ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ ’৩০ সালের মধ্যে এইডস মুক্ত হবে ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭

দেশ ’৩০ সালের মধ্যে এইডস মুক্ত হবে ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিখিল মানখিন ॥ ভয়াবহ হয়ে উঠছে নীরব ঘাতক এইচআইভি সংক্রমণের হার। অবস্থা সহনীয় পর্যায়ে- এখনও কম, তবে আশঙ্কামুক্ত নয়। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে দ্রুতহারে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সমস্ত কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় সেবাগুলো নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণের এই হার ধরে রাখা সম্ভব নয়। গোপনে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এইডস রোগীর মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থা সামনে রেখে শুক্রবার পালিত হয়েছে বিশ্ব এইডস দিবস। তবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এইডস মুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, পোলিও ও ধনুষ্টঙ্কারমুক্ত হয়েছে দেশ। সংক্রামক রোগের হার অনেকগুণ কমে গেছে। বাঙালী সব সময় জয় করতে জানে। আমাদের প্রত্যয় আছে, আমরা জয় করব। দেশে এইডস রোগী ও এইচআইভি সংক্রমণের হারও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে অসচেতন হলে ও কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত না রাখলে দেশে দ্রুতহারে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সমস্ত কারণ ও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ বিদ্যমান রয়েছে। এইডস প্রতিরোধে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ অনেক কর্মসূচী চলমান রয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন ভুল ধারণা এইডস রোগীদের ঘিরে অপবাদ ও বৈষম্য তৈরি করে। এসব দূর করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে এইচআইভি পজিটিভ লোক, এইডস রোগী এবং এইডসজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ নিজের অজান্তে এইচআইভি জীবাণু বহন করছে এবং অন্যদের শরীরে ছড়াচ্ছে। দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ২২১ জন, মারা গেছে ৭৯৯। তবে বেসরকারী হিসেবে এইচআইভি পজিটিভ ও এইডস রোগীর সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এইচআইভি সংক্রমণের এই নিম্নমাত্রা ধরে রাখা এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহের রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি আছে সামাজিক কুসংস্কার। এইচআইভি শনাক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিশেষজ্ঞরা জানান, এক ব্যক্তি এইচআইভি আক্রান্ত কি না তা জানার একমাত্র উপায় হলো তার রক্ত পরীক্ষা করা। এইচআইভিতে আক্রান্ত হলেও একজন ব্যক্তি বহুদিন সুস্থ ও সবলভাবে বেঁচে থাকে এবং নিয়মিত কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারেন। এইচআইভি সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে রোগের কোন লক্ষণ দেখা যায় না। এভাবে পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ নিজের অজান্তে এইচআইভি জীবাণু বহন করছে এবং অন্যের শরীরে এইচআইভি ছড়াচ্ছে। এইচআইভি চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় তত ভাল। মাতৃমৃত্যু ॥ এসডিজি অর্জনে গ্রামে সফর করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাতৃমৃত্যু হারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে তৃণমূল ও প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন সফর করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। শনিবার সচিবালয়ে ‘স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক মান উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ক সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এই সিদ্ধান্ত জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিশু মৃত্যুহার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বাংলাদেশ জাতিসংঘের এমডিজি পুরস্কার পেয়েছে। প্রত্যাশিত মাতৃ মৃত্যুহার অর্জন না হলেও সাফল্যের অগ্রযাত্রা সন্তোষজনক ছিল। বিশ^ নেতৃবৃন্দও তাদের সূচকের উর্ধগতিতে প্রশংসা করেছে। আমাদের এই সাফল্যকে উর্ধে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে এমডিজি অর্জনের জন্যে আমাদেরকে আরও জোরদার ও কার্যকর কর্মসূচী হাতে নিতে হবে। এর অংশ হিসাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়।
×