ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ১২ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ১২ জানুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’ প্রতিপাদ্যে আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য এ উৎসবের এটি ১৬তম আসর। ষষ্ঠদশ উৎসবে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা দেখতে পাবেন ৬০টি দেশের বৈচিত্র্যময় বিষয়ের দুই শতাধিক চলচ্চিত্র। সাধারণ দর্শনার্থীরা ৩০ টাকা দর্শনীর বিনিময়ে এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিনা দর্শনীতে উপভোগ করতে পারবে এসব চলচ্চিত্র। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ হবে বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগ। এই বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেশের নির্মাতাদের নির্মিত ১০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। উৎসবের মূল ভেন্যু হবে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন। পাশাপাশি জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, অঁলিয়স ফ্রঁসেস মিলনায়তন, রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার এবং স্টার সিনেপ্লেক্স। শনিবার ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির উপদেষ্টা স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, এবারের উৎসবের ৬০টি দেশের দুই শতাধিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। ইতোমধ্যেই ভারত, নেপাল, ভুটান, গণচীন, ফিলিপাইন, ইতালি, ইয়েমেন, ইরান, গ্রিস, আফগানিস্তান, কাজাকস্তান, ফ্রান্স, লেবানন, তুরস্ক, সিরিয়া, কাতার, মঙ্গোলিয়া, স্পেন, আর্জেন্টিনা, বেলজিয়াম, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রাশিয়া, চেক রিপাবলিক, যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। উৎসবে বাংলাদেশের দশটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসহ ২০টির বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। উৎসবে ৮টি বিভাগে চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে। বিভাগগুলো হলো- এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেক্ট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচ্যুয়াল ফিল্মস, শর্ট এ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকারস সেকশন। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেশের নির্মাতাদের নির্মিত বাছাইকৃত ১০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এগুলোর মধ্যে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা আবু সাইয়ীদের ‘একজন কবির মৃত্যু’ ও আকা রেজা গালিবের ‘কালের পুতুল’। বাকি চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে এ বছর মুক্তিপ্রাপ্ত হাসিবুর রেজা কল্লোলের ‘সত্তা’, নাদের চৌধুরীর ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’, আকরাম খানের ‘খাঁচা, ফাখরুল আরিফিন খানের ‘ভুবন মাঝি’, তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’, শামীম আখতারের ‘রিনা ব্রাউন’, সাজেদুল আউয়ালের ‘ছিটকিনি’ ও লতা আহমেদের ‘সোহাগীর গয়না’। এই চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে থাকছে প্রতিযোগিতা। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশন (ফিপ্রেসি) এই বিভাগে পুরস্কার দেবে। ফিপ্রেসির ৩ সদস্যের জুরি বোর্ড নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালককে পুরস্কার প্রদান করবে। এছাড়া এবারের উৎসবে অংশ নেয়া দেশ-বিদেশের অতিথিদের মধ্যে আলো ছড়াবেন ভারতের খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী অর্পণা সেন। এই শিল্পীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে একটি বিশেষ অধিবেশন। ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি উৎসবের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘চতুর্থ আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ অঁলিয়ঁস ফ্রঁসেস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিকস্ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে এবং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশনের সহযোগিতায় ‘প্রথম এশিয়ান ফিল্ম ক্রিটিকস্ এ্যাসেম্বেলি’ অনুষ্ঠিত হবে। এতে এশিয়ার প্রায় ২০টি দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র সমালোচকদের অংশ নেবেন। এছাড়াও ৫ থেকে ২০ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিকস্ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের যৌথ আয়োজনে ‘অষ্টম ঢাকা আন্তর্জাতিক সিনে ওয়ার্কশপ’ অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তরুণ প্রজন্মকে চলচ্চিত্র ও সুস্থধারার বিনোদনমুখী করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে উৎসব কর্র্তৃপক্ষ। জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তন ও পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে প্রতিদিন সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনীতে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে চলচ্চিত্রগুলো দেখতে পরবে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। পাবলিক লাইব্রেরির সকালের প্রদর্শনীগুলোতে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষায়িত শিশুদের বিনামূল্যে চলচ্চিত্র দেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
×