ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী হাইস্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

 সরকারী হাইস্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুরু হয়েছে রাজধানী ঢাকার ৩৫টিসহ দেশের অধিকাংশ সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে অনলাইনে কোন রকম বিড়ম্বনা ছাড়াই আগ্রহী প্রার্থীরা পছন্দের বিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করতে পারছেন। রাজধানীর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করা যাবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে রাজধানীর বাইরের বিদ্যালয়ে জেলা পর্যায়ে ডিসি ও উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ফরম বিতরণ ও ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঠিক করবে। যদিও সেখানেও ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির কাজ শেষ করতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক (সরকারী মাধ্যমিক) সাখায়েত বিশ্বাস জানিয়েছেন, রাজধানীর আবেদন প্রক্রিয়া ভালভাবেই চলছে। যে কেউ মাউশির ওয়েবসাইট, টেলিটকের সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য দেখে সহজেই আবেদন করতে পারছে। যে যে বিদ্যালয়ে আবেদন করতে চায় সেখানে যোগাযোগ করলেও সকল তথ্য জানতে পারছেন। অপর সহকারী পরিচালক দুর্গা রানী সিকদার বলেছেন, কোন বিড়ম্বনা নেই। ভালভাবেই চলছে কার্যক্রম। ১৪ তারিখ পর্যন্ত রাজধানীর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবেদন করা যাবে। জানা গেছে, রাজধানীতে ৩৫টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী ১৯, ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। প্রতিবারের মতো এবারো বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করে তিন দিনে এই ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। ফল প্রকাশ হবে ৩০ ডিসেম্বর। অনলাইনে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা দেবে টেলিটক। তবে রাজধানীর ৩৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টিতে প্রথম শ্রেণী চালু আছে। এগুলোতে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির লটারি হবে ২৬ ডিসেম্বর। আর নবম শ্রেণীতে ভর্তি হবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে। ঢাকার যে ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে, সেগুলো হলো-আজিমপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ধানম-ি গব. ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয়, ধানম-ি গব. বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়, তেজগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়, তেজগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারী হাইস্কুল, নারিন্দা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও গণভবন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম শ্রেণীতে আসন প্রায় দেড় হাজার। প্রথম শ্রেণীর ভর্তিতে শিক্ষার্থীর বয়স জানুয়ারিতে ছয় বছরের বেশি হতে হবে। ভর্তি নীতিমালা অনুসারে সারাদেশের স্কুলেই এবারও লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর শূন্য আসনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নবম শ্রেণীতে ভর্তি জেএসসি ও জেডিসির ফল অনুসারে। ঢাকা মহানগরীর স্কুল পার্শ্ববর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবারও। অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নীতিমালায় ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে সকল মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরের সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। উপজেলা সদরেও অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। তবে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণে অনলাইনে করা না গেলে কেবল উপজেলার ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি আবেদন করা যাবে। এবার ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ শতাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানদের ছেলেমেয়ের জন্য ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ২ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। ভর্তির আবেদন ফরামের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পূর্ণমান-৫০। এরমধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজী-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির পূর্ণমান-১০০। এর মধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজী-৩০, গণিত-৪০ এবং ভর্তি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর স্কুলেও শুরু হয়েছে ভর্তি কার্যক্রম। আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকছে। পর্যাপ্ত সময় থাকায় আবেদনের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া না করার পরামর্শ দিয়েছেন ভর্তি পরীক্ষা ও কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, যেহেতু সময় আছে, তাই হাতে সময় নিয়ে ধীরে-সুস্থে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করা শ্রেয়। আবেদন শুরু হওয়ার দিনই তাড়াহুড়া করে সবাই এক সঙ্গে ফরম পূরণ করতে গেলে অনলাইনে জটিলতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই শুরুর কয়েকদিন পর আবেদন করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। গতবারের মতো এবারও একটি আবেদনে একটি গ্রুপের একটি স্কুল পছন্দ দিতে পারবে শিক্ষার্থীরা। সেক্ষেত্রে তিনটি ক্লাস্টারে পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে আলাদাভাবে তিনবার আবেদন করতে হবে ছাত্রদের। একইভাবে তিনটি ক্লাস্টারে পরীক্ষায় বসতে তিনবার বার আবেদন করতে হবে ছাত্রীদের। প্রতিটি আবেদনে একটির বেশি স্কুল পছন্দ দেয়া যাবে না। আবার একই স্কুলে দুইবারও আবেদন করা যাবে না। ৯টি সরকারী স্কুলকে এবার ক, খ ও গ (এই তিনটি) ক্লাস্টারে (গ্রুপে) বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘ক’ ক্লাস্টারে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, বাকলিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় (বালক শাখা) ও ডাঃ খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ‘খ’ ক্লাস্টারে রয়েছে- নাসিরাবাদ সরকারী (বালক) উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও ও সিটি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ‘গ’ ক্লাস্টারে থাকা সরকারী মুসলিম হাই স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাকলিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়।
×