ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায়ও কাজ করে চলেছে

প্রকাশিত: ০৪:০১, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায়ও কাজ করে চলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানবাধিকার মানুষ জন্মসূত্রে অর্জন করে। বাংলাদেশের সংবিধান দেশের জনগণকে সে অধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়েছে। শুধু দেশের মানুষেরই না রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক চাহিদা পূরণে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপিত পাঁচ দফা প্রস্তাবেই সুরক্ষিত হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার বলে মন্তব্য করেছেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ মন্তব্য করেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সিপ্পো এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রিনি হোলেনস্টেইন। সমতা, ন্যায় বিচার এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করার প্রত্যয় সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকারে আয়োজন করা হয় এ সেমিনারের। সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য রুখতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বিপদে মানুষের পেছনে দাঁড়াতে হবে। সংখ্যালঘু দেখে পিছিয়ে গেলে চলবে না। সমতা আনতে গেলে নারীদের শিক্ষা এবং কাজের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নারীরা শিক্ষিত হয়ে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেই অর্জিত হবে সমতা এবং অবসান ঘটবে লিঙ্গ বৈষম্যের। দরিদ্রতাকে হার মানিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশ। এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বদরবারে প্রতিফলিত হয়েছে। সমতা, ন্যায় বিচার এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে দেশ এসডিজি অর্জনেও একই রকম সাফল্য দেখাবে। ড. গওহর রিজভী বলেন, দেশে সমতা নিশ্চিত করে দলিত, হরিজন, সংখ্যালঘু সকল সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিত করতে ইতিবাচক উদ্যোগ এবং মূল্যবোধ থাকতে হবে। সংবিধান সেভ গার্ড হিসেবে অধিকার দিয়েছে মানুষকে তার বাস্তবায়ন করতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক যে কোন প্ল্যাটফর্ম থেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের রুখতে হবে। মানবাধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে মিয়া সিপ্পো বলেন, মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ তার মানবাধিকার অর্জন করে। কোন ব্যক্তি, সংগঠন বা রাষ্ট্র তার এই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। আর মানবাধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন ঠেকানোর জন্য সংগঠন বা ইউনিয়নের ভূমিকা জরুরী নয় এর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরী ব্যক্তির উদ্যোগ ও মানবিকতা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকারের বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রিনি হোলেনস্টেইন বলেন, মানবাধিকার নাগরিকদের অধিকার, সমতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবাধিকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এত বিপুল জনগোষ্ঠীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। এই ইস্যু মীমাংসা করতে বিশ্ব জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের সাহায্য প্রয়োজন বাংলাদেশের। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, নাগরিকদের মানবাধিকার নিশ্চিত সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি খুন, গুমের ঘটনায় মানবাধিকার সুরক্ষা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাগুলোর বিষয়ে সচেতন রয়েছে।
×