স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দিলে কখনও দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও যেসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী শপথ অনুষ্ঠানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় শপথ পাঠ করান সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল। এতে অংশগ্রহণ করে প্রায় আড়াই শ’ শিক্ষার্থী ও তরুণ স্বেচ্ছাসেবক দুর্নীতিকে কোন ধরনের প্রশ্রয় না দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে সুলতানা কামাল বলেন, যারা দুর্নীতি করে তাদের প্রশ্রয় দিলে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তাই যেসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি প্রতিরোধে করে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। এজন্য রাজনীতিবিদদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা উচিত। তিনি বলেন, এ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা নিজেরা দুর্নীতি করব না, মানব না। আজকের এ শপথ গ্রহণটা প্রতীকী। আমরা চাই এর মাধ্যমে আরও তরুণ এ দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে। কারণ তরুণ প্রজন্ম যদি দুর্নীতিকে না বলে, তাহলে খুব দ্রুত প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা নৈতিক দায়িত্ব উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতি করছে না। দুর্নীতি করছে এ দেশের মানুষ। এ অবস্থার উত্তরণ ঘটানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, আজকের তরুণ সমাজ ভবিষ্যত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে, কাজেই দেশের তরুণ সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই অঙ্গীকার করতে হবে যে তারা দুর্নীতি করবে না, দুর্নীতি মানবে না এবং দুর্নীতি সইবে না। অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, কাজ করে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, ৯ ডিসেম্বর এই প্রথম বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচী পালন করা হবে। ওইদিন সব জেলায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপনের সরকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সরকারের দুর্নীতি নির্মূলের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণে দুর্নীতিগ্রস্তদের বিচারের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সরকারের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ দুর্নীতির মাত্রা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালনসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণকে সক্রিয় হতে উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে সরকারকে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ যেমন বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ ভয়-ভীতির উর্ধে উঠে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।