ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৌর বিদ্যুতে আলোকিত দাউদকান্দির জনপদ

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

সৌর বিদ্যুতে আলোকিত দাউদকান্দির জনপদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, ৯ ডিসেম্বর ॥ বিদ্যুতের ওপর চাপ কমাতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় লাগানো হয়েছে সৌর বিদ্যুতচালিত সড়ক বাতি। সোলার সিস্টেম সড়ক বাতিগুলো শোভা পাচ্ছে এলাকার গ্রামীণ সড়ক, বাজারের মোড়ে মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। রাতের বেলায় বিদ্যুত চলে গেলে এসব সৌর সিস্টেমের সড়ক বাতির আলোয় আলোকিত করছে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার জনপদ। সৌর বিদ্যুতের আলোর জন্য। চুরি ছিনতাইও আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে বলে এলাকাবাসী জানান। জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় সৌর বিদ্যুতের এ সড়ক বাতি বসিয়েছে। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি বাজার, হাসপাতাল, গুরুত্বপূর্ণ স্থান, বিভিন্ন রাস্তার মোড়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে ৩’শ ৭৩টি পয়েন্টে স্টিলের পোলে এ সোলার বাতি বসানো হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় কতৃক মনোনীত ইডকলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিসডা বাংলাদেশ ২০১৬-১৭ ইং অর্থবছরে দুই কিস্তিতে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাস্তবায়ন করে। চলতি অর্থবছরে এরকম প্রায় আরও ৪’শ পয়েন্টে সোলার বাতি বসানোর স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি জানায়। প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকারে এ উপজেলার গ্রামীণ সড়কেও সৌরবিদ্যুত আলো দিচ্ছে। দাউদকান্দি পৌর এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতের বেলায় বিদ্যুত না থাকলে এখানে আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করতে হতো। এ ছাড়াও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটত। সৌর সোলার সিস্টেমের সড়ক বাতি লাগানোর ফলে এখন আর আমাাদের আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করতে হয় না।প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, স্থানীয় এমপির পরামর্শক্রমে টিআর কাবিটা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৩৭৩টি পয়েন্টে সৌর বিদ্যুতের স্ট্রিট লাইট সুন্দরভাবে লাগানো ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি বাজার, গুরুত্বপূর্ণ স্থান বিভিন্ন রাস্তার মোড়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনেসহ ১৫৩টি পয়েন্টে স্টিলের বিশেষ ধরনের সোলার প্যানেলে এ বাতি বসানো হয়েছে। গৌরীপুর-ওলানপাড়া-ছান্দ্রা সড়কের কয়েকজন সিএনজি চালকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এ সড়কের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সোলার প্যানেল বসানোর কারণে এখন ছিনতাই ডাকাতির পরিমাণ কমে গেছে। ছিনতাইয়ের ভয়ে গৌরীপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যায় বাড়ি চলে যেত, তাই আমাদেরও রাতে সিএনজি চালানো বন্ধ থাকত। এখন আমরা নিরাপদে গাড়ি চালাই, সড়কে আলো থাকায় আর কোন ভয় পাই না। গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী ফরিদ মিয়া বলেন, এ বাস স্ট্যান্ডটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চাঁদপুরের কচুয়া, মতলব ও বি-বাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরসহ ৬/৭টি উপজেলার লোকজনের জংশন এখানে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। তার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্যই এই প্রকল্পের আওতায় সড়ক বাতি স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগে উপজেলার গ্রামীণ সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌর বিদ্যুতের বাতি বসানো হয়েছে। এতে রাতের আঁধারে সৌর বিদ্যুতের আলোয় নিরাপদে মানুষ চলাচল করতে পারছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন জানান, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার যেখানে মানুষের চলাচল রয়েছে, এরকম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রায় কয়েক শতাধিক পয়েন্টে স্টিলের পোলে সৌর বিদ্যুতের এ সড়ক বাতি বসানো হয়েছে।
×