ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মহাস্থানগড়ের ইতিহাস অনুসন্ধানে খনন কাজ চলবে

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

মহাস্থানগড়ের ইতিহাস অনুসন্ধানে খনন কাজ চলবে

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার মহাস্থানগড়ের ইতিহাস অনুসন্ধানে কাক্সিক্ষত কোন ফল না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর খনন কাজ চালাবে। এর আগে বাংলাদেশ-ফ্রান্স যৌথ প্রত্নতত্ত্ব খনন কাজ শেষ হয়েছে নবেম্বরের শেষে। ফ্রান্স দল চলে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর দুর্গনগরীরর মধ্যভাগের লইয়েরকুড়ার (ফ্রান্স মঠ নামেও পরিচিত) খনন কাজের ডকুমেন্টেশন, বর্ণনা, তুলনামূলক স্টাডি, প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছে। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে মহাস্থানগড়ের উল্লেখযোগ্য একটি প্রত্ন পয়েন্ট বৈরাগীর ভিটায় খনন কাজ শুরু করবে। গত শতকের ১৯২৮-২৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ এ এন দীক্ষিত বৈরাগীর ভিটায় খনন করে দুটি প্রাচীন মন্দিরের স্থাপত্য কাঠামোর বর্ণনা দেন। প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর এই মন্দির উদ্ধারে পুনর্খনন কাজ চালাবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আঞ্চলিক পরিচালক (সমগ্র উত্তরাঞ্চল) নাহিদ সুলতানা জানান, অধিদফতরের নিজস্ব কিছু অনুসন্ধান আছে। সেই অনুসন্ধানে মহাস্থানগড়ের কালের বিবর্তন তুলে ধরা হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-ফ্রান্স ১৮তম যৌথ খনন কাজে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের স্থাপত্য নিদর্শন মিলেছে। বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রত্নতত্ত্ববিদ নাহিদ সুলতানা। ফ্রান্স পক্ষে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ কোলিন লেফনায়েক। খননে গুপ্ত যুগের শেষ দিক হতে পাল যুগের শুরুর ঘর গৃহস্থালি সামগ্রী ছাড়াও চারধারের ইটে ঘেরা নয় ফুট গভীরতার কূপের সন্ধান পাওয়া গেছে। যা প্রমাণ দেয় প্রাচীন আমলে পানির আঁধারে ইঁদারা ছিল। খ্রিস্ট পূর্ব দুশ’ বছর আগের ছাপাঙ্কিত ব্রঞ্জের মুদ্রা প্রমাণ দেয় বিনিময় প্রথায় মুদ্রার প্রচলন শুরু হয় বহু আগে। সুঙ্গ যুগের টালির যে ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা বর্তমানের টাইলসের মতো। এই টালি প্রমাণ দেয় প্রাচীন আমল এই জনপদ কতটা সমৃদ্ধ ছিল। এবারের খনন কাজ শুরু হয় ইস্টার্ন র‌্যামপার্ট (পূর্ব দিকের দুর্গের অংশ) থেকে পশ্চিমের দিকে। প্রাধান্য দেয়া হয় লইয়েরকুড়ি ভিটা। উত্তর পশ্চিম কোনে বৈরাগীর ভিটা, দক্ষিণে পরশুরাম প্রাসাদ ও জিয়তকূপ। পূর্বে শীলাদেবীর ঘাট। এই পয়েন্টসহ বিশাল একটি অংশ প্রত্নতত্ত্ব¡ অধিদফতরের খননের আওতায় রয়েছে। এর আগে খনন কাজে মিলেছে ৪র্থ ও ৫ম শতাব্দের মকরা, গুপ্ত ও সেন আমলের পাথর খ-, মন্দিরের প্রাচীর, বৌদ্ধ মন্দিরের কাঠামো, বেলে পাথর, সূর্য মূর্তির টালি, ব্রাহ্মী হরফের শিলালিপি, এ্যাংকর ইত্যাদি।
×