ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাল্কা শীতে কটি

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

হাল্কা শীতে কটি

গ্রীষ্ম, বর্ষা না শীত। কোন ঋতুটি আপনার বেশি পছন্দ? এমন প্রশ্নে বেশিরভাগ মানুষই হয়ত এক বাক্যে বলবেন শীত। শীতে যেমন চলাফেরা করে আরাম তেমনি বাহারি ডিজাইনের পোশাক-আশাকেও নিজেকে রাখা যায় বেশ ছিমছাম। গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষায় আপনি পোশাকের শৌখিনতা তেমন করতে পারবেন না। যতটা না শীতের পোশাকে নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন। আর এই শীতের অন্যতম ফ্যাশনেবল পোশাক কটি। শীত যদি হয় আপনার পছন্দের ঋতু আর আপনি যদি পোশাক শৌখিন হয়ে থাকেন তাহলে কি পরবেন এই শীতে? বাংলা মাস অগ্রহায়ণকে বিদায় জানিয়ে এখন পৌষ মাস। পুরো শীতকাল। এখন রাজধানীসহ সারাদেশে শীত। এই শীতে নিজেকে কীভাবে মিলে ধরবেন? শহরে এখন এমন একটা আবহাওয়া, না শীত না গরম। সকালে রোদ উঠলেই গরম আর সন্ধ্যা নামতেই ঠা-া বাতাস বইতে শুরু করে। এমন আবহাওয়ায় পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হয়। ভারি পোশাক পরলে গরমে অস্বস্তি আবার হাল্কা পোশাকে সন্ধ্যায় আপনি বাইরে থাকতে পারবেন না। সন্ধ্যায় এখন বেশ ঠা-া পরতে শুরু করেছে। এমন আবহাওয়ায় বর্তমানে তরুণদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে কটি। যা এই আবহাওয়ায় খুব স্বাচ্ছন্দ্যেই পরতে পারবেন শার্ট কিংবা পাঞ্জাবির সঙ্গে। আবার একটু বেশি শীত পড়লে ব্লেজারের নিচে অনেকে কটি পরে থাকেন। বর্তমানে শার্ট কিংবা পাঞ্জাবির সঙ্গে কটি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তরুণদের কাছে। বিয়ে কিংবা যে কোন বড় পার্টিতেও অন্য পোশাকের সঙ্গে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই পরতে পারেন কটি। এ ছাড়াও ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুদের আড্ডাসহ যে কোন জায়গায় যাওয়ার জন্য পরতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে এমন কটি নির্বাচন করবেন যেন শার্ট কিংবা পাঞ্জাবির কালারের সঙ্গে মানিয়ে যায়। কটি নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে শরীরের রং এবং গঠনের দিকটাও। যদি আপনি ফর্সা হন তাহলে লাল খয়েরি বা কালো, নীলসহ যে কোন রঙের কটি মানিয়ে যাবে। শরীরের রং শ্যামলা বর্ণের হলে নীল বা হাল্কা কালারের কটি ভাল মানাবে। আর যদি আপনি কালো হন তাহলে লাইট বা নীল কালার পরতে পারেন। লাল বা কালো রঙের কটি না পরাই ভাল। তরুণদের পাশাপাশি কটির জনপ্রিয়তা পেয়েছে ছোট এবং মধ্যবয়স্কদের মাঝেও। ছোটরা সচরাচর না পরলেও শার্ট কিংবা সাফারির সঙ্গে প্রায়শই পরতে দেখা যায়। এ ছাড়া ব্লেজারের নিচেও অনেকে পরে। আবার এই হাল্কা শীতে স্কুল কিংবা বাইরে বের হওয়ার সময়ও শিশুরা শার্টের ওপর বাহারি কালারের কটি পরে। আর বয়স্কদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তিই পাঞ্জাবির ওপরে পরেন কটি। অনেকেই আবার কম্পিলিট ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচিং করে ভেতরে কোটি পরেন। বয়স্কদের ক্ষেত্রে কটির কালারটা হাল্কা হওয়াই ভাল। তবে পোশাকের সঙ্গে মানাবে এমন যে কোন কালারের কটিই পরতে পারেন। রাজধানীর বড় বড় বিপণি বিতানগুলোতে ইতোমধ্যে শীতের পোশাকের চাহিদা শুরু হয়ে গেছে। যার মধ্যে কটির বাজার বেশ চাঙ্গা। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে গিয়ে দেখা যায় প্রায় বেশিরভাগ দোকানেই স্থান করে নিয়েছে বাহারি ডিজাইনের কটি। বিভিন্ন কালারের সঙ্গে কটিতে নতুনত্ব পেয়েছে ডিজাইনেও। পেশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সানমুনের সেল্স ম্যানেজার মিন্টু মিয়া জানান, এবার শীতের শুরুতেই অন্যান্য পোশাকের পাশাপাশি কটির বেশ চাহিদা রয়েছে। অনেকেই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছে কটি। এ বছর কটিতে কি নতুনত্ব এসেছে জানতে চাইলে পোশাক প্রস্তুত এবং বিক্রয়কারী সিলভার রেইন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ফ্যাশন ডিজাইনার মোহাম্মদ আলী বলেন, বিগত দিনের কটির চেয়ে এ বছরে কটিতে বেশ কিছু নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে অন্যতম ওয়েস কটির বাটন এবং কাটিং। এ ছাড়াও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে মোদি কোট। ডিজাইন ভেদে ৪ এবং ৫ বাটনের কোটগুলোই বেশি চলছে। মোদি কোট মূলত পাঞ্জাবির সঙ্গে বেশি চলছে এবং ওয়েস কটিটা শার্ট বা পাঞ্জাবি দুটোর সঙ্গেই পরা যাবে। বাহারি রং এবং ডিজাইনের কটিগুলো ৮০০ থেকে শুরু করে ৩৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে দোকান এবং কাপড়ের মান ভেদে। রিস ম্যানের মিরপুর শাখা ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে প্রতিদিনই প্রায় বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার কটি। অন্যান্য শীতের পোশাক থেকে এখন কটির চাহিদা একটু বেশি কারণ গতবারের থেকে এবার কাপড়ের মানে বেশকিছু পরিবর্তন এসেছে। গতবার কটিগুলোর বেশিরভাগই ছিল জুট কটন কিন্তু এবার ব্যবহার করা হয়েছে ভেলভেট কাপড় এবং কট কাপড়। কটির কলারেও আনা হয়েছে নতুনত্ব। এবার চলছে কনটাস্ট কলার। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে গ্যাবাডিং কাপড়। প্রকার ভেদে দাম ধরা হয়েছে ১৭৯০ থেকে ২৯৯০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড ছাড়াও নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ দেশের বিভিন্ন ছোট-বড় বিপণি বিতানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে বাহারি ডিজাইনের নতুন নতুন কটি।
×