ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিজেপি পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় যাচ্ছে ॥ জনমত জরিপে পূর্বাভাস

গুজরাট নির্বাচন ॥ মোদির ভাবমূর্তিই ভরসা

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

গুজরাট নির্বাচন ॥ মোদির ভাবমূর্তিই ভরসা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে শনিবার প্রথমপর্বের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর। প্রথম দফায় ৮৯টি এবং দ্বিতীয় দফায় ৯৩টি মিলে মোট ১৮২টি আসনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব ভোট গণনা নির্বাচনী ফলাফল আগামী ১৮ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে।-এএফপি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে মোদির গৃহীত বেশ কিছু অর্থনৈতিক পদক্ষেপের দরুণ এই রাজ্যের অর্থনীতির বিকাশ ঘটে এবং তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রিত্ব লাভের পর মোদির বেশ কিছু বিতর্কিত অর্থনৈতিক সংস্কারের পর এই নির্বাচনে তার জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বলে অনেকের বিশ্বাস। গুজরাটে মোদির জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিগত ২২ বছর যাবত ক্ষমতাসীন আছে। মোদি তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুই করেন গুজরাট থেকে- তাই তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসী এবারও জনগণ তার দলকেই ভোট দেবে। মোদি তার সমর্থকদের প্রতি বিজেপি দলীয় প্রার্থীদের বিপুল ভোট জয়ী করার আহ্বান জানান। বিশেষ করে তিনি তার টুইটে তরুণ ভোটারদের প্রতি ব্যাপকাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। কিন্তু রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে এবারের নির্বাচনে তার সামনে এক কঠিন পরীক্ষা বলে প্রতীয়মান হতে পারে। কারণ হিসেবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ব্যাপক প্রচার ও নির্বাচনী জনসংযোগ; দ্বিতীয়ত মোদির গৃহীত বেশ কিছু অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা বলা যায়। মোদির গৃহীত এসব অর্থনৈতিক সংস্কারের মধ্যে রয়েছে নতুন জাতীয় কর নীতি এবং দুর্নীতি বন্ধে পাঁচ শ’ ও এক হাজার টাকার নোট বাতিল করার পদক্ষেপে অনেকে ভীষণ বিপাকে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে অসন্তোষ ধূমায়িত হয়। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়-অথচ এরাই ছিল মোদির প্রধান ভোটব্যাংক। তাই এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে একটি শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সকল বিশ্লেষকের ধারণা যে, এবারের নির্বাচনে মোদির দল বিপর্যয়ের মুখে পড়লে মোদি নিজেও ২০১৯ সালের অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল গান্ধীর সামনে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন। তবে ভারতে মোদির ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এখনও আকাশচুম্বী। জনপ্রিয়তা নির্ধারণে তিনটি প্রধান সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১২ সালের চেয়ে জনসমর্থন কিছুটা কমে গেলেও এখনও বিজেপি প্রার্থীরা বেশ জনপ্রিয়। সম্মিলিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মোট ১৮২টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১০৫ থেকে ১০৬টি আসন নিশ্চিত পেতে যাচ্ছে। যেখানে ৯২টি আসন পেলেই বিজেপি সরকার গঠন করতে পারে। সমীক্ষার এ তথ্য সঠিক হলে বিজেপি উপর্যুপরি পঞ্চমবারের মতো গুজরাটে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে কংগ্রেস ৭৩ থেকে ৭৪টি আসন পেতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের জনমত জরিপ বরাবরই খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য ছিল না - কারণ এর আগেও অনেক রাজ্য বা জাতীয় নির্বাচনে গৃহীত জনমত জরিপ ত্রুটিপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে।
×