ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীতে হানাদার মুক্ত দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

নোয়াখালীতে হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নোয়াখালী, ৬ ডিসেম্বর ॥ সাত ডিসেম্বর ‘নোয়াখালী মুক্ত দিবস’। ১৯৭১’র ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল অবিভক্ত নোয়াখালী। এদিন প্রত্যুষে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা বিএলএফ প্রধান মাহমুদুর রহমান বেলায়েত, ডিপুটি কমান্ডার মমিন উল্যাহ্ এবং সি জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোশারেফ হোসেনের নেতৃত্বে জেলা শহর মাইজদী আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। একযোগে তারা তিনটি রাজাকার ক্যাম্প দখল করে। আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানীদের এ দেশীয় দালাল রাজাকাররা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুুখ যুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের মুখে অবস্থা বেগতিক দেখে নোয়াখালী পিটিআইর ট্রেনিং সেন্টার থেকে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায় খান সেনারা। চুয়াডাঙ্গা নিজস্ব সংবাদদাতা চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, ৭ ডিসেম্ব^র চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে চুয়াডাঙ্গা শত্রুমুক্ত হয়। ডিসেম্ব^রের প্রথম থেকেই চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত এলাকার সাব-সেক্টরের ও এ্যাকশন ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ তীব্রতর করে। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুক্ত হয় চুয়াডাঙ্গা। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্ব^র সকালের দিকে দামুড়হুদা এলাকা থেকে পিছু হটে পাকবাহিনী চুয়াডাঙ্গার দিকে আসে। মুক্তিযোদ্ধারা ভাবলেন যেভাবেই হোক পাকবাহিনীকে প্রতিহত করতে হবে। পরিকল্পনা অনুসারে চুয়াডাঙ্গা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের কাছে মাইন পোতা হয়। কিন্তু সামান্য ভুলের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। চুয়াডাঙ্গা থেকে মেহেরপুরের দূরত্ব ১৮ মাইল হলেও পাকবাহিনী পায়ে হেঁটে চুয়াডাঙ্গায় আসতে বাধ্য হয়। তাদের সন্দেহ ছিল মুক্তিবাহিনী বিভিন্ন স্থানে মাইন পুঁতে রাখতে পারে। ৬ ডিসেম্ব^র সন্ধ্যার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রবেশ করে পাকবাহিনী। ঢোকার সময় তারা মাথাভাঙ্গা নদীর উপরের ব্রিজের একাংশ বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভেঙ্গে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ করবে, এ খবর পেয়ে পাকবাহিনী ওই রাতেই চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে কুষ্টিয়ার দিকে রওনা দেয়। মাগুরা নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, ৭ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মাগুরা মুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে মাগুরা পাক হানাদার মুক্ত হয় । দিবসটি মাগুরাবাসীর কাছে একদিকে আনন্দের অন্যদিকে বেদনার । এই দিনে মাগুরায় উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা । মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের জয়বাংলা ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল । পাকিস্তানী সেনারা মাগুরা শহরের বিভিন্ন ভবনে তাদের ক্যাম্প করে। পাকিস্তানী বাহিনী , রাজাকার, আলবদর বাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে এই সমস্ত স্থানে আটক রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করত । ৬ ডিসেম্বর ৭১ যশোর পাক হানাদার মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানী সেনারা যশোর ত্যাগ করে মাগুরার দিকে অগ্রসর হয় । সাতক্ষীরা স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা থেকে জানান, ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি রাইফেল আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করে। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। শত্রুর বুলেটের আঘাত সহ্য করেও সাতক্ষীরার সন্তানরা অন্তত ৫০টি যুদ্ধের মোকাবেলা করেছিল ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে। শেরপুর নিজস্ব সংবাদদাতা শেরপুর থেকে জানান, আজ ৭ ডিসেম্বর। শেরপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় বাংলার সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করেন। এদিন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ও মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারযোগে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে অবতরণ করেন। ওই সময় শেরপুরের মুক্তিকামী ছাত্র জনতা জেনারেল অরোরাকে এক সংবর্ধনা দেয়। তিনি সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরকে হানাদারমুক্ত বলে ঘোষণা দেন। ওই সময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। গাইবান্ধা নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা হানাদার মুক্ত দিবস। এ দিনে কোম্পানি কমান্ডার মাহবুব এলাহী রঞ্জু (বীর প্রতীক) এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের কালাসোনার চর থেকে বালাসীঘাট হয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে। তাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে আগের রাতেই গাইবান্ধা শহরের স্টেডিয়ামে অবস্থিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা তল্পিতল্পা গুটিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। এর আগের দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বাহিনীর বিমান গাইবান্ধা রেল স্টেশনের উত্তর পাশে বোমা ফেলে। ফলে পাক বাহিনী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
×