ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুলখানিতে বক্তারা

সুন্দর ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে চেয়েছিলেন আনিসুল হক

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

সুন্দর ও বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে চেয়েছিলেন আনিসুল হক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একজন যোগ্য নেতার যত বৈশিষ্ট্য থাকতে হয় তার সবকিছুই ছিল আনিসুল হকের ভেতরে। সুন্দর ও স্বপ্নের ঢাকা গড়ার পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি। তাই তো তিনি মিডিয়া, ব্যবসা কিংবা সর্বশেষ রাজনীতিতেও ঢাকার মেয়র নির্বাচিত হয়ে কাজের মাধ্যমে সফলতা দেখিয়েছিলেন। তার প্রতিটি উন্নয়ন কর্মের কথা আজ সবার মুখে মুখে। সদ্যপ্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের কুলখানি অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে এই কুলখানির আয়োজন করা হয়। আনিসুল হক এই মসজিদেই মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মতো বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজনের মাধ্যমে সুন্দর আধুনিক বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। বুধবার সেই মসজিদেই তার কুলখানি হয়। অনুষ্ঠানে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বুধবার বাদ আছর গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে (আজাদ মসজিদ) মেয়রের কুলখানি অনুষ্ঠানে আলোচনা শেষে মিলাদ মাহফিল, কোরান খতম শেষে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। একই দিনে আনিসুল হক ও তার মা ফাতেমা জোহুরা বেগমের মৃত্যুবার্ষিকী হওয়ায় উভয়ের জন্যই বিশেষ দোয়া করা হয়। কুলখানিতে আনিসুল হকের স্মৃতিচারণ করেন বক্তব্য দেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, আনিসুল হকের ছোট ভাই সাইফুল হক, ছেলে নাভিদুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল ফারুক খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যগণসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। কুলখানিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদ, সকল কাউন্সিলর, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিকসহ সমাজের সকল শ্রেণী পেশার লোকজন, আত্মীয়-স্বজন, শুভানুধ্যায়ীসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মহিলাদের বসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ছেলে নাভিদুল হক, দুই মেয়ে ওয়ামিক উমায়রা হক ও তানিশা ফারিয়াম্যান হক, নাতনি, ছোট ভাই সাইফুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আনিসুল হকের ছোটভাই সাইফুল হক বলেন, আমার ভাই আনিসুল হক যে কি পরিমাণ জনপ্রিয় ছিলেন তা বলে শেষ করা যাবে না। তার মৃত্যুর পর একদিন আমরা কবরস্থানে গিয়ে দোয়া করছি এমন সময় চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে আসা এক যুবক আমাদের পরিচয় জানতে চায় পরে তিনি বলেন, আমি মেয়রকে দূর থেকে অনেক ভালবাসতাম। আমার মা ও আমার খুবই প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তাই আমার মায়ের নির্দেশে একটি চিঠি লিখেছিলাম তাকে। কিন্তু তার কাছে চিঠিটি পৌঁছাতে পারিনি। তাই আপনাকে চিঠিটি দিলাম। চিঠির ভাষা বর্ণনা করে তিনি বলেন, কৈশরে টিভিতে দেখা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনিসুল হককে ভালবেসেছি। যৌবনে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে তাকে ভালবেসেছি। তিনি ছিলেন সফল ব্যবসায়ী নেতা আর সর্বশেষ মেয়র হিসেবে তার সকল উন্নয়ন কর্মকা- দেখে ভালবেসেছি। তিনিই ছিলেন আমার দেখা জনগণের সঠিক ও যোগ্য নেতা। তাই তাকে ভোলা যাবে না কভু। সাইফুল হক সবার কাছে আনিসুল হকের রুহের জন্য বিশেষ দোয়া কামনা করেন। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, আনিসুল হক শুধু ব্যবসায়ীই ছিলেন না তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক ও যোগ্য মেয়র। সকল কাজের যোগ্যতাই তার ছিল। তিনি বলেন, অসুস্থ হওয়ার পর তাকে লন্ডনে দেখতে গিয়েছিলাম এ সময় তার ছেলে নাভিদুল আমাদের বলত চাচা এমন একদিন আসবে যেদিন আব্বুর জ্ঞান ফিরবে। তখন সকলের দোয়া আর সহযোগিতার কথা শুনে আব্বু খবই খুশি হবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার আর জ্ঞান ফেরেনি। তিনি ছিলেন আমাদের শক্তি। তাই তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। ওপারেও ভাল থাকুক তিনি। আনিসুল হকের ছেলে নাভিদুল হক বলেন, আজ থেকে ৬ দিন আগে আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি ভেবেছিলাম কিভাবে আমি একা একা থাকব? কিভাবে চলবে আমার জীবন ও এখন কিভাবে কি করব আমি বাবা ছাড়া? কিন্তু দেখছি সব প্রশ্নের আজ সমাধান হচ্ছে। সবাই আমার বাবার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসছেন। সবাই সহযোগিতা করছেন। তাই সবাই আজকেই শুধু নয় আজকের পরও আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন ও পাশে থাকবেন। তিনি যেন জান্নাতবাসী হন সেই দোয়া চাই। বাবার ইচ্ছা পূরণে আমি সবার সহযোগিতা চাই।
×