ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল ফাইনাল সামনে রেখে সাকিবের পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

বিপিএল ফাইনাল সামনে রেখে সাকিবের পরিকল্পনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুক্রবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৯৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিপিএলের পঞ্চম আসরের ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। মঙ্গলবার ফাইনাল ম্যাচটি হবে। এই ফাইনালে নামার আগে তিনদিন হাতে পেয়েছে ঢাকার ক্রিকেটাররা। কিন্তু ক্রিকেটাররা শনি ও রবিবার দুইদিন বিশ্রামেই ছিলেন। তবে ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিজেকে ঠিকই প্রস্তুত করছেন। রবিবার যেমন ঢাকার কোন ক্রিকেটার মিরপুর স্টেডিয়ামমুখী না হলেও সাকিব ঠিকই স্টেডিয়ামে এসেছেন। জিম করেছেন। ফাইনালের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। ফিট থাকছেন। এই প্রস্তুত হওয়ার পেছনে রহস্যও আছে। আর ২ উইকেট পেলেই যে সাকিব বিপিএলের সেরা হয়ে যাবেন। বল হাতে সবার ওপরে চলে যাবেন। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হয়ে যাবেন। এই মুহূর্তে সাকিব ২১ উইকেট শিকার করে ফেলেছেন। আর ১ উইকেট শিকার করতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেভন কুপার যে এক আসরে সর্বোচ্চ ২২ উইকেট শিকার করেছিলেন, সাকিব সেই রেকর্ডকে ছোবেন। এরপর আর ১ উইকেট নিতে পারলে সবাইকে ছাপিয়ে যাবেন সাকিব। ২৩ উইকেট নিয়ে বিপিএলের এক আসরে সর্বাধিক উইকেট শিকারি বোলার হয়ে যাবেন। রেকর্ড গড়বেন। সাকিব তাই নিজেকে প্রস্তুত করছেন। পাশাপাশি এরপর যে ম্যাচটি খেলবেন সেটি শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। ম্যাচটিতে যদি সাকিব ভাল কিছু করতে পারেন তাহলে বিপিএল সেরা হওয়ারও সুযোগ থাকছে। টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার সুযোগও সাকিবের সামনে থাকছে। আর তাই ভালভাবেই প্রস্তুত হয়ে নিচ্ছেন সাকিব। এ মুহূর্তে বল হাতে সর্বাধিক ২১ উইকেট নেয়ার সঙ্গে ব্যাট হাতে ২৩.১২ গড়ে ১৮৫ রান করেছেন। সাকিবের সামনে সুযোগ রয়েছে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার। তবে ফাইনালের আগ পর্যন্ত হিসেব ধরা হয়। সেই হিসেবে সাকিবকে হুমকি জানানোর মতো ক্রিকেটারও আছেন। অলরাউন্ড নৈপুণ্য বিবেচনায় সাকিবই এগিয়ে রয়েছেন। এর সঙ্গে যদি ফাইনালে সাকিবের নৈপুণ্য যোগ হয় তাহলে বিবেচনায় নৈপুণ্যও আসবে। তাতে করে সাকিবই হয়তো শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট সেরা হয়ে যেতে পারেন। ঢাকা ডায়নামাইটসেরই এভিন লুইস ব্যাট হাতে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। ৩৮.১০ গড়ে ৩৮১ রান করে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শীর্ষে আছেন। যদি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ক্রিস গেইল বিশেষ কোন নৈপুণ্য দেখাতে পারেন তাহলে ৩৩৬ রানে থাকা গেইল শীর্ষে উঠে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে গেইলও সিরিজ সেরার বিবেচনায় এসে পড়তে পারেন। বল হাতে সাকিবের বিকল্প কাউকে দেখা যাচ্ছে না। সাকিবেরই সতীর্থ শহীদ আফ্রিদি (১৫ উইকেট) আছেন। কিন্তু সাকিবের চেয়েও অনেক দূরে। তাই সাকিবের দিকেই বলা চলে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার ঝুঁকে আছে। এর আগে বিপিএলের প্রথম আসরে ২০১২ সালে ও পরের আসরে ২০১৩ সালে টানা দুইবার টুর্নামেন্ট সেরা হন সাকিব। এবার যদি হন তাহলে পাঁচবারের মধ্যে তিনবারই সাকিব টুর্নামেন্ট সেরা হবেন। তবে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার চেয়ে বড় প্রাপ্তির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন সাকিব। আর ২ উইকেট শিকার করতে পারলেই বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি বোলার হয়ে যাবেন সাকিব। বিপিএলের প্রথম আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হন স্পিনার ইলিয়াস সানি। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে ১৭ উইকেট নেন সানি। এরপর ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার আলফোনসো থোমাস হন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার। তিনিও ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের হয়ে খেলে ২০ উইকেট শিকার করেন। ২০১৫ সালে বিপিএলের তৃতীয় আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেভন কুপার আগের দু’জনকে পেছনে ফেলে বরিশাল বুলসের হয়ে খেলে ২২ উইকেট নেন। যা এখন পর্যন্ত এক আসরে বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড। গত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই ডোয়াইন ব্রাভো ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ২১ উইকেট নেন। ২ উইকেটের জন্য কুপারকে পেছনে ফেলতে পারেননি। কুপার এখনও সেরার অবস্থানেই আছেন। আর ২ উইকেট নিতে পারলে সাকিবই হবেন এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার। এই চিন্তা থেকেই সাকিব ফাইনালের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে সাকিব বলেছিলেন, ‘এ মুহূর্তে আমি খুব ভাল বোলিং করছি। আর একটি ম্যাচে আশা করছি এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব।’ বোঝাই যাচ্ছে ফাইনালের জন্য কতটা সিরিয়াস সাকিব।
×