ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মশালায় ভারত-শ্রীলঙ্কা প্রথম ওয়ানডে আজ

রোহিত-থিসারার অন্যরকম চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

রোহিত-থিসারার অন্যরকম চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সামনে রেখে রঙিন পোশাকের এ দ্বৈরথে বিশ্রামে বিরাট কোহলি। ঘরের মাটিতে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা। অন্যদিকে ঢেলে সাজানো শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব পড়েছে অভিজ্ঞ থিসারা পেরেরার কাঁধে। দু’দলের দুই ক্রিকেটারের জন্য সিরিজটা তাই অন্যরকম এক রোমাঞ্চের, চ্যালেঞ্জরও বটে। চ্যালেঞ্জটা অতিথি অধিনায়ক থিসারার জন্যই বেশি। দেশটির সাবেক তারকা ও বর্তমান ধারাভাষ্যকার রাসেল আরনল্ড অনেকটা মজা করে বলেছেন, ‘আমি বাজি ধরতে পারি, এবার আর শ্রীলঙ্কা ৫-০তে হারবে না। সিরিজটা যে তিন ম্যাচের!’ জুলাই-আগস্টে লঙ্কায় গিয়ে রঙ্গনা হেরাথ, উপুল থারাঙ্গাদের টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০তে যথাক্রমে ৩-০, ৫-০ ও ১-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে কোহলিবাহিনী! ব্যাঙ্গাত্মকভাবে আরনল্ড আসলে সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে দুটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান রেহিত শর্মা। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটিও তার দখলে। সুতরাং সংক্ষিপ্ত পরিসরে রোহিতের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন নেই। পূর্বে বহুবার দেখা গেছে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়ে অনেক তারকা ব্যাটসম্যান নিজের ফর্ম হারিয়েছেন। একদিনের এই সিরিজে তাই চোখ থাকবে কিভাবে অধিনায়কত্বের পাশাপাশি নিজের ব্যাটিংশৈলী মেলে ধরেন রোহিত। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে সাফল্য এনে দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে তার। তরুণ দল নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নামতে হচ্ছে। কোহলির অনুপস্থিতিতে পরামর্শ দেয়ার জন্য সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি থাকলেও দলকে ঠিক মতো পরিচালনার দায়িত্বটা থাকবে রোহিতের ওপরই। প্রয়োজনে বহুবার ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন করেছেন এমএস ধোনি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এই সিরিজে তাকে কোন্ পজিশনে খেলানো হয় সেটাও দেখার। ঘরের মাঠে ভারতের বরাবরাই সেরা অস্ত্র স্পিন বোলিং। স্পিন জুটিকে ঠিক মতো ব্যবহার করার চ্যালেঞ্জ থাকবে আইপিএল জয়ী অধিনায়কের সামনে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের সেট মিডল অর্ডার এখনও তৈরি নয় ভারতীয় দলে, বিশেষত তিন নম্বর পজিশন নিয়ে এখনও ধান্দায় টিম ম্যানেজমেন্ট। ধোনির পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে রোহিত পাচ্ছেন শিখর ধাওয়ান, অজিঙ্কা রাহানে, কোদার যাদব, দিনেশ কার্তিক ও মানীষ পা-েকে। আছেন নবাগত সিদ্ধার্থ কাউল ও তুখোড় পেস বোলিং-অলরাউন্ডার হারদিক পান্ডিয়া। পেস বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহ। স্পিনে আলোচিত চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব ও লেগি অক্ষর প্যাটেল। মূল ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ সিরিজে (আমিরাত ও লাহোর) শ্রীলঙ্কাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পেরেরা। ওই সিরিজেই তরুণ দলের ওপর পেরেরার নেতৃত্বের ছাপ ও কর্তৃত্ব মনে ধরে লঙ্কান বোর্ড কর্তাদের। ভয়ঙ্কর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতলেও ওয়ানডেতে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়েছে ৫-০তে। এর আগে ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও হার একই ব্যবধানে। তিনটি সিরিজেই নেতৃত্বে ছিলেন উপুল থারাঙ্গা। ভীষণ অস্থিরতার ভেতরে থাকা লঙ্কান ক্রিকেটে এ বছর সপ্তম অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন থিসারা পেরেরা। জুলাইয়ে ঘরের মাটিতে দুর্বল জিম্বাবুইয়ের কাছে সিরিজ হারের লজ্জা সঙ্গী করে অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। সাবেক অধিনায়ক অবশ্য এই সিরিজের দলে আছেন। বাদ পড়েছেন টেস্ট অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। ফিরেছেন অলরাউন্ডার আসেলা গুনারত্নে ও উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান দানুষ্কা গুনাথিলাকা। যদিও লঙ্কান নির্বাচকদের ওপর সন্তুষ্ট নন খোদ দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী। গলে ভারতের বিপক্ষে গত জুলাইয়ে ইনজুরিতে পড়ার পর এই প্রথম দলে ফিরছেন গুনারত্নে। ম্যাথুস-গুনারত্নের ব্যাটিংয়ের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। ২০১৯ বিশ্বকাপ সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে চাইছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। মূলত অভিজ্ঞতা ও অলরাউন্ডিং বৈশিষ্ট্যের জন্যই থিসারা পেরেরাকে পছন্দ তাদের। নতুন দুই অধিনায়কের রোমাঞ্চের শুরুটা ভ-ুল করে দিতে পারে বৃষ্টি। ধর্মশালার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তেমন ইঙ্গিতই দেয়া হয়েছে। ১৯৭৯ থেকে মুখোমুখি ১৫৫ ওয়ানডের ৮৮টিতে জয় ভারতের। শ্রীলঙ্কার জয় ৫৫। টাই ১ ও পরিত্যক্ত ১১। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নবেম্বরে ভারত সফরে ওয়ানডে সিরিজে ৫-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয়েছিল ম্যাথুসের শ্রীলঙ্কা। ওই সিরিজেই কলকাতায় চতুর্থ ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৬৪ রানের রেকর্ড গড়েছিলেন রোহিত। এবার তিনি অধিনায়ক। দারুণ সেই স্মৃতি রোহিতকে নিশ্চয়ই আরও বেশি করে উজ্জীবিত করবে।
×