ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রাম আদালতে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

কুড়িগ্রাম আদালতে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানহানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। এজাহারে দুই হাজার কোটি টাকা সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান বাদী হয়ে রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনামুল হক বসুনিয়ার আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বাদী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু। বিচারক বাদীর পক্ষে আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর এজাহার গ্রহণের জন্য কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী আহসান হাবীব নীলু জানান, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি নিয়ে নিন্দা, দেশের সার্বভৌমকে অস্বীকার করা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকী সম্পর্কে মিথ্যা ও মানহানিকর উক্তি প্রকাশ, প্রচার করায় বাদী একজন দেশপ্রেমিক ও সচেতন নাগরিক হিসেবে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গত ১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্র্যাটিক কাউন্সিল (বিডিসি) আয়োজিত ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যমর ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিথ্যা ও অশালীন বক্তব্য রাখেন। তা ইউটিউবের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা ঐড়শশড়ঃযধ.পড়স, চপধপবভঁষ ঞঠ, ইৎবধশরহম ঘবংি, ইধহমষধফবংয অভভধরৎং লিঙ্কগুলোর মাধ্যমে প্রচার করা হয়। গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে কুড়িগ্রাম আইনজীবী ভবনে বসে বাদীর এ বক্তব্য দৃষ্টিগোচর হয়। মাহমুদুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের গালিগালাজ করেছেন। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকী সম্পর্কে মিথ্যা ও মানহানিকর উক্তি এবং অসত্য ও অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন। মিথ্যা প্রচার দিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন। দেশকে বিপদগ্রস্ত করে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার চেষ্টা করেছে আসামি। আসামির এমন আচরণে বিক্ষুব্ধ হয়ে বাদী লুৎফর রহমান এ মামলা করেন। এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে- এ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম রাসেল, এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, এ্যাডভোকেট জাহিদ আহমেদ কাজল ও এ্যাডভোকেট লাবণী জহির লিজাকে। আদালত আবেদন এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়ায় বাদী লুৎফর রহমান সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বাদী এ মামলার আসামি মাহমুদুর রহমানকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। দিনাজপুরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার নাতনি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীকে উদ্দেশ করে মানহানিকর ও রাষ্ট্রদ্রোহ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ অজ্ঞাত আরও ১ জনকে আসামি করে দিনাজপুরে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বনাথ ম-লের আদালতে খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শামসুর রহমান পারভেজ বাদী হয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও অজ্ঞাত আরও ১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অফিসার-ইন-চার্জ কোতোয়ালি থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার বাদী এ্যাডভোকেট শামসুর রহমান পারভেজ জানান, তিনি তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন, গত ১ ডিসেম্বর ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্র্যাটিক কাউন্সিল (বিডিসি) আয়োজিত ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে জনসাধারণ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সামনে আসামি মাহমুদুর রহমান বলেন যে, “বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র নয়, শুধু ভূখ- আর জনগণ থাকলে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হয় না। এই দেশ এখন বড় জোর ভারতের কলোনি বলা যায়। শেখ মুজিবুর রহমান দেশের গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমকে হত্যা করে কবর দিয়েছে। প্রেসক্লাবে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল থাকতে পারে না। এছাড়াও জাতির জনকের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকী সম্পর্কে অশ্লীল বক্তব্য দেয়। তার বক্তব্যগুলো গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা, নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকী এমপি ও তাদের পরিবারসহ রাষ্ট্রের ব্যাপক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় আসামি রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছে বলে বাদীর কাছে মনে হয়েছে। বাদীসহ তার সহযোগী সাক্ষীরা আসামির দেয়া বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠ করে এবং অংশবিশেষ সংগ্রহ করে রবিবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিচারক গ্রহণ করে ওই আদেশ প্রদান করেন। মামলাটি বাদী পক্ষে এ্যাডভোকেট হাসনে ইমাম নয়ন, তৌহিদুল ইসলামসহ ২০ আইনজীবী নিয়োজিত ছিলেন।
×