ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইতোমধ্যেই রেলসেতু নির্মাণের অর্থায়ন নিশ্চিত হয়েছে ॥ দাবি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের

পদ্মা সেতুতে নির্ধারিত সময়েই ট্রেনও চলবে

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

পদ্মা সেতুতে নির্ধারিত সময়েই ট্রেনও চলবে

মশিউর রহমান খান ॥ বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যলেঞ্জ পদ্মা সড়কসেতু নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তবে নানা জটিলতা আর সময়মতো বৈদেশিক অর্থ না পাওয়ায় আটকে আছে রেলসেতু নির্মাণের কাজ। সড়কসেতু নির্মাণের কাজ অর্ধেকের কাছাকাছি পৌঁছলেও এ বছরেও রেলসেতু নির্মাণের কাজ শুরু করাই হয়ত সম্ভব হবে না। রেলপথ মন্ত্রণালয় পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে সড়কসেতু চালুর দিনে রেলসেতুটি চালু করার ঘোষণা দিলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোনক্রমেই তা একসঙ্গে চালু করা সম্ভব হবে না। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি সেতু নির্মাণের বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত হয়েছে। ২০১৬ সালের ৩ মে ৩৪ হাজার ৯শ’ ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির(একনেক) সভায় পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রথমে চীনের এক্সিম ব্যাংক এ প্রকল্পে শতভাগ অর্থায়নে রাজি হয়। পরবর্তীতে ব্যাংকটি সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। মোট ৩৪ হাজার ৯শ’ ৮৮ কোটি টাকার মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ২৪ হাজার ৭শ’ ৪৯ কোটি টাকা ঋণ দিতে সম্মত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে চলতি বছরের ৮ আগস্ট চতুর্থ দফায় সংশোধিত ঋণ প্রস্তাব পাঠায়। এতে চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছে মোট ২শ’ ৬৬ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার ঋণ চাওয়া হয়। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর চীনের এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। রেলসূত্র জানায়, সরকারের মেগা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ যখন ৪৫ ভাগের বেশি সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি কাজ অতি দ্রুত শেষ করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে সে সময় পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ করা ছাড়া তেমন কোন অগ্রগতিই চোখে পড়ছে না। সূত্র জানায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঋণ অনুমোদন করেছে চীনা এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। কাজ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭১ কোটি টাকা, যার সম্পূর্ণ অর্থ বহন করেছে বাংলাদেশ সরকার। এ হিসাবে শুরুর পর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। প্রথম ধাপে রয়েছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের একাংশে ভূমি অধিগ্রহণ। এর মধ্যে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে অধিগ্রহণকৃত ভূমি বুঝে পেয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে চলবে ফরিদপুরের বাকি অংশ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ। এ চার জেলার ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রকল্পের যশোর জেলার অধিগ্রহণ পরিকল্পনা জমা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ভূমি অধিগ্রহণের আর কোন কাজ হয়নি। রেলসূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করেছে।
×