সংবাদদাতা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ, ৮ ডিসেম্বর ॥ মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বুঝার উপায় নেই এটি স্কুল। স্কুলের চারপাশ ঘিরে সবজির হাট। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা ও পাইকারদের আনাগোনা। হৈচৈ, ট্রাক আর বিভিন্ন যানবাহনের শব্দ। স্কুলের প্রবেশের পথটিও ফাঁকা নেই। সবখানেই সবজির স্তুপ। এরই মধ্যে শ্রেণীকক্ষে যেতে হচ্ছে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের। মাঠ দখল হয়ে যাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের এ্যাসেম্বলি, খেলাধুলা ও নির্মল পরিবেশে চলাফেরা করতে পারে না। খেলার মাঠ জুড়ে এমনকি বারান্দার দেয়াল পর্যন্ত দখলে সবজি বিক্রেতাদের। হাটের কোলাহল থেকে রক্ষা পেতে স্কুলের ভবনের বারান্দায় গ্রিল দিতে বাধ্য হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাহিরের সবজি ক্রেতা-বিক্রেতাদের হৈ চৈ চেচামেচির কারণে ক্লাসে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকরা জানান, স্কুল মাঠটি উপজেলা প্রশাসন বাজার হিসেবে ইজারা দেয়ায় সবজি বিক্রেতাদের বলার কিছুই নেই। এ নিয়ে তারা বেশি বাড়াবাড়ি করতেও ভয় পায়। নিয়মিত বাজারের কারণে লেখাপড়া মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে হাটের মধ্যেই কোন রকম পাঠদান করতে হয়। বছরের পর বছর এ অবস্থা চলে আসছে। অন্য সময়ের চেয়ে শীত মৌসুমে ক্রেতা বিক্রেতাদের দাপাদাপি বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, সবজি বিক্রেতারা স্কুলের পশ্চিমের অংশে ক্লাসরুমের পাশে মলমূত্র ত্যাগ করেন। ফলে দুর্গন্ধে তাদের স্বাস্থের ক্ষতি হচ্ছে। স্কুলের মাঠ ব্যবহার করতে না পেরে তারা বিভিন্ন খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয় না। চৌমুহনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দিন জানান, ১৯৫১ সালে খাস খতিয়ানের ২৬ শতক ভূমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। খাস খতিয়ানের ২৬ শতক ভূমি বর্তমান ভূমি জরিপে স্কুলের নামে রের্কডভুক্ত করা হয়েছে। স্কুলে বর্তমানে ১৫৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও দিনে দিনে তা কমছে। সচেতন কোন অভিভাবকরা তার সন্তানকে এই স্কুলে দিতে চায় না। বাজারটি অন্যত্র স্থানান্তর করে খেলার মাঠটি অবমুক্ত করে দিলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান আরও বাড়বে। চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আপন মিয়া বলেন, এই হাট তো আর আজকালের না। এটা অনেক দিনের। স্কুলটি স্থানান্তর না করা হলে এই সমস্যা সমাধান হবে না। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেছি। আশা করছি এ সমস্যা সমাধান হবে। মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, স্কুলটির ২৬ শতক ভূমি রয়েছে। স্কুলের মাঠে সবজির হাট বসার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। অতিদ্রুত স্কুলটি স্থানান্তর করে অন্যস্থানে প্রতিষ্ঠা করা খুবই জরুরী। স্কুলটি স্থানান্তরের বিষয়ে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: