ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্ত উপাসনা ও যাজকদের অভিষেক অনুষ্ঠান ভ্যাটিকান দূতাবাসে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাত

রোহিঙ্গাদের দুঃখ-কষ্টে সমব্যথী পোপ ॥ আমরা সবাই শান্তি চাই

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের দুঃখ-কষ্টে সমব্যথী পোপ ॥ আমরা সবাই শান্তি চাই

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে সমবেদনা প্রকাশ করে খ্রীস্টান রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু প্রধান পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, তোমাদের কষ্ট ও দুরবস্থা আমরা বুঝি। আমরা তোমাদের দুঃখে সমব্যথী। আমরা তোমাদের শান্তি কামনা করি। শুক্রবার কাকরাইলের আর্চ বিশপ মাঠে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এসব কথা বলেন। পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত উপাসনা ও যাজকদের অভিষেক অনুষ্ঠানে পোপ মানুষের মঙ্গলে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। এদিকে শুক্রবার প্রথমবার রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। শুক্রবার রাজধানীর আর্চ বিশপ মাঠে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়। সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন ফ্রান্সিস পোপ। সংলাপ শেষে মঞ্চে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তিনটি পরিবারের ১৬ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু সাক্ষাত করেন। এ সময় পোপ ফ্রান্সিস রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন। রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, তোমাদের কষ্ট ও দুরবস্থা আমরা বুঝি। তোমাদের সঙ্গে আমরা সমব্যথী। আমাদের কাজ তোমাদের সাহায্য করা আর আমরা সেটাই করছি। আমরা তোমাদের অধিকার রক্ষায় অব্যাহতভাবে কাজ করে যাব। তিনি বলেন, তোমাদের কষ্ট দেখে আমাদের প্রশান্তি বিঘিœত হয়। আমরা সবাই শান্তি চাই। যেখানে মন্দ রয়েছে, সেখানেই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি আমরা। আর্চ বিশপ মাঠে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে পোপ ফ্রান্সিস মূল বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে এ্যামিরেটাস অধ্যাপক আনিসজ্জামান, মুসলিম ধর্মের পক্ষ থেকে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, হিন্দু ধর্মের পক্ষ থেকে স্বামী ধিষেনানন্দ, খ্রীস্টান ধর্মের পক্ষ থেকে আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও ও বৌদ্ধ ধর্মের পক্ষ থেকে শুদ্ধানন্দ। সংলাপে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, বাংলাদেশে এই সংলাপে বক্তব্য দেয়াটা আমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটা আমার কাছে চিরস্মরণীয়। বাংলাদেশ একটি শান্তি সম্প্রীতির দেশ। সকল ধর্মের অন্যতম উদ্দেশ্যেই হচ্ছে শান্তি ও সম্প্রীতি। সেটা বজায় রাখার জন্যই আমরা কাজ করে চলেছি। তিনি বলেন, আমাদের সকলের মনকে উন্মুক্ত করতে হবে। মন উন্মুক্ত করতে পারলেই সকলের সঙ্গে উদারভাবে সম্পর্ক তৈরি করা সম্ভব। মানুষে মানুষে গভীর শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য তিনি আহ্বান জানান। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। তারা বাংলাদেশে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসেছেন। এর পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। আমরা সকলের সঙ্গে শান্তি ও সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় রাখলেও মাঝে মধ্যেই সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত আসে। তবে আমরা বলতে চাই, যারা এসব আঘাত হানে তারাই প্রকৃত সংখ্যালঘু। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ফ্রান্সিস পোপ ঢাকায় এসেছেন। গত ৩১ বছরের মধ্যে কোন পোপের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। পোপকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হয়। ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস এমন এক সময়ে ঢাকায় এসেছেন, যে সময় বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলা করছে। এছাড়া পোপ ফ্রান্সিস প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকেই বাংলাদেশে আসছেন। সে কারণে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পোপের সফরে সময় রোহিঙ্গা সঙ্কটকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে এই শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। এভাবে সামনের পথে এগিয়ে যান ॥ পোপের আগমনে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের পদচারণায় শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে ওঠে মুখরিত। এদিন সকালে ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের পৌরহিত্যে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত উপাসনা ও যাজকদের অভিষেক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রায় আশি হাজার খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী। পোপকে সামনাসামনি দেখতে এবং তার পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত প্রার্থনা সভায় অংশ নিতে সারাদেশ থেকে রাজধানীতে ছুটে আসেন খ্রীস্ট ভক্তরা। গত ত্রিশ বছরে বাংলাদেশে এতসংখ্যক খ্রীস্টভক্তের কোন উদ্দেশ্যে সমবেত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ১৯৮৬ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পলের আগমনেও এতসংখ্যক খ্রীস্টভক্ত অংশ নেননি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রার্থনা সভা, খ্রীস্টভক্তদের সুশৃঙ্খল অংশগ্রহণ, নিরাপত্তাপ্রদানসহ সব কিছু ছিল প্রাণবন্ত ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ। শুক্রবার ভিন্ন রূপ ধারণ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। খ্রিস্টীয় রীতিতে সাজানো হয় মঞ্চ। মঞ্চের তিন দিকে খ্রীস্টভক্তের ঢল। তারা বসে আছেন সুশৃঙ্খলভাবে। বুড়ো যেমন দেখা গেল, তেমনি অভিভাবকের হাত ধরে এসেছে শিশুরা। প্রায় সবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরা যেন পোপের দিকে তাক করা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আড়াই ঘণ্টার এই মুক্ত উপাসনায় বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় প্রার্থনা করেন পোপ। আগত খ্রীস্টভক্তদের উদ্দেশে তিনি বক্তৃতা দেন। কাছাকাছি থাকা অনেকে হাত বাড়িয়ে রেখেছেন পোপের দিকে। এগোতে এগোতে দু’একজনের সঙ্গে হাত মেলালেন পোপ ফ্রান্সিস। তার ছোঁয়া পেয়ে উচ্ছ্বসিত সাধারণ মানুষ। সবার চোখে-মুখে তখন শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা। যারা দূরে ছিলেন, হাত বাড়িয়ে তাদের ভালবাসায় সাড়া দেন তিনি। পিকআপে পোপের দাঁড়িয়ে থাকায় সহায়ক হয়েছে সামনের দুই পাশে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিতরা হেঁটেই এগোচ্ছেন। পিকআপের ওপরে পোপের ঠিক পেছনেও একজন বাউন্সার। রোদের তাপ এড়াতে বাহনটি কাঁচ দিয়ে ঘেরা হয়েছে। পোপের ধরে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য আছে সহায়ক হাতল। পোপের আগমন উপলক্ষে সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়। অনুষ্ঠান সাড়ে ৯টায় শুরু হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা খ্রীস্টভক্তরা উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন ভোর ছয়টা থেকে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরাও প্রার্থনাসভায় যোগ দিতে আসেন। গলায় কার্ড ঝুলিয়ে প্রার্থনাসভায় যোগ দিতে আসা নানা বয়সী মানুষের চোখেমুখে ভক্তির সঙ্গে মিশে ছিল উচ্ছ্বাস। তাদের কাছে পোপ হলেন ঈশ্বরপুত্র যিশুর প্রতিনিধি। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে পোপ অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পরপরই শুরু হয় উপাসনা অনুষ্ঠান। ঈশ্বর বন্দনায় ‘এসো তার মন্দিরে করি স্তবগান একসঙ্গে দলে দলে হয়ে এক প্রাণ...,’ প্রার্থনা সঙ্গীতে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। উপাসনা সঙ্গীতের মধ্যেই সকাল ১০টায় মঞ্চে ওঠেন পোপ ফ্রান্সিস। বিভিন্ন খ্রিস্টীয় আচারে চলতে থাকে অনুষ্ঠান। ষোলোজন ‘ঈশ্বরসেবককে’ যাজক হিসেবে অভিষিক্ত করার আগে উপাসনায় আগতদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন পোপ। তার স্প্যানিশ ভাষার বক্তব্য বাংলায় তর্জমা করে শোনানো হয়। পোপ বলেন, প্রিয়জনেরা, আজকের এই শুভ দিনে যাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠানে আপনারা সবাই এসেছেন, আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমি জানি, আপনারা অনেকে অনেক দূর থেকে এসেছেন, অনেকে দুই দিনের যাত্রাপথ অতিক্রম করে এখানে এসেছেন, আপনাদের এ উদারতার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। এটা প্রকাশ করে মঙ্গলের জন্য আপনাদের সকলের অন্তরে অনেক ভালবাসা রয়েছে। এটা প্রকাশ করে যিশু খ্রীস্টের জন্য আপনাদের অনেক অনেক ভালবাসা রয়েছে। বিশ্বের ১৩০ কোটি ক্যাথলিক খ্রীস্টানের প্রধান ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশে যিশুর অনুসারীদের উদ্দেশে বলেন, এভাবে সামনের পথে এগিয়ে যান, পর্বতের ওপর যিশুর অষ্টকল্যাণ বাণীর আলোকে, সেই প্রেরণা নিয়ে। এই নব অভিষিক্ত যাজকদের জন্য প্রার্থনা করতে সকলকে আহ্বান জানান পোপ। পোপ ফ্রান্সিসের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটসহ বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, আর্চ বিশপ (চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আর্চ ডায়সিস) মোজেস এম কস্তা, বিশপ পনেন পৌল কুবি, বিশপ জেভার্স রোজারিও, বিশপ সেবাস্টিয়ান টুডু, বিশপ সুব্রত হাওলাদার, বিশপ রমেন বৈরাগী, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ॥ পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার বিকেলে তিনি বারিধারায় ভ্যাটিকান দূতাবাসে গিয়ে পোপের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। জাতির জনকের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও পুত্রবধূ পেপ্পি সিদ্দিক এ সময় বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন। ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রপ্রধান পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাতকালে শেখ হাসিনা তাকে স্যুভেনির হিসেবে একটি নৌকা উপহার দেন। এর আগে সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় আশি হাজার ভক্তের অংশগ্রহণে এক প্রার্থনাসভায় পৌরহিত্য করেন পোপ। বিকেলে তিনি কাকরাইলের রমনা ক্যাথেড্রালে যান এবং আর্চবিশপ হাউসে বিশপদের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই স্থানে তিনি একটি আন্তঃধর্মীয় সংলাপে অংশ নেন। তিন দিনের সফরে বৃহস্পতিবার বিকেলে মিয়ানমার থেকে ঢাকা পৌঁছান পোপ ফ্রান্সিস। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সেদিন বিকেলে তিনি বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। পরে বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সফরের শেষ দিন আজ শনিবার সকালে তেজগাঁওয়ে মাদার তেরেসা হাউস পরিদর্শনে যাবেন পোপ। এরপর তেজগাঁও হলি রোজারিও চার্চে খ্রীস্টান যাজক, ধর্মগুরু ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে চার্চের কবরস্থান পরিদর্শন করবেন। দুপুরের পর ঢাকায় নটর ডেম কলেজে তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করবেন। সফরের ইতি টেনে বিকেল ৫টায় শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়বেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু। তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান। প্রথমবার রোহিঙ্গা শব্দ উচ্চারণ করেছেন পোপ ॥ কক্সবাজার থেকে তিনটি পরিবারের ১৬ রোহিঙ্গা নাগরিকদের সঙ্গে শুক্রবার আলাপ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। এ সময় তিনি প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেন। বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর দরবার হলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন পোপ। স্প্যানিশ ভাষায় তার দেয়া বক্তব্যের ইংরেজী অনুলিপি অনুষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। তবে বক্তব্যে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি এড়িয়ে যান পোপ। বাংলাদেশে আসার আগে মিয়ানমার সফরেও রোহিঙ্গা নামটি উচ্চারণ না করায় তার সমালোচনা হচ্ছিল। এর মধ্যেই তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে স্প্যানিশ ভাষায় বলেন, ‘আজ সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের মাঝেও।’ ঢাকার রিক্সায় পোপ ॥ ঢাকা শহর রিক্সার জন্য বিখ্যাত। তাই সেই রিক্সায় চড়লেন পোপ। শুক্রবার বিকেলে কাকরাইলে আর্চবিশপ হাউসে তিনি রিক্সায় চড়ে যান। এ সময় পাশে থাকা ভক্তদের সঙ্গেও কথা বলেন পোপ ফ্রান্সিস। আয়োজকরা জানান, পোপ রিক্সায় চড়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে চান। সেকারণেই তিনি রিক্সায় চড়েছেন।
×