ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মদিনে কবি সিকদার আমিনুল হকের স্মৃতিতর্পণ

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

জন্মদিনে কবি সিকদার আমিনুল হকের স্মৃতিতর্পণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষাটের দশকের অন্যতম ব্যতিক্রমী কবি সিকদার আমিনুল হক। দেশাত্মবোধ, নিঃসঙ্গতা, মৃত্যুচেতনা, নির্জনতা আর বিষাদ তার কবিতার মূল প্রতিপাদ্য। ব্যক্তিজীবনের দৈনন্দিন ঘটনা প্রবাহ, প্রেম ও নান্দনিকতাও তার কবিতার আধেয়। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত এই কবির ৭৫তম জন্মবার্ষিকী ছিল বুধবার। তার জন্মদিনকে নান্দনিক করে তুলতে এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের দীপনপুর মিলনায়তনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক কবি জাহিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্মৃতিতর্পণ করেন কবি হালিম আজাদ, ফরুক মাহমুদ, আসলাম সানী, রহিমা আখতার কল্পনা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘থিসরাস বা যথাশব্দের কবি সিকদার আমিনুল হক’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাাপন করেন কবি সালেম সুলেরী। কবি সিকদার আমিনুল হকের ‘তোমাকে আমার চাই’ কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ফাহমিদা আজাদ। এরপর কবির রচিত ‘মেয়েদের রং’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন সিমা ইসলাম। স্মৃতিতর্পণে বক্তারা বলেন, বাংলা-কাব্যলক্ষ্মী এ পর্যন্ত যে কবিদের জন্ম দিয়েছেন তাদের মাঝে ভিন্ন এক স্বর সিকদার আমিনুল হক। রুমির মৃত্যুচেতনা সার্থকভাবে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন তিনি। তিনিই বিমূর্ত চিত্র ও নারী সৌন্দর্য বর্ণনায় আশ্রয় নিয়েছেন ফরাসি কবি র‌্যাঁবোর। তার মুক্তছন্দে লেখার প্রবণতা অনেকটা র্যাঁবোর মতোই। তিনি আস্তে আস্তে তার খোলশ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। স্বমহিমায় ভাস্বর হন নিজের কাব্যভাষায়। তার কল্পনার সীমা পরিসীমা ও কাব্যিক ভাবের উচ্চারণ কবিদের কবির মতো। তার ভাষা বুঝতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় সাধারণের। সিকদার আমিনুল হকের জন্ম ১৯৪২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের নদীয়ার কাঁচড়াপাড়ায়। স্নাতক পাস করে সম্পূর্ণভাবে সাহিত্য সাধনায় নিমগ্ন হন তিনি। ‘স্বাক্ষর’ লিটল ম্যাগাজিনের মধ্য দিয়ে সাহিত্য জগতে তাঁর পথচলার শুরু। লিখেছেন প্রচুর কবিতা। তাঁকে সমকাল ও স্বদেশ চেতনার কবি বলা চলে। কোন কোন কবিতায় পরিচয় মেলে রাজনীতি ও সমাজ সচেতনতার। সেই সঙ্গে ফুটে ওঠে রোমান্টিক ভাবনা ও মানবমুক্তির চিরায়ত সনদ। তার উল্লেখযোগ্য কবিতার বই ‘দূরের কার্নিশ’, ‘তিন পাপড়ির ফুল’, ‘পারাবত’, ‘এই প্রাচীরের শেষ কবিতা’, ‘আমি সেই ইলেকট্রা’, ‘সতত ডানার মানুষ’, ‘এক রাত্রি এক ঋতু’, ‘কাফকার জন্ম’ ইত্যাদি। তাঁর অধিকাংশ কবিতায়ই নতুনত্বের চমক রয়েছে। আধুনিক, শুদ্ধচারী, নান্দনিক কবি তিনি। ২০০৩ সালের ১৭ মে প্রয়াত হন কবি সিকদার আমিনুল হক। নগরজুড়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসবের ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ ॥ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ঢাকা মহানগরজুড়ে বিজয় উৎসবের ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে বুধবার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় বিজয় উৎসব উদ্যাপন কমিটি গঠিত হয়। এতে জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ-কে আহ্বায়ক, সহ-সভাপতি ড. মুহাম্মদ সামাদ ও ঝুনা চৌধুরীকে যুগ্ম-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফকে প্রধান সমন্বয়কারী এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহকাম উল্লাহকে যুগ্ম-সমন্বয়কারী করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। কর্মসূচীকে সুচারুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৩টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৩ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয় উৎসবের উদ্বোধন হবে। ১৪ ডিসেম্বর থেকে একযোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চ ধানম-ি, রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ, মিরপুর, দনিয়া, উত্তরা, সদরঘাট বাহাদুরশাহ পার্কে বিজয় উৎসবের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের হবে। শিল্পকলায় স্বপ্নদল প্রযোজনা রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’ মঞ্চস্থ ॥ মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্য গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর-রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। অর্জুন এবারে যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্ধে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকেন। অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? এভাবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ পৌরাণিক কাহিনীর আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন, পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়।
×