ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৌলভীবাজারের সামছুল হোসেনসহ ৫ আসামিররায় শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

মৌলভীবাজারের সামছুল হোসেনসহ ৫ আসামিররায় শীঘ্রই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৌলভীবাজারের সামছুল হোসেন তরফদারসহ পাঁচ আসামির রায় শীঘ্রই ঘোষণা হতে পারে বলে আশা করছেন প্রসিকিউশন পক্ষ। এটি হবে ট্রাইব্যুনালের ৩০তম রায়। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন, অপহরণসহ ৫টি অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ২০ নবেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। অর্থাৎ যে কোন দিন রায় ঘোষণা করা হবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেন। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালে আরও তিনটি মামলা প্রায় শেষের পর্যায়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা জনকণ্ঠকে বলেন, আমি আশা করছি রায় শীঘ্রই ঘোষণা করা হতে পারে। এটা ট্রাইব্যুনালের নিজস্ব ব্যাপার, তবুও আশা করছি রায় শীঘ্রই ঘোষণা হতে পারে। এর আগে ২২ নবেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধার সাবেক সাংসদ জামায়াত নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া (৬৫) ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার অপর পাঁচ আসামি হলেন মোঃ রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬৩), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৬০), মোঃ নাজমুল হুদা (৬২) মোঃ আব্দুর রহিম মিঞা ও মোঃ আব্দুল লতিফ (৬৩)। মোঃ আব্দুল লতিফ ছাড়া সবাই পলাতক। মৌলবীবাজারের পাঁচ রাজাকারের মধ্যে ইউনুছ আহমদ, ওজায়ের আহমদ চৌধুরী গ্রেফতার হয়েছেন। অন্য তিন আসামি সামছুল হোসেন তরফদার ওরফে আশরাফ, মোঃ নেছার আলী এবং মোবারক মিয়া পলাতক আছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ এবং আটকে রেখে নির্যাতনের পাঁচ অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ১১ জনকে অপহরণ আটক ও নির্যাতন এবং ২২টি বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ। আসামি পাঁচজন হলেন- শামসুল হোসেন তরফদার, মোবারক মিয়া, নেসার আলী, ইউনুস আহমেদ এবং ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী। তাদের মধ্যে ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের আদেশে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি তিনজন পলাতক রয়েছেন। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তদন্ত সংস্থা মোট ১ বছর ৩ মাস ৯ দিন তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে সেদিন বিকেলে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার গয়াসপুর গ্রাম থেকে ওজায়ের (৬০) এবং শহরের চৌমোহনা থেকে ইউনুছ আহমদকে (৭০) গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সামছুল হোসেন তরফদার একাত্তরে আলবদর বাহিনীর এবং নেছার আলী রাজাকার বাহিনীর স্থানীয় কমান্ডার ছিলেন। বাকি তিনজন রাজাকার বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হন। এ মামলায় যুক্তিতর্কে ছিলেন, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন।
×