ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

স্বপ্নের রং হোক সবুজ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭

স্বপ্নের রং হোক সবুজ

‘আমরা কোম্পানি’-এর গ্রুপ চীফ পিপল অফিসার (জিসিপিও) অজেয় রোহিতাশ্ব আল্ কাযী বিশ্ব এইচআরডি কংগ্রেস ও সিএইচআরও এশিয়ার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ‘টপ এইচআর প্রফেশনালদের মধ্যে ২০১৭ সালের ১ নম্বর রেটিং নিয়ে’ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রধান মানব সম্পদ নির্বাহী হিসেবে টানা নয়টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন অজেয় রোহিতাশ্ব আল্ কাযী। ‘আমরা’ কোম্পানি এবং কর্পোরেট জগতে তিনি অজেয় নামেই পরিচিত, দেশজুড়ে এবং বিদেশেও। অজেয় ডি-প্রজন্মকে বলেন, এই অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে ‘প্রথমত আমাদের বিশ্বাস। মানুষ যে কোন প্রতিষ্ঠানের সব চাইতে বড় সম্পদ। এই মানুষই গড়ে দেয় ভাল আর মহান প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফারাক। ‘আমরা’ কোম্পানি কখনই শুধু ভাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে গড়ার চেষ্টা করেনি বরং আমাদের লক্ষ্য বরাবরই মহান এক বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা কে গড়ে তোলা। আমাদের সেই নিরন্তর প্রয়াসেরই স্বীকৃতি এই পুরস্কারগুলো আমাদের এসেছে। দীর্ঘ সময় ধরে মানব সম্পদ নিয়ে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে এই স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে। যেমন ধরুন আমরা কোম্পানিই প্রথম বাংলাদেশী কোম্পানি হিসেবে অনলাইন ৩৬০ ডিগ্রী পারফমেন্স এ্যাপ্রাইয়াল চালু করে নিজস্ব প্যারামিটারে সেই ২০১৩ সালে সম্পূর্ণ অনলাইন লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা চালু করে ২০১৪ সালের শেষ থেকে আমরাই প্রথম বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান যারা সাইকো এ্যানালিসিস চালু করে ইন্টারভিউর সময়। এ ছাড়া আমরা কোম্পানির সুদীর্ঘ সময় ধরে কর্পোরেট সামাজিক-দায়বদ্ধতার নীতি অনুসরণ, যা এখন একটি বিশেষ উৎকর্ষে পৌঁছেছে আজ। বাংলাদেশের তরুণদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ অবদান রেখে চলেছে ‘আমরা কোম্পানি।’ তারুণ্য যারা দেশের জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ, তাদের-কর্পোরেট জগতে প্রবেশের উপযোগী করতে বিভিন্ন জেলা শহরে ৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এই কোম্পানিটি। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও ‘আমরা’র রয়েছে পৃষ্ঠপোষকতা। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি প্রভৃতিতে আইটি পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশের মর্যাদা সম্মুন্নত রাখতে ও তরুণদের সঠিক পথে পরিচালনায় ভূমিকা রাখছে এই কোম্পানি। এ ছাড়াও ‘আমরা কোম্পানি’-এর প্রধান মানব সম্পদ নির্বাহী অজেয় রোহিতাশ্ব আল্ কাযী স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশ্বের সেরা পেশাদার মানব সম্পদ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে। সিএইচ আরও এশিয়া ও টাইমস এসেন্টের দৃষ্টিতে বিশ্বের সেরা ১০০ জন প্রভাবশালী মানব সম্পদ পেশাদারের তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করে নিয়েছেন তিনি। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উৎকর্ষ পরিচালন দক্ষতা ও উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ বিবেচনা করে এই পুরস্কারটি দেয়া হয়। সিএইচআরও এশিয়া হচ্ছে একটি উচ্চ পর্যায়ের পেশাদারী প্রতিষ্ঠান যা বৈশ্বিক পর্যায়ে মানব সম্পদ প্রধানদের নিয়ে কাজ করে থাকে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মানব সম্পদ পরিচালনায় সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সৃষ্টি। পুরস্কার দেয়ার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচারক-প্যানেল গঠন করে থাকে এবং খুব সতর্কতার সঙ্গে প্রার্থী নির্বাচন করে। উল্লিখিত পুরস্কারপ্রাপ্তি কর্পোরেট জগতে ‘আমরা’র প্রশংসনীয় অবস্থান প্রমাণ করে। আজকের তরুণ প্রজন্ম কিভাবে ক্যারিয়ার নির্বাচন করবে। তাদের জন্য আপনার কি বলার আছে? জানতে চাইলে অজেয় বলেন,-চাকুরী যে করতে হবেই তাই কি? চাকরিটা তো আদো একটা নিয়মিত অর্থ উপার্জনের মাধ্যম মাত্র! আর চাকরির কাজটা যদি মনোমত বা মনোপূত না হয় তাহলে আপনিও নিগ্রহে থাকবেন কোম্পানিও বিব্রত থাকবে আপনাকে নিয়ে। আগে বের করুন কি করতে ভাল লাগে আপনার। আর যা করতে ভাল লাগে তেমন চাকরি কোনটি। দেখুন জীবন একটাই, একটা জীবন হা-হুতাশ কাটিয়ে আফসোসের মৃত্যুর চাইতে আপনার যেটা ভাল লাগে সেটা করুন। এমন কিছুর সঙ্গে জড়িত হোন যেটা ভাল লাগে, আপনি এঞ্জয় করেন। তবে যেটাই করবেন সেটাতেই সেরা হওয়ার চেষ্টা করেন। সততার সঙ্গে সেরা হওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি বিশ্বাস থাকে নিজের ওপর, যদি সত্যিকার অর্থে দেশের জন্য কিছু করতে চান তাহলে বলবো আস্থা রাখুন। চেতনার রং লাল আর স্বপ্নের রং হোক সবুজ। এ দেশ, এ দেশের সাধারণ মানুষের ওপর আস্থা রাখতে পারলে এ দেশে বিশ্বাস রাখতে পারলে আপনি নিজেও বড় হবেন আপনার সঙ্গে আরও বড় হবে বাংলাদেশ। এইচআর বা মানব সম্পদ নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? আমার একটা স্বপ্ন আছে এটা আমার একার স্বপ্ন নয় আমাদের প্রতিষ্ঠান ‘আমরা’র স্বপ্ন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ছেলেমেয়ে কর্ম-বাজারে আসে। আমাদের এখানে প্রতি বছর চাকরির সুযোগ হয় ৬ লাখ। বাকি ১ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার ছেলেমেয়ে কি করবে? তা আমরা জানি না। আমাদের ইচ্ছে তরুণদের কর্মশক্তিতে পরিণত করা। এ দেশের জন্য না হোক বিদেশের জন্য। বিদেশে বাংলাদেশের অদক্ষ শ্রমিক নয় বরং দক্ষ শ্রমিক রফতানি করবে। আমাদের ভবিষ্যত বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস হবেন এরাই। আমরা বিভিন্ন শহরে প্রোগ্রাম করে লোক নিয়েছি। অনার্স মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে হতাশ চাকরিতে তাদের কাছে সোনার হরিণ। তাদের পাঁচ দিনব্যাপী গ্রুমিং সেশন করেছি আমরা। এ পর্যন্ত তিনটি জেলা শহরে ৩৫০ জনকে গ্রুম করেছি। আমাদের ইচ্ছে আছে এটাকে সামনে নিয়ে যাবার। কিন্তু আমরা একা তো সব করতে পারব না অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এগিয়ে আসে তাহলেই সম্ভব বাংলাদেশের একদিন আকাশ ছোঁয়ার। আজকের বেশিরভাগ তরুণকে তখন আর বেকার ঘুরতে হবে না। তাদের কর্মসংস্থান হবে। আমি সেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যে বাংলাদেশে আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে ছুঁয়ে দেব আকাশের নিলীমা। উল্লেখ্য, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ‘আমরা’র একটি সহজাত প্রক্রিয়া।
×