ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিআরটিএ অভিমুখী;###;মিছিল পুলিশী;###;বাধায় নিয়ন্ত্রণে

উবার পাঠাও বন্ধ কর ॥ আবদার সিএনজি অটোরিক্সাওয়ালাদের

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

উবার পাঠাও বন্ধ কর ॥ আবদার সিএনজি অটোরিক্সাওয়ালাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উবার, পাঠাওয়ের মতো এ্যাপসনির্ভর সেবা বন্ধসহ আট দফা দাবিতে বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এ সময় তারা অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। রবিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে বিআরটিএর কার্যালয় অভিমুখে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মিছিল করার সময় ৫ শ’ সিএনজি অটোরিক্সাচালক ও শ্রমিকরা এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তবে পুলিশী বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ সময় তারা আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা ও চট্টগ্রামে ধর্মঘট পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেয়। সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ঘেরাওয়ের খবরে বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে পুলিশের বাধার মুখে তারা বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কিছুক্ষণ পর শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল বিআরটিএ’র উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে তাদের লিখিত দাবি-দাওয়া পেশ করেন। এ সময় সাখাওয়াত হোসেন দুলাল বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী দাবি আদায় না হওয়ায় রবিবার বিআরটিএ কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচী দেয়া হয়। আট দফা দাবিতে আমরা শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছি। দাবি আদায় না হলে ঘোষণা অনুযায়ী অটোরিক্সা চালক-শ্রমিকরা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা ও চট্টগ্রামে ধর্মঘট পালন করবে। এর পরেও দাবি পূরণ না হলে ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই মহানগরে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হবে। এ বিষয়ে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মোঃ শামীম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের লিখিত দাবি-দাওয়া বিআরটিএ বরাবর পেশ করার মাধ্যমে তাদের ঘেরাও কর্মসূচী থেকে নিবৃত করা হয়েছে। তারা অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিশেষ তারা সুবিধা করতে পারেনি। ঐক্য পরিষদের আট দফা দাবি হলো- ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচল করা মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিক্সা অপসারণ করে নতুন অটোরিক্সা প্রতিস্থাপন, ঢাকায় চালকদের নামে পাঁচ হাজার এবং চট্টগ্রামে চার হাজার অটোরিক্সা বিতরণ, উবার, পাঠাওয়ের মত এ্যাপসনির্ভর পরিবহন সেবা বন্ধ করা, খসড়া আইন পরিবহন আইন থেকে ‘শ্রমিক স্বার্থবিরোধী’ ধারা বাতিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে ব্যবহারিক পরীক্ষা বন্ধ করা, অননুমোদিত পার্কিংয়ের জন্য মামলা না করা, চালকদের ‘হয়রানি’ বন্ধ করা ও নিবন্ধিত অটোরিক্সাচালকদের ঢাকা জেলার সব জায়গায় চলাচলের অনুমতি দেয়া। উল্লেখ্য, বছরখানেক আগে ঢাকায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ্যাপসনির্ভর উবার চালুর পর বেশ জনপ্রিয়তা পায়। যানজটের এই রাজধানীতে নগরবাসী এতদিন সিএনজিচালকদের কাছে জিম্মি থাকায় একই খরচে উবার ব্যবহার করার বিকল্প সুযোগ পায়। একদিকে নিরাপত্তা অন্যদিকে অর্থ সাশ্রয়ী হওয়ায় নগরবাসী উবারকে নির্ভরশীল বাহন হিসেবে গ্রহণ করে। এতে সিএনজিচালকদের একচেটিয়া আয়ের পথ কঠিন হয়ে পড়ে। এ সম্পর্কে হিটম্যান পেস্ট কন্ট্রোল নামের একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ পাটওয়ারি জনকণ্ঠকে বলেন, এক বছর আগেও প্রতিদিন আমার উত্তরা থেকে নাখালপাড়ায় সিএনজি থ্রি হুইলারে যাতায়াত করতে দৈনিক ৬/৭ শ’ টাকা ভাড়া লাগত। সবচেয়ে বড় কথা মিটারে কখনই সিএনজি চালকরা আসতে চাইত না। উবার চালুর পর এখন তার চেয়েও কম খরচে আরও ভাল সার্ভিস পাওয়া যায়। এতে মানুষ সিএনজি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে এখন আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। নগরবাসী আর সিএনজিমুখী হবেনা। শুধু উবার কেন পাঠাও নামে মোটরসাইকেল সার্ভিসও বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় সিএনজিচালকরা এখন ভাতে মরতে বসার উপক্রম হয়েছেন।
×