ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাসিরের বোলিং ঝলকে চিটাগংকে হারাল সিলেট

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭

নাসিরের বোলিং ঝলকে চিটাগংকে হারাল সিলেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একই স্থানে বল পড়ে কখনও বাউন্স হচ্ছে। আবার কখনও বল নিচু হয়ে যাচ্ছে। ব্যাটসম্যানরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আউট হয়ে যাচ্ছেন। উইকেট কি রূপ দেখাচ্ছে। এমন উইকেটের সুবিধা পেয়ে নাসির হোসেন জ্বলে উঠলেন। বল হাতে প্রথমবারের মতো টি২০তে ৫ উইকেট তুলে নিলেন। তাতে করে চিটাগং ভাইকিংসকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারালো সিলেট সিক্সার্স। এমন জয়ে আবার রেকর্ডও গড়লো সিলেট। ৫৩ বল হাতে রেখে ১০ উইকেটে জিতেছে সিলেট। এই জয়টি সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে ১০ উইকেটে জেতার দিক দিয়ে রেকর্ড হয়েছে। এর আগে দুটি দল বিপিএলে ১০ উইকেটে জিতেছিল। ২০১২ সালে প্রথম বিপিএলে ৪১ বল হাতে রেখে সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে বরিশাল বার্নার্স ১০ উইকেটে জিতেছিল। যেটি এতদিন রেকর্ড ছিল। এরপর ২০১৫ সালে তৃতীয় বিপিএলে ২৩ বল হাতে রেখে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে চিটাগং ভাইকিংস ১০ উইকেট জিতেছিল। এবার চিটাগংয়ের বিপক্ষে সিলেট রেকর্ড গড়ে জিতলো। ম্যাচটিতে টস জিতে সিলেট আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। যে উইকেট তাতে শুরুতে ব্যাটিং করা দল বিপাকে পড়লেই জয়ের সম্ভাবনা থাকছে। সেই সুযোগটি কাজেও লাগিয়েছে সিলেট। নাসির হোসেনের (৫/৩১) দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২ ওভারে ৬৭ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় চিটাগং। জবাব দিতে নেমে দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩৬*) ও আন্দ্রে ফ্লেচারের (৩২*) নৈপুণ্যে ১১.১ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৮ রান করে জিতে যায় সিলেট। অসাধারণ বোলিং নৈপুণ্য দেখান নাসির। ২০ রানে যে চিটাগংয়ের ৩ উইকেটের পতন ঘটে। নাসির ৩টি উইকেটই শিকার করেন। ইনিংসের প্রথম ওভারেই লুক রনকি ও সৌম্য সরকারকে আউট করে দেন। ৭ রানের মধ্যে ২ উইকেট পড়ার পর ২০ রানে যেতেই লুইচ রিচিকেও সাজঘরে ফেরান নাসির। এরপর ১ রান যোগ হতেই সিকান্দার রাজাকে শরীফুল্লাহ আউট করার পর আবারও ২টি উইকেট নিয়ে নেন নাসির। ৪৫ রানের মধ্যে তানভির হায়দার ও স্টিয়ান ভ্যান জিলকে আউট করে দেন নাসির। তাতে ৫ উইকেট শিকারি বোলার হয়ে যান নাসির। এর আগে একবার লিস্ট-এ ম্যাচে একবারই ৫ উইকেট পেয়েছিলেন নাসির। আর কোন খেলাতেই এমন কৃতিত্ব ছিল না। রবিবার চিটাগংয়ের বিপক্ষে সেই ঝলক আবারও দেখান। নাসিরের এমন বোলিংয়ে শুরুতে তছনছ হয়ে যায় চিটাগংয়ের ব্যাটিং লাইন। এরপর নাবিল সামাদের (৩/৭) বোলিং নৈপুণ্যে ৬৭ রানের বেশি করতেই পারেনি চিটাগং। এত কম রানের টার্গেট গড়ার পর একটাই ধারণা থাকে কত দ্রুত খেলা শেষ হবে। কত বড় জয় মিলবে। বিশাল বড় জয়ই মিললো। দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আন্দ্রে ফ্লেচার মিলেই ম্যাচ জিতিয়ে দেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) পঞ্চম আসরে সবার আগে বিদায় নিয়েছে চিটাগং। চট্টগ্রামপর্বেই তাদের বিদায় ঘণ্টা বেজেছে। বিদায় নেয়ার সম্ভাবনায় আছে সিলেটও। তবে তাদের হাতে শেষ চারে খেলার সুযোগও আছে। সাত ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পেয়ে সেই সম্ভাবনায় আছে সিলেটের। তবে এখানে ‘যদি’ আছে। সেই ‘যদি’ হচ্ছে রংপুরকে হাতে থাকা দুই ম্যাচেই হারতে হবে। আর বাকি থাকা একটি ম্যাচে সিলেটকে জিততে হবে। যদি রংপুর একটি ম্যাচেও জিতে তাহলে সিলেটের বিদায় ঘণ্টা বাজবে। সেই সঙ্গে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, খুলনা টাইটান্স, ঢাকা ডায়নামাইটসের পর রংপুর সেরা চারে খেলা নিশ্চিত করবে। সিলেট, রাজশাহী কিংসের বিদায় ঘণ্টা বাজবে। চিটাগং তো আগেই বিদায় নিয়েছে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে যদি খুলনার বিপক্ষে রংপুর জিতে যায় তাহলেই সিলেট বিদায় নেবে। তাতে করে চিটাগংয়ের বিপক্ষে জিতে, এমনকি পরের ম্যাচ জিতেও তখন রংপুরের চেয়ে বেশি পয়েন্ট হতে পারবে না সিলেটের। তাই রংপুর জিতে গেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রবিবার দিনের প্রথম ম্যাচটি জিতেও লীগপর্ব থেকেই বিদায় নেবে সিলেট। এবার লীগ শুরু হয় সিলেট থেকে। শুরুতেই টানা তিন ম্যাচ জিতে সিলেট। দুর্দান্ত দাপট দেখায়। কিন্তু এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রামে সেই দাপট আর থাকেনি। টানা সাত ম্যাচ জয়হীন থাকে সিলেট। মাঝখানে একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলে ১ পয়েন্ট পায় সিলেট। কিন্তু টানা সাত ম্যাচের একটিতেও জয়ের দেখা পায়নি। অবশেষে জয় মিলে। স্কোর ॥ চিটাগং ভাইকিংস ইনিংস ৬৭/১০; ১২ ওভার (ইরফান ১৫, রিচি ১২, ভ্যান জিল ১১; নাসির ৫/৩১, নাবিল ৩/৭, শরীফুল্লাহ ২/২৩)। সিলেট সিক্সার্স ইনিংস ৬৮/০; ১১.১ ওভার (রিজওয়ান ৩৬*, ফ্লেচার ৩২*)। ফল ॥ সিলেট সিক্সার্স ১০ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাসির হোসেন (সিলেট সিক্সার্স)।
×