই অধিনায়ক হয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ২০১১ সালেই অবশ্য দলের ব্যর্থতার দায়ে অপসারিত হন। সাকিবের কাছ থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নিয়ে দেয়া হয়েছিল মুশফিকুর রহীমের কাঁধে। ৬ বছর বেশ দক্ষতার সঙ্গেই মুশফিক দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের ভরাডুবি এবং বিভিন্ন সময়ে মুশফিকের অসংলগ্ন কথাবার্তার রেশে এবার নেতৃত্ব থেকে সরিয়েই দেয়া হয়েছে তাকে। আবার এসেছেন সাকিব। এ বিষয়ে এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘নতুন দায়িত্ব। টেস্টে গত কিছুদিন আমরা ভালই করেছি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিতলাম, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের সঙ্গে জিতলাম এখানে। এই জায়গা থেকে কতটা ভাল করা যায়, সেই চেষ্টাই থাকবে। বলা মুশকিল কতটা পরিবর্তন (আগের দফা থেকে) আসবে। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’ আগে যে ২ বছর দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেটা আর মনে করতে চান না সাকিব। তিনি মনে করেন জীবনে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। সেদিক থেকে হারানো নেতৃত্ব আবার ফিরে পাওয়াটাকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন তিনি। তবে নতুন করে চ্যালেঞ্জটা নিতেই হবে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘জানি না তো, এখন আপাতত বিপিএল চ্যালেঞ্জ নিয়ে আছি। বিপিএল শেষ হোক, জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হলে দেখা যাবে কি কি চ্যালেঞ্জ আছে। যখন পরিকল্পনা করা হবে, তখন বোঝা যাবে।’ সাকিব হয় তো এখন সেসব নিয়ে ভাবছেন না। তবে আগামী বছর থেকে অধিকাংশ সিরিজই বাংলাদেশ দলকে খেলতে হবে দেশের বাইরে। দেশের ভেতরে গত কয়েক বছরে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে দল। তবে দেশের বাইরে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের কাছে অসহায় সেটার প্রমাণ গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফর, ফেব্রুয়ারিতে ভারত সফর এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের চরম ব্যর্থতা থেকেই পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘প্রতি টুর্নামেন্ট বা সিরিজই কঠিন। সেটা দেশে হোক বা বাইরে। হয়ত দেশে একটু স্বস্তিবোধ করি আমরা। বিদেশে যেহেতু সাফল্য নেই, সেহেতু আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়।’ তবে এখান থেকে ভালভাবে শুরুর সুযোগটাও দেখছেন সাকিব। কারণ, সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়। ভাল কিছুর শুরুটাও তিনিই করতে চাইছেন। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘এটাও সুযোগ ভাল কিছু করার। কোন না কোন কিছু তো কেউ না কেউ শুরু করবে। যদি শুরু হয়, তাহলে খারাপ কী! যদিও কাজটা কঠিন। কিন্তু আমাদের যে দল আছে, আমরা যেভাবে খেলছি, অনেক কিছু করা সম্ভব। আশা করি সবাই মিলে ভাল করবে। সবাই মিলে ভাল করলেই দল ভাল করবে। উপভোগের চেয়ে বেশি আমার কাছে মনে হয় এটা দায়িত্ব। দায়িত্বটি অবশ্যই চেষ্টা থাকবে সেরা ভাবে যেন পালন করতে পারি।’ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষেই পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সফলতম কোচ চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহে। বাংলাদেশে আর ফেরেননি। তবে শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বাংলাদেশে এসে তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তির চেয়ে দেশ বড়- সেই মানসিকতা দেশের অনেক ক্রিকেটারের মধ্যেই দেখেননি তিনি।
×