ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামে একাধিক সংস্থা থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বিপাকে নারী

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭

গ্রামে একাধিক সংস্থা থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বিপাকে নারী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নওগাঁর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ ঋণ নিচ্ছেন একাধিক সংস্থা থেকে। এক সংস্থার ঋণের কিস্তি শোধ করছেন আরেক সংস্থার টাকায়। এমনকি কিস্তির টাকা দিতে না পারায় ঘটছে, আত্মহত্যার মতো ঘটনাও। অনুসন্ধান বলছে, কৌশলগত কারণে নারীদেরই ঋণ দেয় স্থানীয় এনজিওগুলো। অথচ ঋণের টাকা পরিশোধের ক্ষমতা তার আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংস্থাগুলোর মুনাফা অর্জনের প্রতিযোগিতাই এজন্য দায়ী। নওগাঁর পোরশা উপজেলার ললা পাড়ার সুফিয়া খাতুন। শুধু পরিবার চালাতে ঋণ নিয়েছেন ৫টি সংস্থা থেকে। এখন সেই ঋণ পরিশোধে কিস্তি চালাচ্ছেন খেয়ে না খেয়ে। পাশের বাড়ির সামা খাতুনের গল্পটা আরও করুণ। স্বামীহারা এই নারী ঋণ নিয়েছেন তিনটি এনজিও থেকে, যার কিস্তি দিচ্ছেন ভিক্ষা করে। নওগাঁর গ্রামগুলোতে এরকম ঘটনা এখন নিয়মিত। অনুসন্ধান বলছে, কৌশলগত কারণে মূলত নারীদেরই ঋণ দেয় স্থানীয় এনজিওগুলো। কিন্তু যাকে ঋণ দেয়া হচ্ছে, তা পরিশোধের ক্ষমতা তার আছে কি না, খতিয়ে দেখা হয় না তা। অথচ সময়মতো কিস্তি দিতে না পারলে অপমান ও নানাবিধ নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে। আবার কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে এই জেলায়। নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ দেয়ার আগে গ্রাহক ও জামানতকারীর সামর্থ্য, আগে ঋণ নিয়েছেন কি না এবং ঋণের অর্থ কী কাজে লাগানো হবে, তা বিস্তারিত জানার কথা ঋণদানকারী সংস্থার। কিন্তু তো মানা হয় না। বরং একাধিক সংস্থা থেকে ঋণ নিলেও, কোন সমস্যা নেই বলে জানালেন এনজিওগুলোর কর্তাব্যক্তিরা। যদিও ঋণ দেয়ার এমন প্রবণতা বন্ধে নীতিমালা তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্ষুদ্রঋণ যাতে সত্যিকারেই গ্রামীণ এলাকার গরিব মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে, সেজন্য এনজিওগুলোর সদিচ্ছার পাশাপাশি সরকারের নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
×