ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসেম্বরেই এ ঘোষণা আসতে পারে ॥ বিমান পরিবহনমন্ত্রী

যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে ॥ আকাশপথে পণ্য পরিবহন

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে ॥ আকাশপথে পণ্য পরিবহন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে সরাসরি পণ্য পরিবহনে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা এ মাসেই আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিরাপত্তা না থাকার অজুহাতে ২০১৬ সালের মার্চে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাজ্য। কার্গো নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আলোচনার জন্য গত ২৭ নবেম্বর যুক্তরাজ্য সফরে যান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা মূল্যায়ন ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টের (ডিএফটি) সঙ্গে আলেচনা করেন তিনি। একইসঙ্গে শাহজালালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে। এমন ঘোষণা ডিসেম্বর মাসেই আসতে পারে।’ এর আগে যুক্তরাজ্যের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ২২ নবেম্বর থেকে ২৭ নবেম্বর পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে। পাশাপাশি সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তারা। সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি দল শাহজালালের বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সন্তুষ্টি দেখিয়েছে। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির ধারাবাহিকতা রক্ষার বিষয়েও সতর্ক করেছেন তারা। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তা পরামর্শক নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল হাসনাত জিয়াউল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টের (ডিএফটি) সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা মূল্যায়ন ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন আমাদের মন্ত্রী। আশা করা যায়, এ মাসে হয়তো তারা একটি ঘোষণা দেবেন। আমরা তাদের অনুরোধে করেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে ঘোষণাটি দিতে।’ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের মার্চে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর যুক্তরাজ্যের পরামর্শে শাহজালালের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান রেড লাইনকে। প্রতিষ্ঠানটি সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের পরামর্শ দেয়। যুক্তরাজ্যের পরামর্শে রফতানি কার্গো জোনে বসানো হয়েছে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস)। এছাড়া এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এএপিবিএন) ডগ স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছে ৮টি কুকুর। এগুলো মাদক, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ ক্ষতিকর বস্তু শনাক্তে পারদর্শী। এ কথা জানিয়েছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এএপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (এসপি) তারিক আহমেদ। তিনি জানান, ৮টি কুকুরের মধ্যে ৪টি জার্মান শেফার্ড কুকুর ও ৪টি ল্যাবরেডর প্রজাতির। এদের ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে উপযোগী করে তুলতে পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এদিকে যুক্তরাজ্যের পরামর্শ অনুযায়ী বিমানবন্দরে আরও কিছু যন্ত্রপাতি বসানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এগুলো হলো- উড়োজাহাজের হোল্ডে রাখার মতো ভারি ব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিন, হ্যান্ডব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন, লিকুয়িড এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (এলইডিএস), আন্ডার ভেহিকল স্ক্যানিং সিস্টেম (ইউভিএসএস), ফ্যাপ ব্যারিয়ার গেট উইথ কার্ড রিডার, ব্যারিয়ার গেট উইথ আরএফআইডি কার্ড রিডার, এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন (ইটিডি)।
×