ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

নির্বাচন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী

সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এই নির্বাচন হওয়ার কথা। সে আয়োজনের চলছে প্রস্তুতি। সরকার দেশের উন্নয়ন কর্মকা-কে জোরদারের সঙ্গে এগিয়ে নিচ্ছে। তাই আগাম নির্বাচন আয়োজনের কোন সম্ভাবনাই দেখা দিচ্ছে না। আর দেশে সে রকম পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি, যে কারণে নির্বাচন এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। জনগণও তেমনটা চায় না এ মুহূর্তে। তারা নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট সময়েই হোক নির্বাচন, তেমনটাই চায়। দেশজুড়ে যে উন্নয়ন ও অগ্রগতিমূলক কর্মকান্ড- চলছে, জনগণও তাতে সম্পৃক্ত। তাই তারাও চায় সে সব কাজ দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ এবং স্থিতিশীল পরিবেশে এগিয়ে যাক। কারণ এসব উন্নয়ন তো গণস্বার্থে এবং দেশের অগ্রগতির লক্ষ্যেই হচ্ছে। দেশকে সমৃদ্ধশালী করার জন্য উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নেয়ার কোন বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার সরকার দেশকে বিশ্ব দরবারে যে অবস্থানে নিয়ে গিয়েছে, তাতে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে। আগামী তিন বছরের মাথায় দেশ সেই স্তরে পৌঁছার কথা। বর্তমানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে তা সম্ভব হবে। এটা তো সত্য এবং বাস্তব যে, বিরোধীরাও স্বীকার করে আসছে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ নানা ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ আগামী বছরের শেষপ্রান্তে সমাপ্ত হচ্ছে। সরকারও যথাসময়ে নির্বাচনে আগ্রহী। নির্বাচন কমিশন সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতিও নিচ্ছে। অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনে সকল দলই অংশ নিয়ে থাকে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনে যোগদান সব দলেরই কর্তব্য। রাজনৈতিক দলগুলো গণরায় নেয়ার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়ে থাকে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী তারা নির্বাচনে যাবেই। কিন্তু যারা বিশ্বাস করে না, যারা সশস্ত্র পন্থায় ক্ষমতা দখলে বিশ্বাসী জনগণের রায় যারা মাথা পেতে নিতে চায় না, তারা বরং নির্বাচনকে ভ-ুল করতে অপতৎপরতা চালায়। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াত জোট ব্যাপক সন্ত্রাসী তৎপরতাও চালিয়েছে। দেশজুড়ে নাশকতা অব্যাহত রেখে বহু মানুষকে হত্যা এবং আহত করেছে। নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা পরাজয়ের গ্লানি থেকে রেহাই পেতে। কিন্তু নির্বাচন হয়েছে যথারীতি এবং সরকারও গঠিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর একান্ত নিজস্ব। কিন্তু তাই বলে তারা নির্বাচন বানচালের মতো গণবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা ‘ভোটের আগে ভাতের’ দাবি করলেও নির্বাচন বানচাল করার পথে যায়নি। জনগণের অধিকারের বিরোধিতা করে রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকা সহজসাধ্য নয়। তাই বিএনপি-জামায়াত জোট দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখোমুখি আজও। নানা টালবাহানা ও অজুহাত তারা খুঁজছে। অপ্রাসঙ্গিক নানা বিষয়কে সামনে নিয়ে আসছে। সংবিধানবিরোধী দাবি-দাওয়াও তুলছে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। তারা ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করেছে স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে। সুতরাং সরকারী দলের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আর থাকে না। যে যার অবস্থান থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে, সেটাই বাস্তবতা। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা আলোচনার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিজ উদ্যোগে ফোনে আমন্ত্রণ জানিয়ে জবাবে পেয়েছিলেন দুর্ব্যবহার ও অসৌজন্য আচরণ। কম্বোডিয়াতে তিন দিনের সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেনও, গতবার বিএনপি যে ভুল করেছে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এবার সে ভুল করবে না। আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনাকেও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। দেশবাসীকে তিনি পরামর্শ দিয়েছেনও যে, আর যাতে যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
×