ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনা সুযোগ দিলেও ব্যর্থ রিয়াল মাদ্রিদ, জয় এ্যাটলেটিকোর, লালকার্ডের লজ্জার রেকর্ড রামোসের, বার্সিলোনা ২-২ সেল্টা ভিগো, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ২-১ রিয়াল সোসিয়েদাদ, এ্যাথলেটিক বিলবাও ০-০ রিয়াল মাদ্রিদ

লা লিগায় দুই পরাশক্তির ফের হোঁচট

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭

লা লিগায় দুই পরাশক্তির ফের হোঁচট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একের পর এক ব্যর্থতার কারণে এবার লা লিগার শিরোপা হারানো অনেকটাই যেন নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের! প্রথম লেগ শেষ না হতেই পয়েন্টের যে ফারাক সৃষ্টি হয় তাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনাই পারে তাদের রেসে ফিরিয়ে আনতে। সর্বশেষ দুই ম্যাচ কাতালানরা ড্র করে সে সুযোগটাও করে দেয়। কিন্তু সুযোগটা তো কাজে লাগাতে হবে! সেটা পারছে না গ্যালক্টিকোরা, আর এ কারণে বার্সা টানা দুই ম্যাচ ড্র করার পরও ৮ পয়েন্টের সেই ব্যবধান রয়েই গেছে। শনিবার রাতে ন্যুক্যাম্পে সেল্টা ভিগোর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে বার্সিলোনা। এরপর খেলতে নামে রিয়াল। ম্যাচে জিততে পারলে ব্যবধানটা ৬ পয়েন্টে নেমে আসতো। কিন্তু সেটা পারেনি জিনেদিন জিদানের দল। এ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচে লালকার্ড দেখে লজ্জার রেকর্ড গড়েছেন রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস। দুই পরাশক্তি ড্র করলেও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। নিজেদের মাঠে এ্যাটলেটিকো ২-১ গোলে হরিয়েছে রিয়াল সোসিয়েদাদকে। বর্তমানে ১৪ ম্যাচ শেষে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ভ্যালেন্সিয়া। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে জয় পেলে বার্সার আরও কাছাকাছি চলে যাবে তারা। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানের দখল নিয়েছে মাদ্রিদের দুই ক্লাব এ্যাটলেটিকো ও রিয়াল। ১৪ ম্যাচ শেষে এ্যাটলেটিকোর সংগ্রহ ৩০ পয়েন্ট। আর চতুর্থ স্থানে থাকা রিয়ালের ঘরে জমা হয়েছে ২৮ পয়েন্ট। বার্সিলোনার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই ভাল খেলা উপহার দিচ্ছে সেল্টা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত তিন মৌসুমে একবার হলেও সেল্টার কাছে পরাজয়বরণ করেছে কাতালান জায়ান্টরা। লুইস এনরিকের সহকারী হিসেবে ক্যাম্প ন্যুতে তিন বছর কাটানোর অভিজ্ঞতা আছে সেল্টা বস জুয়ান কার্লোস উনজুয়ের। আর সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সফরকারীরা। ২০ মিনিটে তার সুফলও পায়। ম্যাক্সি গোমেজের জোরালো শট দুর্দান্তগতিতে আটকে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দেটার স্টেগান। কিন্তু ফিরতি বলে দলকে জয় উপহার দেন ইয়াগো আসপাস। যদিও সেল্টার এই লিড মাত্র দুই মিনিট স্থায়ী ছিল। পাউলিনহোর সহায়তায় রুবেন ব্ল্যাঙ্কোকে পরাস্ত করতে কোন ভুল করেননি লিওনেল মেসি। অক্টোবরের পর এই প্রথম তিনি লীগে গোল পেলেন। এরপর পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নেয় বার্সিলোনা। ৬২ মিনিটে জর্ডি আলবার পাস থেকে তিন মাস পরে ক্যাম্প ন্যুতে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন লুইস সুয়ারেজ। ম্যাচে বার্সিলোনা যখন জয়ের অপেক্ষায় ছিল ঠিক তখনই কাউন্টার এ্যাটাক থেকে সেল্টাকে সমতায় ফেরান গোমেজ। ম্যাচ শেষে বার্সিলোনা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে বলেন, একটি আক্রমণ থেকেই গোল পরিশোধ করে তারা। আমাদের থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সবমিলিয়ে আমি মোটেই সন্তুষ্ট নই। এদিকে বিলবাওয়ের মাঠে এই নিয়ে গত নয়টি ম্যাচের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো রিয়াল গোল আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে করিম বেনজামা রিয়ালের পক্ষে সবচেয়ে ভাল সুযোগটি হাতছাড়া করেন। তার শট পোস্টে না লাগলে তখনই হয়তো রিয়াল এগিয়ে যেতে পারতো। অন্যদিকে ইনাকি উইলিয়ামস ও আরটিজ আডুরিজের দুটি শট কেইলর নাভাস রক্ষা না করলে বিলবাও হয়তো এগিয়ে যেতে পারতো। যদিও এ্যাথলেটিকোর রক্ষণভাগ পুরোটা সময় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে কড়া পাহারা দিয়েছে। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, ম্যাচের আগে আমরা জানতাম আমাদের সামনে পয়েন্টের ব্যবধান কমানোর সুযোগ এসেছে। কিন্তু আমরা গোল পাইনি। যদিও আমি মোটেই বিচলিত নই, তবে খেলোয়াড়দের ওপর হতাশ। কারণ যেভাবে আমরা খেলেছি তা মেনে নেয়া যায় না। আমাদের এখন থেকেই ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। এই ম্যাচে লালকার্ডের লজ্জার রেকর্ড গড়েছেন রামোস। তিনি এখন স্পেনের শীর্ষ লীগে সর্বোচ্চ লালকার্ড দেখার মালিক। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্প্যানিশ তারকা। আডুরিজকে কনুই মেরে লালকার্ড দেখতে হয় তাকে। লা লিগায় রামোসই এখন সবচেয়ে বেশি ১৯ বার লালকার্ড দেখার লজ্জার রেকর্ডের মালিক। জাভি আগুয়েদো এবং পাবলো আলফারো ১৮টি করে লালকার্ড দেখেন। চলতি মৌসুমে লা লিগায় এটি রামোসের দ্বিতীয় লালকার্ড। এর আগে ডিপোর্টিভো লা করুনার বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম ম্যাচে লালকার্ড দেখেছিলেন এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ২৪টি লালকার্ড দেখেন রামোস। লা লিগায় ১৯টির পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ৩টি এবং কোপা ডেল রে’তে দুটি। ২০০৫-০৬ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পর মাত্র এক মৌসুমে (২০১৪-১৫) কোন লালকার্ড দেখেননি রামোস। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটির হয়ে নিজের প্রথম মৌসুমে সর্বোচ্চ চারটি লালকার্ড দেখেন তারকা এই ডিফেন্ডার।
×