ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল ফুটবলে বৃষ্টির বাগড়া ॥ আবাহনী ১-০ শেখ রাসেল

ঢাকা আবাহনীর কাছে শেখ রাসেলের হার

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

ঢাকা আবাহনীর কাছে শেখ রাসেলের হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ। যার প্রভাবে সারাদেশে দিনভর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। এতে শীত জাঁকিয়ে বসে বেশ ভালভাবেই। বিকেল ৪টা বাজতেই চারদিক নিকষ কালো আঁধার নেমে আসে। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত। বৃষ্টি বা কুয়াশার হাত থেকে বাঁচাতে ক্রিকেট মাঠ বা আউটফিল্ড ঢেকে রাখা হয় কভার দিয়ে। কিন্তু ফুটবলে এমনটা দেখা যায় না। তাই ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠটিও ছিল বিপর্যস্ত অবস্থায়। পিচ্ছিল ও ভেজা মাঠ। আগেভাগেই দিনের আলো কমে যাওয়াতে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট জ¦ালিয়ে দেয়া হয়। এই পরিবেশেই দিনের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড এবং শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র লিমিটেড। এমন অস্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশেও দুই দল দ্রুতগতির ফুটবল খেলতে চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনীই। তারা ১-০ গোলে হারায় রাসেলকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়ে ছিল ওই স্কোরলাইনেই। প্রথম লেগেও রাসেলকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী (সে ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে)। ফলে শনিবারের ম্যাচ হেরে আগের হারের প্রতিশোধটা নেয়া হলো না শফিকুল ইসলাম মানিকের শিষ্যদের। নিজেদের ষষ্ঠদশ ম্যাচে এটা বাংলাদেশ যুগে সর্বাধিক (১৬ বার) এবং পেশাদার যুগে সর্বাধিক (৫ বার) লীগ জয়ী আবাহনীর একাদশ জয়। ৩৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে তারা। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-িকে টপকে একধাপ ওপরে উঠে দ্বিতীয় স্থানে এলো তারা। চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডেরও পয়েন্ট ৩৬। তবে তারা ঢাকা আবাহনীর চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলেছে, তাছাড়া গোল গড়েও এগিয়ে আছে তারা (চট্টগ্রাম আবাহনী +১৯, ঢাকা আবাহনী +১৪) ফলে চট্টগ্রামকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠতে পারলো না ঢাকা আবাহনী। শনিবারের ম্যাচে এই অবস্থানে আসার জন্য তাদের শেখ রাসেলকে হারাতে হতো কমপক্ষে সাত গোলের ব্যবধানে। প্রথম লেগে ফরাশগঞ্জ এবং দ্বিতীয় লেগে সাইফের কাছে হারার পর এখন পর্যন্ত টানা চার ম্যাচে জয় কুড়িয়ে নিল আবাহনী। ২০১২-১৩ মৌসুম লীগের শিরোপাধারী ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত রাসেলের সংগ্রহ ২০ পয়েন্ট। পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান আগের মতোই, ষষ্ঠ। দ্বিতীয় লেগে এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকলো তারা। এদিকে গণমাধ্যমে এতবার লেখালেখির পরও নিজেদের অস্পষ্ট জার্সি নম্বরের সমস্যার সমাধান করেনি শেখ রাসেল। শনিবারও আগের জার্সিই পরে খেলতে নামে তারা। মনে হচ্ছে তারা ফিফাকেও অবলীলায় বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। বাইলজকে করছে থোড়াই কেয়ার। এদিন তাদের অস্পষ্ট জার্সি নম্বর আরও অস্পষ্ট হয়ে যায় যখন মাঠের কাদা লেগে যায় জার্সির নম্বরে। ফলে কোনভাবেই কেউই (না ক্রীড়া সাংবাদিক, না ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার) নম্বর বুঝতে পারেননি! আবাহনী এখন ভুগছে কোচ সঙ্কটে। ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ চুক্তির মেয়াদ নবায়ন না করে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। অন্য একটি দেশের লীগের দলের কোচ হিসেবে যোগও দিয়েছেন। শনিবারের ম্যাচে দ্রাগো মামিচের পরিবর্তে আবাহনীর ডাগআউটে দাঁড়াতে দেখা গেছে গোলরক্ষক কোচ আতিকুর রহমানকে। ম্যাচের ৩ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় আবাহনী। আবাহনীর লেফটব্যাক ওয়ালী ফয়সাল রাসেলের সীমানার বামপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে ডি-বক্সের একটু বাইরে থেকে বাঁ পায়ের উড়ন্ত ক্রস ফেলেন রাসেলের পেনাল্টি বক্স এরিয়ায়। বল ধরতে দৌড়ে এগিয়ে আসেন রাসেলের গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান। কিন্তু তার আগেই লাফিয়ে উঠেছেন আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন অনুহা। তার হেড আশ্রয় নেয় রাসেলের জালে (১-০)। উল্লাসে মাতে আবাহনী শিবির। দ্বিতীয়ার্থে অবশ্য গোল শোধে মরিয়া রাসেল কিছুটা চাপ সৃষ্টি করে আবাহনীর সীমানায়। তবে সফলকাম হতে পারেনি। পিছিয়ে ছিল না আবাহনীও। কিন্তু তাদের গোল প্রচেষ্টাগুলোও পর্যবসিত হয় ব্যর্থতায়। শেষ পর্যন্ত ওই এক স্কোরলাইনেই খেলা শেষ হয়। জিতেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় আবাহনী দলকে। কেননা আরও ছয় গোল বেশি দিলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠতে পারতো তারা।
×