ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নুপূর শর্মা

এগিয়ে যাওয়া এক নারীর গল্প

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

এগিয়ে যাওয়া এক নারীর গল্প

শারমিন সেলিম তুলি বর্তমান সময়ের একজন প্রতিভাময়ী নারী। যিনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছেন। তার আন্তরিকতার ছোঁয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন সবসময়। নারী হিসেবে নয়। নিজেকে মূল্যায়ন করেন মানুষ হিসেবে। সমাজের উন্নতির জন্য অবশ্যই নারীর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন। প্রত্যেকটা নারীকে কিছু না কিছু করতে হবে। একজন নারী কি পারবে সেটা তাকেই ঠিক করতে হবে। যে কোন কিছুর সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখাটা জরুরী। ধৈর্য, সততা, নিষ্ঠা থাকলে যে কেউ এগিয়ে যেতে পারে। জীবনে সফল হতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। প্রত্যয়দীপ্ত এই নারী স্রোতধারা ফ্যাশন হাউস, বেয়ার বিজ বডি ওয়াক্স এ্যান্ড বিউটি সেলুন এবং বেয়ার বিজ ফিটনেস ক্লাব এর স্বত্বাধিকারী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। শারমিন সেলিম ‘মডার্ন লাইফ হাসপাতাল’ -পাড়া গ্রাম, নবাবগঞ্জ, ঢাকার চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তার পরিচয় বহুমাত্রিক। তিনি একজন নারী উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী, একজন সমাজসেবক, সংগঠক এবং লেখক, সফল নারী হিসেবে তার অনবদ্য অবদান তাকে ভিন্নতা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। শারমিন সেলিম ছোট বেলা থেকেই যথেষ্ট মেধাবী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রজীবনে কৃতিত্বের সঙ্গে মাস্টার্স পাস করেন। এরপর তিনি বিসিক থেকে টেক্সটাইল, ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্স করেন। ভারত থেকেও ফ্যাশন ডিজাইন ও টেক্সটাইলে কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত থেকে হেয়ার, স্কিন ও মেকআপ এর ওপর কোর্স করেন। বিসিক আয়োজিত উদ্যোক্তা মেলাগুলোতে সব সময় অংশ গ্রহণ করেন। এশিয়ার একটি দেশ ও ইউরোপে উদ্যোক্তা হিসেবে ভ্রমণ করেছেন। মহিলা চেম্বার অব কমার্স ও লায়নসের মেম্বার তিনি। সেই সূত্রে বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেন। বিবাহিত জীবনে শারমিন সেলিম এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের মা। স্বামী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সেলিম মিয়া উর্র্ধতন সরকারী কর্মকর্তা। স্বামী ও তার পরিবারের সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সব সময় পেয়েছেন এখনও পাচ্ছেন। শারমিন সেলিম এর জন্ম ঢাকার এক সম্ভান্ত পরিবারে। পৈত্রিক সূত্রে গাজীপুরের পূবাইলের অধিবাসী তিনি। বাবা আবুল কাশেম সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। মা কুরসী বেগম একজন সুগৃহিণী ও আদর্শ মা ছিলেন। নয় ভাই বোনের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ শারমিন সেলিম। শৈশব থেকেই পরিবারে তিনি পেয়েছেন চিন্তার অবাধ স্বাধীনতা, তার মধ্যে কাজ করার মানসিকতা সৃষ্টি করেছেন মা কুরসী বেগম। শারমিন সেলিম মনে করেন, পরিশ্রম, একাগ্রতা ও নিষ্ঠা তাকে আজকের অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। তিনি মনে করেন কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প কিছু হতে পারে না। সফল হতে হলে কোন কাজটি করতে চাই, সেটা বুঝাতে হবে। নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়া ভাল থাকতে হবে। যে কোন পেশায় সাফল্য পেতে প্রতিদ্বন্দ্বী কোন পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি দক্ষতা অর্জন করতে হবে একজন নারীকে। সুগৃহিণী শারমিন সেলিম এখনও ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটান পরিবার ও আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে। শারমিন সেলিম অবসর পেলেই ছুটে যান গ্রামে, মানুষের সুখ-দুঃখের খোঁজ খবর নেন। প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকেন। প্রত্যয়দীপ্ত এই নারী অনগ্রসর এ সমাজকে এগিয়ে নিতে চান বহুদূর। তিনি স্বপ্ন দেখেন সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও দুস্থ নারীদেরসহ প্রবীণদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করবেন। এ জন সাধ্য অনুসারে যা যা করা দরকার, তার সবটুকুই করে দেখাতে চান তিনি।
×