ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি ঠিক সময়ে আন্দোলনে যাবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

বিএনপি ঠিক সময়ে আন্দোলনে যাবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকারের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এমন একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যে সরকার নির্বাচন প্রভাবিত করবে না, জনগণ যাকে খুশি ভোট দিতে পারবে। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি সময়মতো আন্দোলনে যাবে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে কল্যাণ পার্টির ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল জনগণকে বোকা বানিয়ে আগামী নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসতে চায়। তবে আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো হতে দেয়া হবে না। এ ধরনের নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে দেশের জনগণকে নিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঠিক সময়ে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। আর সেই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন করা হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে জন্য বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। এমনকি খুন-গুম করা হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দমন করার নতুন কৌশল নেয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণ তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেবে না। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে খাটো করে দেখবেন না। এই দেশের মানুষ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই আশা করব আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদেরও একহাত নিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বললেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলের বিরুদ্ধে নাকি ১২ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সংবাদ তারা কেন প্রকাশ করেননি। আমরা তার সেই বক্তব্যের পর তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখলাম দেশের বাইরে খালেদা জিয়া ও তার ছেলের দেশের বাইরে কোথাও কোন সম্পদ নেই। এটা এক ধরনের মিথ্যাচার। গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগ অনেক লড়াই করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারাই আবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তারা যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ক্ষমতায় গেলেই আওয়ামী লীগের চেহারা পাল্টে যায়, ফ্যাসিস্ট হয়ে যায় তারা। তিনি বলেন, কল্যাণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান নিখোঁজের ৯৭ দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি কেন? মির্জা ফখরুল বলেন, যে সংসদে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় সে সংসদ দেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। এ সংসদে যে আইন তৈরি করা হয়, সংবিধান যেভাবে পরিবর্তন করা হয় সেটা জনগণের জন্য আইন কিংবা সংবিধান নয়। আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির জন্য আন্দোলন একমাত্র পথ। অথচ প্রধানমন্ত্রী কথার জালে বিএনপিকে দিনে নয়াপল্টন এবং রাতে গুলশান অফিসে আটকে রেখেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবেন। প্রশ্নটা হচ্ছে আপনি কোন বিচারকের কাছে বিচার চাইবেন, তাদের কি সেই বিবেক আছে। তিনি বলেন, সবাই আজ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ তবে আমি ততটা ক্ষুব্ধ নই। কারণ ইতোমধ্যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় উনি উনার পিতাকে ছাড়িয়ে গেছেন। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাগপা সভাপতি অধ্যাপক রেহেনা প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা প্রফেসর ডাঃ ইকবাল হাসান, এ্যাডভোকেট আজাদ মাহমুদ, শাহজাদা আলম, মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, সাইদুর রহমান তামান্না, এ্যাডভোকেট এম এ আজিজ, মতিউর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
×