ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশের মানুষের মানবাধিকার এখন শূন্যের নিচে ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

দেশের মানুষের মানবাধিকার এখন শূন্যের নিচে ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমানে দেশের মানুষের মানবাধিকার শূন্যের নিচে অবস্থান করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শনিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। দেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় বয়ে চলছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন জোট সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিয়েছে। অথচ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারের পরিপূরক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকার হারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে খালেদা জিয়া বলেন যারা বাক, ব্যক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা ও নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হতে গিয়ে ক্ষমতাসীন স্বেচ্ছাচারী গোষ্ঠীর নৃশংস নিপীড়নে আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন, গোষ্ঠী, বর্ণ ও জাতিগত সংঘাতে অবলীলায় খুন ও গুপ্ত হত্যার শিকার হচ্ছে এবং অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বের সব জাতির সকল মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকরা জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার নির্দেশনাগুলো তাচ্ছিল্য করে নিজ দেশের জনগণের ওপর চালিয়ে যাচ্ছে বর্বরোচিত আক্রমণ। শুধু ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য জনমতকে অগ্রাহ্য করতে মানবাধিকারের তোয়াক্কা করে না। সুতরাং দুঃশাসনের অচলায়তন তৈরি করতে গিয়ে তারা প্রতিবাদী জনগণের ওপর নামিয়ে আনে পৈশাচিক উৎপীড়ন। খালেদা জিয়া বলেন, যারা সত্য উচ্চারণ করতে চান তারা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবীসহ নাগরিক সমাজের যেই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং কারাবাস, শারীরিকভাবে নির্যাতনসহ হত্যা ও গুমের শিকার হতে হয়। দেশে এখন কারোই কোন নিরাপত্তা নেই। খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমানে দেশে জনগণের না আছে নাগরিক স্বাধীনতা, না আছে মৌলিক মানবিক অধিকার। সুতরাং এই নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এই মুহূর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কণ্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। খালেদা জিয়া বলেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদী নেতৃত্বকে ধ্বংস করতেই সরকার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করছে। আর তারই শিকার হলো স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল। অবিলম্বে তার বিরদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ॥ আজ রবিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক। রাত সাড়ে আটটায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তার গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করা, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা ও সহায়ক সরকারের রূপরেখাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
×