ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নানা আয়োজনে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭

নানা আয়োজনে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রবিবার ছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এদিন সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। এরপর পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয় বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র সমাধি ও আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের প্রতিকৃতিতে। বিকেলে একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা ভাষা এবং বাংলা একাডেমি’ শীর্ষক একক বক্তৃতা। এতে একক বক্তৃতা করেন লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ। স্ব^াগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন। একক বক্তৃতায় গোলাম মুরশিদ বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হবার পর ষাট বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এর যা লক্ষ্য ছিল তার অনেকটাই এখন প্রসারিত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলা ভাষা এখন একটা স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রভাষা এবং সরকারী কাজকর্ম ও শিক্ষার বাহন হওয়ায়, বাংলা একাডেমির দায়িত্ব এবং কার্যক্রমের পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। জাতীয় জীবনে এ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব এখন অপরিসীম। তিনি আরও বলেন, বাংলা ভাষা বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে পূর্বে, পশ্চিমে, উত্তরে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই বিস্তীর্ণ এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের একাত্মতা আছে। তারা মাতৃভাষার ডাকে মিলতে পারেন। সেই মিলন যাতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য হয়, তার জন্যে বিভিন্ন অঞ্চলের বাংলা ভাষায় যেসব মিল আছে, সেগুলোকে স্পষ্ট করে দেখানো দরকার। পারস্পরিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে যাতে আরও সাদৃশ্য সৃষ্টি হয়, তারও চেষ্টা করা প্রয়োজন। আর সে কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বাংলা একাডেমি। উভয় বাংলার উপযোগী একটি অভিধান প্রকাশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি বিচিত্র ধরনের কতগুলো মূল্যবান অভিধান প্রণয়ন করলেও সেগুলো উভয় বাংলায় কতটা গৃহীত হয়েছে, তা আমার জানা নেই। এমন একটি অভিধান রচনা করা দরকার, যা উভয় বাংলায় সমান উপযোগী বলে বিবেচিত হয়। এজন্য উভয় বাংলায় যেসব নতুন শব্দ ব্যবহৃত হচ্ছে, সেসব যেমন থাকা দরকার, তেমনি থাকা দরকার নতুন অর্থে যেসব পুরনো শব্দ ব্যবহৃত হচ্ছে, সেসব। আর এই অভিধান রচনা করতে হলে উভয় বঙ্গের প-িতজনের দরকার হবে। আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমি বাষট্টি বছরে তার প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য ও অঙ্গীকার থেকে ভিন্ন এবং বৃহৎ পরিসরে অনেক কিছুই করেছে। একাডেমির প্রতি জনমানুষের প্রত্যাশা বিপুল কিন্তু সব জনপ্রত্যাশাই একাডেমির পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। স্বাগত বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পেছনে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকাশের যে স্বপ্নপ্রেরণা কাজ করেছে তার পুরোপুরি বাস্তবায়নে আমাদের আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। ‘রং তুলিতে শিশুর স্বপ্নের শহর’ ॥ কংক্রিটের শহর ঢাকায় প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা রং-তুলির আশ্রয়ে প্রতিবাদ জানাল একঝাঁক খুদে চিত্রশিল্পী। সবুজের আহ্বানে রঙিন হলো এই খুদে আঁকিয়েদের ক্যানভাস। কাঠপেন্সিলের স্কেচের ওপর তুলির আঁচড়ে উঠে আসা বিষয়ে মাধ্যমে প্রকাশিত হলোÑকেমন হওয়া উচিত নগর সবুজায়নের প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ টু আই প্রকল্প ও ইউএনডিপির উদ্যোগে নগরীতে শুরু হয়েছে ‘স্মার্ট সিটি ক্যাম্পেন’। তারই অংশ হিসেবে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবি) ট্রাস্ট রবিবার রাজধানীর রায়ের বাজারের বৈশাখী মাঠে ‘রং-তুলিতে শিশুর স্বপ্নের শহর’ শীর্ষক শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সেরা আঁকিয়েদের জন্য ছিল পুরস্কার। প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, ইউএনডিপির প্রতিনিধি মারুফ রহমান। সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাঈফুদ্দিন আহমেদ। কাল ৫ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে ‘স্মার্ট সিটি ক্যাম্পেন’ কার্যক্রম। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের গান ও আলোচনা ॥ চলছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। এ উপলক্ষে রবিবার গানের সুরে ও আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনালেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের চার গুণী শিল্পী। তারা হলেন তপন মাহমুদ, রফিকুল আলম, শাহীন সামাদ ও ডালিয়া নওশীন। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ। দর্শনীয় বিনিময়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ডিএল রায়ের লেখার কালজয়ী ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা’ গানটির সমবেত পরিবেশনার মাধ্যমে। এর পর শিল্পীরা টুকরো টুকরো কথায় একাত্তরে উত্তাল দিনগুলো দর্শক-শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরেন। সে সঙ্গে সুরের আশ্রয়ে গেয়ে শোনান মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ী গানগুলো। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিষদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। শেষ হলো সার্ক সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ রবিবার ছিল সার্ক সাংস্কৃতিক উৎসবের শেষ দিন। হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও সার্ক দেশসমূহের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশনায় সাজানো উৎসবটির আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। চার দিনের আয়োজনের সমাপনী আনুষ্ঠানিকতা ছিল একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে। সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও সার্ক কালচারাল সেন্টারের পরিচালক ওয়াসান্থে কোতওয়েল্লা।
×