বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপের পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে আরও উত্তর-উত্তর- পশ্চিমে অগ্রসর হচ্ছে বলে আবহওয়া অফিস জানিয়েছে। তারা জানায় এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, দেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দর সমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে তারা। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রে নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এ অবস্থায় অফিসের পক্ষ থেকে এক নম্বর দূরবর্তী সঙ্কেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে বলে জানান তারা। আবহাওয়ার অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিঃ মিঃ এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিঃ মিঃ যা দম্কা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শুক্রবার চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। অফিসের কর্মকর্তা আব্দুর রহমান খান জানান গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দর সমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে। এদিকে গভীর নি¤œচাপের প্রভাবে দেশের নদীবন্দর সমূহকেও এক নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিঃ মিঃ বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানতঃ শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রী সেঃ হ্রাস পেতে পারে। এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকেই সারাদেশে আকাশ মেঘলা রয়েছে। তবে কোথাও বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া যায়নি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। তারা জানান নিম্নচাপ উপকূলের যত কাছে এগোবে, ততই কমবে শক্তি। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হলে দেশে শীতের প্রকোপ বাড়বে বলে তারা উল্লেখ করেন।