ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মসনদ না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না বস্তিবাসীরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

জন্মসনদ না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না বস্তিবাসীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্থায়ী ঠিকানা ও জন্মসনদ না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না রাজধানীর বস্তি ও পথবাসী মানুষদের অনেকেই। এ কারণে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নির্বাচন কমিশন ও জনপ্রতিনিধিরা একে অপরের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়ায় দীর্ঘায়িত হচ্ছে সমস্যা। এ অবস্থায় পথবাসীদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ দিচ্ছেন উন্নয়নকর্মীরা। সব পথই মানুষকে বয়ে নিয়ে চলে যায় আপনঘরের আঙ্গিনায়, কিন্তু কিছু মানুষ পড়ে রয় পথেই। এখানেই তাদের ঘর, এখানেই সংসার। জরাজীর্ণ ছোট্ট খুপড়িঘরেই দারিদ্র্যের কঠিন কষাঘাতেই কাটে তাদের জীবন। তথ্যানুসারে সারাদেশের প্রায় ৫ লাখ পথবাসীর মধ্যে রাজধানীতে বাস করছে ৫০ হাজারের অধিক। দিন এনে দিন খাওয়া এসব মানুষের সিংহভাগই সচেতন নয় নাগরিক অধিকার নিয়ে। এদের অনেকেরই নেই জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র। তারা বলেন, ‘ভোটার কার্ড করতে গেলে কোথায় যেতে হয় কি করতে হয় কিছুই জানি না। আমি রাস্তাঘাটে থাকি তো তাই আজ পর্যন্ত চিন্তা করিনি এটা আমার লাগবে কিনা।’ রাত নামলেই পথবাসী জীবনের বিবর্ণ চিত্র ধরা পড়ে প্রকটভাবে। এমন বহু মানুষ আছেন, যাদের খুপড়িঘরটুকুও নেই। স্থায়ী ঠিকানাবিহীন এসব মানুষের জন্য জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র যোগাড় করা যেন দুরূহ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলেন, ‘রাস্তাঘাটে থাকি বলে আমরা ভোটার কার্ড করতে পারি না। কেউই আমাদের সাহায্য করে না এ বিষয়ে। বাবা-মার পরিচয়পত্র লাগে আমারতো এগুলো কিছু নেই। এই জন্য আমি ভোটার আইডি কার্ড করতে পারিনি।’ শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারছেন না, সামাজিক সুরক্ষা ভাতা ও গার্ডের চাকরিসহ বিভিন্ন ছোটখাটো কাজও পাচ্ছেন না তারা। রমনা থানার নির্বাচন কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন জানালেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যয়ন দিলে যে কেউ পেতে পারেন পরিচয়পত্র। উন্নয়নকর্মীরা বলছেন, পথবাসীদের এই সমস্যায় নীতিগত সমস্যায় আসতে হবে সরকারকে। নীতিমালায় তাদের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রাখার তাগিদ দিচ্ছেন উন্নয়ন গবেষকরা।
×