ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ॥ প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৫ ডিসেম্বর ২০১৭

পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ॥ প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ৪ ডিসেম্বর ॥ মাদক বিক্রেতাদের ইয়াবাসহ আটকের পর মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার ছবি ধারণ করতে গিয়ে দৈনিক সংবাদ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। পরে উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) নির্যাতনকারী পুলিশের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করে। রবিবার রাত ১১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার অভিযুক্ত সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন বাসার ও দুই কনস্টেবলকে ক্লোজড করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। লাঞ্ছনার শিকার সাংবাদিক আল-আমিন মিন্টু জানান, রবিবার বিকেলে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন বাসার উপজেলার গর্ন্ধবপুর এলাকার ইয়াবা সম্রাট ফারুক হোসেন ও শরিফ মিয়াকে ৭০ ইয়াবাসহ আটক করে। এ সময় এএসআই হুমায়ুন বাসার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের ছেড়ে দেয়ার ছবি ধারণ করতে গেলে হুমায়ুন বাসার, কনস্টেবল সোহেল মিয়া ও তামজীদ তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। সংবাদ পেয়ে উপজেলার কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা রবিবার রাত ৯ টার দিকে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ওই এএসআইয়ের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করে। ঘটনার বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হলে রাত ১১ টার দিকে এএসআই হুমায়ুন বাসারসহ দুই কনস্টেবলকে ক্লোজড করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সদর থানায় যোগদানের পর থেকেই হুমায়ুন বাসার মাদক কারবারিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। উপজেলার ৩৫ মাদক কারবারির কাছ থেকে সে প্রতিমাসে এক লাখ টাকা মাসোহারা আদায় করে। মাসোহারা না পেলে ওই মাদক কারবারিকে অভিযানের নামে হয়রানি করে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিভিন্ন উপজেলার প্রেসক্লাবের সাংবাদিক, সুশীল সমাজের লোকজন দারোগার শাস্তি ও নিন্দা জানিয়েছেন। পাবনা নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা থেকে জানান, ঈশ^রদীর রূপপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ভূমিমন্ত্রীর ছেলের নেতৃত্বে ৪ সাংবাদিক আহতের মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাংবাদিকরা। পাবনা প্রেসক্লাবের সামনের আব্দুল হামিদ সড়কে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে জানান, গত ৫ দিনে এ মামলায় পুলিশ মূল আসামি ভূমিমন্ত্রীর ছেলে শিরহান শরীফ তমালকে গ্রেফতার না করে অন্য ছয় জনকে দেখানো হয়েছে। পুলিশ ভূমিমন্ত্রীর ছেলেকে বাঁচাতে এ গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন। পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি শিবজিৎ নাগের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পাবনা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আখিনূর ইসলাম রেমন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক উৎপল মির্জা, সাংবাদিক মির্জা আজাদ, সমকাল প্রতিনিধি এবিএম ফজলুর রহমান, দৈনিক সিনসা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতিন খান প্রমুখ। উল্লেখ্য, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী রূপপুর আণবিক বিদ্যুত প্রকল্প উদ্বোধনের প্রস্ততির সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট বদিউল আলম বুদুর গাড়ি ভাংচুরকালে ৪ সাংবাদিক ছবি তুলতে যায়। এ সময় ভূমিমন্ত্রীর ছেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ওই ৪ সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে। পঞ্চগড় স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় থেকে জানান, দেবীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহের সময় পঞ্চগড়ের ছয় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে জেলায় কর্মরত বিভন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা। মানববন্ধন শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি সম্বলিত এক স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রদান করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় পঞ্চগড় শের-ই-বাংলা পার্ক মোড়ে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। সেখানে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি এ রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল আলম, সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদ, সাইফুল আলম বাবু, আনিছ প্রধান, শাহজালাল, দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.স.ম নুরুজ্জামান, সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দীন চৌধুরী, দেবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সংগ্রাম প্রধান বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, গত ২৭ নবেম্বর দেবীগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহের সময় দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফিরুজুল ইসলামের উপস্থিতিতে কতিপয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। এ সময় দেবীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর আকসাদুল ইসলাম তাদের বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকে বেধরক মারপিট করে।
×