ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এর বিপরীতে তারা সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিক্রিয়া জানান। রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চীনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম কংগ্রেস বিষয়ে তারা খালেদা জিয়াকে অবহিত করেন। এ আলোচনায় খালেদা জিয়া সন্তুষ্ট হয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে চীন দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবি করছে। এ বিষয়ে সমঝোতার জন্য আলোচনায় বসতে দলটির নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। বরং দলের সিনিয়র নেতারা বলছেন সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। এ প্রেক্ষিতে সরকারের কাছে নির্বাচনকালীন সরকারের ফর্মুলা দেয়ার কথাও বলেছে বিএনপি। তবে কেমন হতে পারে সেই সরকার তার কোন রূপরেখা এখনও পর্যন্ত দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। আদালতের আদেশে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতিই জোর দিচ্ছে দলটি। এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক কম্বোডিয়া সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে এলে এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নাকে খত দিয়ে আগামী নির্বাচনে আসবে। রাতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যর প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া একটি রাজনৈতিক দলের অধিকার। নির্বাচন কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। নির্বাচন করা সাংবিধানিক অধিকার। নির্বাচনে যোগ দেয়া না দেয়াও একটি রাজনৈতিক দলের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন শুধু বিএনপির কথা নয়, সারাদেশের জনগণের কথা। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছ থেকে এই প্রশ্নগুলোই বারবার এসেছে যে সব দলের অংশগ্রহণে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন উদ্যোগ নেবেন না বলে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তার দায়। নির্বাচনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা, সব দলকে নিয়ে আসার দায় তার, যিনি সরকারপ্রধান। কারণ নির্বাচন করবেন কী করবেন না, নির্বাচন হবে কী হবে না এটার দায়দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।’ তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে যেন এখানে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া সম্ভব হয়, জনগণের অধিকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাই বিএনপি চায়। বিএনপি সংঘাত চায় না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না। আমরা অস্থিতিশীলতা চাই না। এবারের নির্বাচনে যেন সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যতের ক্ষমতা পালাবদলের একটি শান্তিময় উপায় হয়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।’ তিনি বলেন, এখন এই ঔদ্ধত্য ও দাম্ভিকতা, এটা দিয়ে ভবিষ্যতে দেশ শাসন চলবে না। দেশকে এগিয়ে নেয়া যাবে না, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া যাবে না। বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, এটা জনগণের কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে।
×